16 C
আবহাওয়া
১১:০৪ পূর্বাহ্ণ - ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » শীতকালে বান্দার যে আমল আল্লাহর বেশি পছন্দ

শীতকালে বান্দার যে আমল আল্লাহর বেশি পছন্দ

দোয়া

চলছে শীতের মৌসুম। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়াবহ ঠাণ্ডা পড়ছে। আল্লাহর প্রকৃত বান্দাদের জন্য শীতকাল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ইসলামে এটি ইবাদতের উপযুক্ত মওসুম হিসেবে বিবেচিত। যদিও শয়তান মানুষকে শীতের সময় ইবাদতে গাফেল রাখার চেষ্টা চালায়। বিশেষ করে এশা ও ফজরের নামাজে। শীতের কষ্টকর মুহূর্তগুলো সে মুমিনের চোখের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করে। কিন্তু প্রকৃত মুমিন কখনও ধোঁকায় পড়ে না।

নবীজির হাদিস অনুযায়ী, যে ইবাদতে কষ্ট বেশি, সে ইবাদতের সওয়াবও বেশি। রাসুল (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দুই ঠাণ্ডার সময়ের নামাজ আদায় করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (বুখারি: ৫৭৪)

পরিপূর্ণ অজুতে গুনাহ মাফ
প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় যারা উত্তমরূপে অজু করে মসজিদের দিকে পা বাড়ান, এমন মুমিন বান্দার জন্য ক্ষমার ঘোষণা রয়েছে। রাসুল (স.) বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন বিষয়ের সংবাদ দেব না, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের গুনাহগুলো মুছে দেবেন এবং তোমাদের মর্যাদা ও সম্মান বৃদ্ধি করবেন? সাহাবায়ে-কেরাম বললেন, অবশ্যই হে আল্লাহর রাসুল! নবী (স.) বললেন, (শীত বা অন্য কোনো) কষ্টকর মুহূর্তে ভালোভাবে অজু করা।’ (মুসলিম: ২৫১)

রোজা
শীতকালে দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখতে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকতে হয় না। তাই কারো যদি কাজা রোজা বাকি থাকে, সেগুলো আদায় করে নেওয়ার অপূর্ব সুযোগ শীতকাল। আমের ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘শীতল গনিমত হচ্ছে শীতকালে রোজা রাখা।’ (তিরমিজি: ৭৯৫) বেশি বেশি নফল রোজা রাখারও এটি সুবর্ণ সময়। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘বিশুদ্ধ নিয়তে যে ব্যক্তি এক দিন রোজা রাখল, মহান আল্লাহ প্রতিদানস্বরূপ জাহান্নাম এবং ওই ব্যক্তির মাঝখানে ৭০ বছরের দূরত্ব তৈরি করে দেবেন।’ (বুখারি: ২৮৪০)

শীতার্ত মানুষের সেবা মহান ইবাদত
বছর ঘুরে আসে শীত ও শৈত্যপ্রবাহ। হাড়-কাঁপানো শীতে নাকাল দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষেরা খুব কষ্টে থাকে। শীতার্তসহ বিপন্ন সব মানুষের পাশে দাঁড়ানো ইসলামের আদর্শ। শীতার্ত মানুষকে প্রয়োজনীয় বস্ত্র দিয়ে জান্নাতলাভে ধন্য হওয়ার সুযোগ রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে মুমিন অন্য বিবস্ত্র মুমিনকে কাপড় পরিয়ে দিল, মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তিকে জান্নাতের সবুজ কাপড় পরিয়ে দেবেন।’ (তিরমিজি: ২৪৪৯)

রাতে অধিক ইবাদতের সুযোগ
যেসব মুত্তাকি আল্লাহর প্রেমে শীতের দীর্ঘ রাতকে উৎসর্গ করে, রাতের বেশির ভাগ অংশ আল্লাহর জিকির ও ইবাদতে যাপন করে, তাদের মহান আল্লাহ জান্নাত উপহার দেবেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় মুত্তাকিরা থাকবে জান্নাতসমূহে ও ঝরণাধারায়, তাদের রব তাদের যা দেবেন তা তারা খুশিতে গ্রহণ করবে। এর আগে এরাই ছিল সৎকর্মশীল। রাতের সামান্য অংশই এরা ঘুমিয়ে কাটাত।’ (সুরা জারিয়াত: ১৫-১৭)

দীর্ঘ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ
শীতের রাতে কেউ চাইলে পূর্ণরূপে ঘুমিয়ে আবার শেষ রাতে তাহাজ্জুদের সালাত পড়তে সক্ষম হতে পারে। কেননা শীতকালে রাত দীর্ঘ হয়। মহান আল্লাহ ঈমানদারদের গুণাবলি সম্পর্কে বলেন, ‘তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের রবকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে।’ (সুরা সাজদাহ: ১৬)

বেশি কোরআন তেলাওয়াতের সুযোগ
বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করার জন্য শীতকালের রাত উপযুক্ত। আর রাতে কোরআন তেলাওয়াতের আয়াতসংখ্যার পরিমাণ অনুযায়ী তেলাওয়াতকারীর মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাতে ১০টি আয়াত তেলাওয়াত করে সে গাফেল বলে গণ্য হবে না, আর যে ব্যক্তি ১০০ আয়াত তেলাওয়াত করে সে আনুগত্যশীল বলে গণ্য হবে, আর যে ব্যক্তি এক হাজার আয়াত তিলাওয়াত করে তার জন্য সওয়াবের ভাণ্ডার লেখা হবে।’ (আবু দাউদ: ১৪০০)

সূরা ও দোয়া মুখস্থ করার সুযোগ
কোরআন বেশি মুখস্থ করলে মর্যাদাও তত বেশি। হাদিস শরিফে এসেছ-‘কেয়ামতের দিন কোরআন মুখস্থকারীদের বলা হবে, ‘কোরআন পড়তে থাকো এবং জান্নাতের মর্যাদার স্তর সমূহে উঠতে থাকো। তারতিলের সাথে পড়, যেভাবে দুনিয়ায় পড়তে। তোমার স্থান সেখানে হবে, যেখানে তোমার পঠিত শেষ আয়াত হবে’ (তিরমিজি: ১৩১৭)। খতিব বাগদাদি (রহ.) বলেন, শীতকালের রাত অনেক লম্বা হয়। আর রাত যেকোনো কিছু মুখস্থ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়। তাই তোমরা শীত এলে বেশি বেশি ইলম অন্বেষণে সময় ব্যয় করো।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ