30 C
আবহাওয়া
১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ - জুন ১, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » এমভি আব্দুল্লাহ’র কাছেই ভারতীয় যুদ্ধ জাহাজ!

এমভি আব্দুল্লাহ’র কাছেই ভারতীয় যুদ্ধ জাহাজ!


বিএনএ, ডেস্ক : সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর কাছাকাছি অবস্থান করছে ভারতীয় যুদ্ধ জাহাজ। তারা জলদস্যু ও এমভি আব্দুল্লাহ ওপর সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে। একই সঙ্গে দূরবর্তী টহল অব্যাহত রেখেছে। জাহাজের ব্রিজে অবস্থান নেয়া জলদস্যুদের  ছবিও প্রকাশ করেছে ভারতের নৌবাহিনী। ওই ছবিতে দেখা যায়, এমভি আব্দুল্লাহ’র ব্রিজে সঙ্গে ৪ জন জলদস্যু অস্ত্রসহ অবস্থান করছে।

YouTube player

গত ১৫ মার্চ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছেসশস্ত্র জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে এবং জাহাজটি সোমালিয়ার জলসীমায় পৌঁছানো পর্যন্ত কাছাকাছি এলাকায় থেকে নজর রাখে ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ।

মোজাম্বিক থেকে ৫০ হাজার টন কয়লা নিয়ে দুবাই যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ বেলা দেড়টায় ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ। জাহাজে থাকা সব নাবিকই বাংলাদেশি। জিম্মি করার তৃতীয় দিনের মাথায় ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বেলা একটার দিকে প্রথমে সোমালিয়ার গ্যারাকাদ উপকূল থেকে ২০ নটিক্যাল মাইল দূরে জিম্মি জাহাজটি নোঙর করেছিল দস্যুরা। এরপর সন্ধ্যার দিকে উপকূল থেকে সাত নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে রাখে। শুক্রবার জাহাজটি আবারও নোঙর তুলে কাছাকাছি আরেক এলাকায় নিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, দস্যুরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে জাহাজের অবস্থান পরিবর্তন করছে।

ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছে, বাংলাদেশি জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে দূরবর্তী টহল জাহাজ (এলআরএমপি) মোতায়েন করা হয়। এরপর ১২ মার্চ সন্ধ্যায় জাহাজটির অবস্থান শনাক্ত করার পর জাহাজের নাবিকদের অবস্থা জানতে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু জাহাজ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

তাদের পোস্টে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় পরে ভারতীয় নৌবাহিনী একটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে। সেটি ওই অঞ্চলে সামুদ্রিক নিরাপত্তায় কাজ করছিল। যুদ্ধজাহাজটি ১৪ মার্চ সকালে ছিনতাইকৃত জাহাজটির মুখোমুখি হয়।

বাংলাদেশি জাহাজটি সোমালিয়ার জলসীমায় পৌঁছানো পর্যন্ত কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করে ভারতীয় নৌবাহিনীর এই যুদ্ধজাহাজ।

হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলদস্যুদের আক্রমণের প্রেক্ষাপটে গেল দুই মাসে ভারত মহাসাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলে সহায়তা জোরদার করেছে ভারতের নৌবাহিনী। চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারতীয় নৌবাহিনী সোমালিয়ার পূর্ব উপকূলে ইরানের পতাকাবাহী একটি মাছ ধরার জাহাজে জলদস্যুদের আক্রমণের চেষ্টা নস্যাৎ করে দেয়। ওই জাহাজে ইরানের ১১ এবং পাকিস্তানের ৮ জন নাগরিক ছিলেন।

এর আগে জানুয়ারিতে সোমালিয়ার পূর্ব উপকূলে ইরানের পতাকাবাহী আরেকটি মাছ ধরার জাহাজে জলদস্যুরা হামলা করার পর ১৯ পাকিস্তানি নাবিককে উদ্ধার করেছিল ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ আইএনএস সুমিত্রা। এ ছাড়া গত ৫ জানুয়ারি উত্তর আরব সাগরে লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি লিলা নোরফোক’ ছিনতাইয়ের চেষ্টাও নস্যাৎ করে ভারতীয় নৌবাহিনী

শুক্রবার দিনের বেলা জলদস্যুরা সব নাবিককে ব্রিজে থাকা স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে পরিবারের সাথে কথা বলার অনুমতি দিয়েছে। সন্ধ্যার পর অবশ্য সেই অনুমতি নেই৷ এছাড়াও জলদস্যুরা নাবিকদের স্থানীয় সীমকার্ড এনে দিবে বলে জানিয়েছে।

এমভি আব্দুল্লাহ’র প্রধান কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন  মুহাম্মদ আতিকুল্লাহ খান মালিকপক্ষকে জানিয়েছে নাবিকদের জাহাজের সাধারণ রুটিন মেনে চলার জন্য অনুমতিও দেয়া হয়েছে। ইঞ্জিনিয়াররা  ইঞ্জিন রুমে স্বাভাবিক কাজ করার অনুমতি পেয়েছে। ইঞ্জিনরুমে ওরা কোন পাহারা বসায়নি। ডেক অফিসাররা কার্গো হোল্ডের ৫৫ হাজার টন কয়লার তাপমাত্রা নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাবেন। কয়লার তাপমাত্রা আর হোল্ডের অক্সিজেন নিয়ন্ত্রণ করলে বিস্ফোরণের সম্ভাবনা কমে আসবে।

ছিনতাই  হওয়া জাহাজটিতে ২৫-৩০ জন অস্ত্রধারি জলদস্যু পালা করে পাহারা দিচ্ছে। তবে জলদস্যুরা নাবিকদের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ অব্যাহত রেখেছে। জাহাজে মাত্র ১০/১২ দিনের  খাদ্য মজুদ রয়েছে। জিম্মি নাবিকরা খাদ্যের চেয়ে বিশুদ্ধ পানির সংকটকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এখন পর্যন্ত জলদস্যুরা কোন নির্দিষ্ট অংকের মুক্তিপণ দাবী করেনি।  নাবিকরা কোন ঝুঁকি নিচ্ছে না। তাই কোন ছবিও পাঠাচ্ছে না। জলদস্যুদের নির্দেশনা মেনে চলছে।

বিএনএ/ সৈয়দ সাকিব, ওজি

 

Loading


শিরোনাম বিএনএ