বিএনএ, মিরসরাই (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এক কিশোরীকে অপহরণ পরবর্তী গণধর্ষণের ভিডিও ধারণ করার অপরাধে অভিযুক্ত নুরুল আলম রনিকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) রাতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান থানার আজমপুর গুনবর মুন্সী স্বরণী এলাকা থেকে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এবং র্যাব-১, উত্তরা, ঢাকার একটি যৌথ আভিযানিক দল তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার নুরুল আলম রনি ফেনী জেলার পরশুরাম থানার দক্ষিণ গুথুমা এলাকার শাহাব উদ্দিন মিয়ার ছেলে।
মামলার বিবরণ ও ভুক্তভোগীর দেয়া তথ্যে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীর সাথে ভুল নাম্বারের সূত্র ধরে ফেনীর ছাগলনাইয়ার বাসিন্দা সাগর নামের এক যুবকের সাথে মোবাইল ফোনে কথাবার্তা হত। এক পর্যায়ে কিশোরীকে বিবাহের প্রস্তাব দেয় সাগর। গত ১৮ জুলাই সাগর কিশোরীকে ফোনে জানায়, সে তার বাড়ির সামনে আছে এবং তাকে দেখা করতে বলে। ভুক্তভোগী ওই কিশোরী সরল বিশ্বাসে বাড়ি থেকে বের হলে সাগর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার বন্ধুদের সহযোগিতায় জোরপূর্বক একটি সিএনজিচালিত অটোরিক্সা যোগে ফেনীর পরশুরাম বাজার এলাকার অজ্ঞাত ভবনের একটি কক্ষে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সাগর ও তার বন্ধুরা মিলে রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টায় ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক ইয়াবা ট্যাবলেট ও মদ খাওয়ায়। এসময় ভুক্তভোগী কিশোরী অচেতন হয়ে পড়লে সাগর ও তার ৪ বন্ধু মিলে সারারাত পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে রাখে। পরদিন সকালে ভুক্তভোগীর জ্ঞান ফিরলে রনি তাকে মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও দেখায় এবং জানায় সে চিৎকার করলে মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও জনসম্মুখে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে দিবে। রনি ও তার বন্ধুদের হুমকির ফলে ভুক্তভোগী ভয়ে ঘটনাস্থল থেকে বের হয়ে নিজ বাড়ি মিরসরাইয়ের পোলমোগরায় চলে যায়। বাড়ি যাওয়ার পর কিশোরী অসুস্থ হয়ে ৬/৭ দিন শয্যাশায়ী ছিলেন। পরে সুস্থ হয়ে পরিবারের সবার সাথে পরামর্শ করে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। উক্ত ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
পরবর্তীতে গত ৩০ জুলাই ভুক্তভোগী কিশোরী ফেনী জেলার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে আসামী ১। নুর আলম @ রনি (২৮), ২। সাগর (২৩), ৩। রিপন (২৫), ৪। আরিফ (২৪) এবং ৫। সাকিব মুন্সীর (২৫) বিরুদ্ধে উল্লেখিত গণধর্ষণের ঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত উল্লেখিত অপরাধ আমলে নিয়ে অফিসার ইনচার্জ, পরশুরাম থানাকে তদন্ত সাপেক্ষে মামলা রেকর্ড করার নির্দেশ প্রদান করেন। উক্ত আদেশ মূলে গত ১০ আগস্ট পরশুরাম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা রেকর্ড হয়।
র্যাব জানায়, গণধর্ষণ মামলার ১নং আসামী আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট থেকে গ্রেপ্তার এড়ানোর লক্ষ্যে ছদ্মনাম ধারণ করে ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণখান থানার আজমপুর গুনবর মুন্সী স্বরণী এলাকায় অবস্থান করছে। গোপন সংবাদে এমন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এবং র্যাব-১, উত্তরা, ঢাকার একটি যৌথ আভিযানিক দল মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) রাতে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. নুর আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিএনএনিউজ/আশরাফ উদ্দিন,বিএম