বিএনএ চট্টগ্রাম: সরকার নিজেদের এজেন্ট দিয়ে ‘কুমিল্লার ঘটনা’ ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আন্দোলনকে ভিন্ন পথে নিতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
শনিবার (১৬ অক্টোবর) চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউড়ির একটি কমিউনিটি সেন্টারে মহানগর বিএনপি আয়োজিত কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
সে সময় তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের এজেন্টরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা চালাচ্ছে। সরকারি একটি মহলের ইঙ্গিতে এই ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। জনঅসন্তোষ কমানোর জন্য কুমিল্লা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলায় বিএনপিকে দোষ দেয়া হচ্ছে। এ ধরনের কথাবার্তা ঘটনা ধামাচাপা দেয়া ছাড়া আর কিছু নয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি এই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করে। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান যারা আছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা সবসময় তাদের পাশে ভাইয়ের মতো দাঁড়ায়। ভারতে যখন বাবরি মসজিদের ঘটনা ঘটে, তখন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ওই সময় তিনি প্রতিটি জেলায় ফোন করে বলেছেন, বাংলাদেশে কোথাও যেন সাম্প্রদায়িক সমস্যার সৃষ্টি না হয়। পূজামণ্ডপ অথবা মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সেদিন বাংলাদেশের কোথাও কোনো ঘটনা ঘটতে দেয়া হয়নি। আর বর্তমান সরকার এজেন্ট দিয়েই কুমিল্লার কাজটি করেছে। ওই সূত্র ধরে তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করেছে।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ ক্ষুব্ধ। দেশের মানুষ অধিকার নিয়ে আন্দোলন করবে। তাই জনগণের আন্দোলনকে ডাইভার্ট করার জন্য এসব করছে তারা। এগুলো করতে না পারলে তাদেরই সমস্যা।
সাম্প্রতিক ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এখানে বিরোধী রাজনীতির কোনো সুযোগ রাখা হচ্ছে না। বিএনপিকে মিটিং করতে দেয়া হয় না। মিটিং করতে গেলে মামলা দিয়ে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এবারও পুলিশ মিথ্যা মামলা দেয়া শুরু করেছে। চৌমুহনীর ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেড় বছর ধরে লকডাউন-লকডাউন খেলা করে সরকার মানুষের জীবিকা অর্জনের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। যারা স্বল্প পুঁজি নিয়ে ব্যবসা করতেন, তারা নিঃস্ব হয়ে গেছে। গরীব মানুষকে আড়াই হাজার টাকা করে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে, সেই টাকা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের লোকজন লুট করে খেয়ে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনের ফাঁদে পা দিচ্ছে না বিএনপি। এদেশের মানুষ ভালো করেই জানে যে আওয়ামী লীগের অধীনে যদি কোনো নির্বাচন হয়, তাহলে সেটি কোনো দিনই সুষ্ঠু, আবাধ ও গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে বাধ্য করতে জনগণকে নিয়ে অভ্যুত্থান সৃষ্টি করতে হবে।
সার্চ কমিটি প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, নিজেদের পছন্দের লোকদের নিয়ে সার্চ কমিটি গঠন করা হবে। আবার তারা হুদা মার্কা কমিশন গঠন করবে। যারা দিনের ভোট আগের রাতে নিয়ে নেয়। আওয়ামী লীগ মানুষকে ভোট দিতে দেয় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সভায় নগর বিএনপির সদস্যসচিব আবুল হাশেমের সঞ্চালনায় বক্তব্য আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান প্রমুখ।
বিএনএনিউজ/আরকেসি