বিএনএনিউজ : সুস্থ ও মেধাবী প্রজন্ম গঠনে আয়োডিনযুক্ত লবণ খুবই গুরুত্বপুর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
মন্ত্রী বলেন, ভোজ্য লবণে আয়োডিনযুক্তকরণ এবং মানুষ ও অন্যান্য প্রাণির খাদ্য তৈরিতে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের লবণ খাতের সার্বিক ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যে বিদ্যমান আয়োডিন অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ আইন-১৯৮৯ রহিত করে প্রয়োজনীয় সংশোধন এর মাধ্যমে ‘আয়োডিনযুক্ত লবণ আইন, ২০২১’ প্রণয়ন করা হয়েছে।
সোমবার(১৫ নভেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘আয়োডিনযুক্ত লবণ আইন, ২০২১ : আবহিতকরণ শীর্ষক জাতীয় কর্মশালা’য় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। এছাড়াও বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) এর চেয়ারম্যান মোঃ মোশ্তাক হাসান এনডিসি, ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট। শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (আইন) ড. এ.এফ.এম আমীর হোসেনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (নীতি, আইন ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা) শেখ ফয়েজুল আমীন। এতে অন্যদের মধ্যে ইউনিসেফ বাংলাদেশসহ অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ, লবণ ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং শিল্প মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন দপ্তর ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
শিল্পমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আয়োডিনযুক্ত লবণ আইন, ২০২১’ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ ও যুগোপযোগী আইন। এই আইনের আওতায় একটি জাতীয় লবণ কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটি লবণের চাষ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, আয়োডিনযুক্তকরণ, মজুত ও বিক্রয়সহ ইত্যাদি বিষয়ে এবং লবণ কারখানার জন্য আয়োডিন সরবরাহ এবং ব্যবস্থাপনা নীতির বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়ন করবে। ১৪ সদস্যের এই জাতীয় লবণ কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে আয়োডিনযুক্ত লবণ পর্যবেক্ষণ ও বাস্তবায়ন সেল কার্যক্রমগুলো নজরদারি করবে।
শিল্পমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধু ব্যবসায়িক মুনাফার কথা বিবেচনা না করে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেও এ কাজে ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসতে হবে। পরবর্তী প্রজন্মকে সুস্থ ও মেধাবী করে তুলতে অবশ্যই এই আইনের নির্দেশনা অনুযায়ী ভোজ্য লবণে আয়োডিনযুক্ত করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, জাতির সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে, দৈনন্দিন খাবারে আয়োডিনযুক্ত লবণের কোনো বিকল্প নেই। তিনি আয়োডিনযুক্ত লবণের ঘাটতি পূরণে আয়োডিনযুক্ত লবণ আইন ২০২১ প্রতিপালনে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি লবণ শিল্প মালিকদের সারাদেশে আয়োডিনযুক্ত লবণ সরবরাহের আহ্বান জানান। তিনি লবণ আমদানির পরিবর্তে আমাদের দেশে কিভাবে আরো বেশি লবণ উৎপাদন করা যায় এবং রপ্তানির উদ্যোগ নেয়া যায় তার ব্যবস্থা নিতে বলেন।
সভাপতির বক্তব্যে শিল্পসচিব বলেন, এই আইনে মানুষের জন্য ভোজ্য লবণ এবং প্রাণিখাদ্য প্রস্তুতে ব্যবহৃত লবণে আয়োডিন না থাকলে সর্বোচ্চ তিন বছরের জেল এবং ১৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। তাছাড়াও বাংলাদেশে কেউ লবণ আমদানি, উৎপাদন, গুদামজাত, ভোক্তা পর্যায়ে পাইকারি সরবরাহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ কিংবা পরিশোধন করতে চাইলে এখন থেকে এই আইনের অধীনেই নিবন্ধন নিতে হবে। কেউ যদি নিবন্ধন না করে তাহলে দুই বছরের জেল এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়াও প্যাকেট বা লেবেলবিহীন ভোজ্য বা অভোজ্য লবণ বিক্রি করলে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান এই আইনে রাখা হয়েছে।
বিএনএ,জিএন