21 C
আবহাওয়া
৮:৩৬ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ৫ বছরের প্রকল্প চলছে ১০ বছর, ব্যয় বেড়েছে ১০৯ শতাংশ

৫ বছরের প্রকল্প চলছে ১০ বছর, ব্যয় বেড়েছে ১০৯ শতাংশ

৫ বছরের প্রকল্প চলছে ১০ বছর, ব্যয় বেড়েছে ১০৯ শতাংশ

বিএনএ ডেস্ক: হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গাজীপুরের জয়দেবপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার পথে বিশেষ লেনের মাধ্যমে বাস চলাচলের জন্য বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলছে। তবে এ প্রকল্প ধীরগতির কাজের ইতিহাস তৈরি করেছে। সব মিলিয়ে ৫ বছরের প্রকল্প প্রায় ১০ বছর ধরে কাজ চলছে। গত জুলাই পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ৮১ শতাংশ। এর মধ্যে ব্যয় বেড়েছে ১০৯ শতাংশ, যা টাকার অঙ্কে ২ হাজার ২২৫ কোটি টাকা।

নির্মাণকাজের মূল সংস্থা সওজ। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সংস্থাটি এ পর্যন্ত ছয়জন প্রকল্প পরিচালক পরিবর্তন করেছে। বিআরটি প্রকল্প ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন পায়। ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৪০ কোটি টাকা। এখন ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা। প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ফরাসি উন্নয়ন সংস্থা এএফডি, গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি নামের একটি সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকার।

নির্মাণকাজ শুরুর পর এ পর্যন্ত বিআরটির উড়ালপথ তৈরির গার্ডার ধসে চারটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে। সোমবার উত্তরার জসিমউদ্‌দীন এলাকায় ক্রেন থেকে গার্ডার পড়ে একটি গাড়ির ভেতরে থাকা শিশুসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। গত ১৫ জুলাই গাজীপুর শহরে গার্ডারের নিচে চাপা পড়ে নিহত হন একজন নিরাপত্তাকর্মী। গত বছর ১৪ মার্চ বিমানবন্দর এলাকায় এবং আবদুল্লাহপুরে একই দিনে দুবার গার্ডারধসের ঘটনা ঘটে। এতে নির্মাণকাজে যুক্ত ছয়জন আহত হন। তাদের মধ্যে তিনজন চীনের নাগরিক ছিলেন।

গার্ডারগুলোর প্রতিটির ওজন ৪০-৪৫ টন। এসব গার্ডারের ওপর স্ল্যাব বসিয়ে বাস চলার পথ তৈরি হবে। বিপুল ওজনের এসব গার্ডার বসানোর কাজ চলছিল কোনো রকম নিরাপত্তাবেষ্টনী ছাড়াই। এ ছাড়া যেসব ক্রেন ব্যবহার করা হচ্ছিল, এগুলোর সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন আছে।

বিআরটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। নির্মাণকাজ চারটি ভাগে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে উড়ালপথ ও সড়ক নির্মাণের দায়িত্ব পালন করছে তিনটি চীনা কোম্পানি। এগুলো হচ্ছে চায়না গেজহুবা গ্রুপ, জিয়াংশু প্রভিনশিয়াল ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ এবং ওয়েহেই ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-পারেটিভ। আর গাজীপুরে ডিপো নির্মাণের দায়িত্বে ছিল দেশীয় কোম্পানি সেল-ইউডিসি, এদের কাজ আগেই শেষ হয়েছে। তবে চীনের তিনটি কোম্পানির কাজ চলছে। ২০১৬ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।

বিআরটি প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়োজিত চারটি সংস্থা। এর মধ্যে তিনটি সংস্থা সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন। আর সমন্বয়কের দায়িত্বে রয়েছে সড়ক পরিবহন বিভাগ।

গাফিলতির যেন শেষ নেই

সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিআরটি নির্মাণে ২০১১ সালে প্রাথমিক সমীক্ষা করে এডিবি। তবে পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষা ও নকশা হওয়ার আগেই নেয়া হয় প্রকল্প। ফলে বাস্তবায়ন করতে গিয়ে নানা সমস্যা দেখা দেয়। যেমন নির্মাণকাজ করতে গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্প এলাকায় যথাযথ পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা নেই। ফলে পানি জমে যাচ্ছে। সেবা সংস্থার লাইন কীভাবে সরানো হবে, তা-ও আগে থেকে ঠিক করা হয়নি। ব্যস্ততম সড়কে নির্মাণকাজের সময় যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার কোনো বিকল্প চিন্তাও করা হয়নি।

প্রকল্প সূত্র জানায়, বিআরটি প্রকল্পে প্রথমে উড়ালসড়কের পথ বক্স গার্ডার ধরে নকশা করা হয়। কিন্তু নির্মাণকাজ শুরুর দুই বছর পর ঠিকাদারের চাপে তা পরিবর্তন করে ‘আই’ গার্ডার করা হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়, বক্স গার্ডার হলে পর্যাপ্ত জায়গা পাওয়া যাবে না।

২০১৯ সালে এসে বিমানবন্দর এলাকায় মানুষের রাস্তা পারাপারের জন্য বিআরটির মধ্যে একটি পাতালপথ যুক্ত করা হয়। এর ফলে ব্যয় বাড়ে ৪২০ কোটি টাকা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি বড় প্রকল্পে শুরুতে প্রাথমিক সমীক্ষা করতে হয়। এরপর চূড়ান্ত সমীক্ষা করে প্রকল্পের কাজ শুরু করতে হয়। তার কোন কিছু না করেই এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়।

উত্তরা দুর্ঘটনায় ৩ সদস্যে তদন্ত কমিটি

উত্তরার দুর্ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আক্তারকে। এছাড়া কমিটিতে আছেন, মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সবুজ উদ্দীন খান ও ঢাকা মেট্রো পলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মঞ্জুর মোরশেদ।

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সকাল নয়টার ভেতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।

বিএনএ/এআর

Loading


শিরোনাম বিএনএ