।। আতিকুর রহমান ।।
বিএনএ, ঝিনাইদহ: শিশু রোগীর কারণে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল ও শিশু হাসপাতালে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। জেলায় দিন দিন বাড়ছে শিশুদের নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, জ্বরসহ শ্বাসতন্ত্রের রোগের প্রকোপ। প্রতিদিন সদর হাসপাতালে গড়ে ৪০ থেকে ৫০ জন শিশু ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতালে শয্যা আর জনবল সংকটে বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। হাসপাতালের কক্ষগুলোর মেঝে ও বারান্দায় রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে শিশুদের। প্রতিদিন নতুন করে শিশু ভর্তি হওয়ায় দিন দিন জায়গার সমস্যা বেড়েই চলেছে। হাসপাতালে যত শিশু রোগী ভর্তি আছে তার বেশিরভাগই নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। ৪০ শয্যার বিপরিতে চারগুন বেশী রোগী ভর্তি থাকায় স্বল্প জনবলে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।
গত অক্টোবর মাস থেকে শিশু রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। বেশিরভাগ শিশু রোগীর ৭০ ভাগই নিউমোনিয়া, জ্বরসহ শ্বাসতন্ত্র রোগে আক্রান্ত। এমন সমস্যায় আক্রান্ত শুধু সদর হাসপাতালাই নয়, সরকারি শিশু হাসপাতালসহ স্থানীয় প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতেও বেড়েছে এ রোগীর সংখ্যা।
হাটগোপালপুর এলাকার মশিয়ার রহমান জানান, আমার সন্তানকে হাসপাতালে আনলে দেখি রোগী রাখার কোন বেড খালি নেই। তাই কোন উপায়ন্ত না পেয়ে অবশেষে হাসপাতালের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে।
সুফিয়া নামের এক নার্স জানান, হাসপাতালে কম সংখ্যক জনবল নিয়ে এত রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছি আমরা। তারপরও সাধ্যমত চেষ্টা করছি সকল রোগীর চিকিৎসা দিতে।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের কনসালট্যান্ট (শিশু ওয়ার্ড) ডা. মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, শিশুকে ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে বাঁচাতে অভিভাবকদের সচেতনতার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
মাগুরা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডা. অলোক সাহা জানান, শীত বাড়লে শিশুদের নানা ধরনের রোগ হতে পারে। সেই জন্য শিশুদেরকে সবসময় গরম কাপড় পরাতে হবে। রাতে পারলে রুম হিটার ব্যবহার করতে হবে বা শিশুকে কাপড় দিয়ে হাত-পা ও মাথা ভাল করে ঢেকে রাখতে হবে। তাহলে শিশুরা রোগ থেকে নিারাপদে থাকবে।
স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, ২৫০ শয্যার হাসপাতালে বর্তমানে শিশু ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি রয়েছে ১৪০ জন। গত এক মাসে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিউমোনিয়ার সাথে অন্যান্য সমস্যায় দু’টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মাত্র একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা।
বিএনএনিউজ/বিএম