ঢাকা : বঙ্গবন্ধুর প্রতি সারা পৃথিবীর মানুষের শ্রদ্ধাবোধ প্রতিজন বাঙালির জন্য গর্ব করার বিষয় বলেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু কেবল বাঙালি ও বাংলা ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই করেননি, তিনি সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন শুরু করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় টেলিযোগাযোগ খাতে তার হাত দিয়েই শুরু হয়েছিলো বৈপ্লবিক পরিবর্তন। দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বের জন্য সারা পৃথিবী বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে অবিচ্ছেদ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে ।
মন্ত্রী সোমবার(১৫নভেম্বর) ঢাকায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং বঙ্গবন্ধুর দূরদির্শতা শীর্ষক টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর আয়োজিত অনলাইন সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মোঃ খলিলুর রহমান, বিটিআরসি ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের যুগ্ন-সচিব মোঃ আব্দুল হান্নান, বিটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রফিকুল মতিন, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মশিউর রহমান এবং টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সাহাব উদ্দিন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সঞ্জীব ঘটক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংযোগসহ টেলিযোগাযোগ খাতে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, টিএন্ডটি বোর্ড গঠন, বেতবুনিয়ায় ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন উপগ্রহ ভূ- কেন্দ্র স্থাপন, ১৯৭৩ সালে আইটিইউ এবং ইউপিইউ-এর সদস্য পদ অর্জনের মধ্য দিয়ে ইন্টারনেটভিত্তিক তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে অংশ গ্রহণের যাত্রা বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় রোপিত হয় ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ। পঁচাত্তর পরবর্তী অপশক্তির ২১ বছরেরর পশ্চাদপদতা ও জঞ্জাল অপসারণ করে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত দেশে ডিজিটাল সংযোগ ও প্রযুক্তি বিকাশের অভিযাত্রা শুরু হয়। সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কম্পিউটারের ওপর ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার, চারটি মোবাইল ফোনের লাইসেন্স প্রদান, ভিস্যাটের মাধ্যমে ইন্টারনেট চালুসহ ডিজিটাল সংযুক্তি ও প্রযুক্তি বিকাশে যুগান্তকারী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেন। এর ফলে বঙ্গবন্ধুর রোপন করা ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজটি বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরির সূদুরপ্রসারী চিন্তার ফলে চারা গাছে রূপান্তর লাভ করে। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি ধারবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে গত ১৩ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ মহিরূহে পরিণত হয়েছে। এই কর্মসূচি পৃথিবীর কাছে বাংলাদেশ এক নতুন পরিচয়ে আত্ম প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের প্রতিটি সূচকে অভাবনীয় সফলতা অর্জন করেছে বলে উল্লেখ করেন মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশ থেকে ডিজিটাল সংযুক্তি বিকাশে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে। পৃথিবীর অনেক দেশ যেখানে ফাইভ-জি প্রযুক্তির কথা ভাবতেই পারেনি সেখানে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ-জয়-এর দিকনির্দেশনায় আগামী ১২ ডিসেম্বর ফাইভ-জি যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব বলেন, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর অবদান পাথেয় হয়ে থাকবে। মূল প্রবন্ধে টেলিযোগাযোগ খাতে উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর অবদান সবিস্তারে তুলে ধরা হয়।
ডিজিটাল যুগ নতুন প্রজন্মের জন্য স্বর্ণালী সময় – টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল যুগ নতুন প্রজন্মের জন্য স্বর্ণালী সময়। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় আজকের বাংলাদেশ অর্থনৈতিক, সামাজিক কিংবা শিক্ষার উন্নয়নে বিশ্বে অনুকরণীয়। তিনি বলেন, সম্ভাবনাময় বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল যুগের উপযোগী মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার বদ্ধপরিকর।
মন্ত্রী (১৫ নভেম্বর) ঢাকায় অনলাইনে গ্রামীণ ফোন আয়োজিত ‘জিপি এক্সপ্লোরারস’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিটিআরসি‘র ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র এবং গ্রামীণ ফোনের সিইও ইয়াসির আজমান বক্তৃতা করেন।
মন্ত্রী জিপি এক্সপ্রোলারারস কর্মসূচি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গঠনে একটি অসামান্য কাজ উল্লেখ করে বলেন, গ্রামীণ ফোনের ইন-হাউস স্কিল একাডেমি থেকে গ্র্যাজুয়েশন অর্জনকারী শিক্ষার্থীরা যেভাবে নিজেদের তৈরি করতে পেরেছে তা জীবনের বড় ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। এই প্রশিক্ষণ প্রচলিত ধারা থেকে ব্যতিক্রমী ধারায় যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। কোভিডকালে নিরবচ্ছিন্ন মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবার পাশাপাশি আমাদের নির্দেশনা বাস্তবায়নে থ্রি-জি নেটওয়ার্ক থেকে ৪জি নেটওয়ার্ক দেশব্যাপী সম্প্রসারণে গ্রামীণফোনসহ মোবাইল অপারেটরদের ভূমিকা অত্যন্ত সময়োপযোগী বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন চিন্তা-ভাবনার ফসল ডিজিটাল বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজ প্রতিটি ক্ষেত্রে অনন্য উচ্চতায় উপনীত হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, জিপি এক্সপ্লোরারস প্রোগ্রামটি শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল দক্ষতা বিকাশে জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সাম্যসমাজ প্রতিষ্ঠায় সরকারের এজেন্ডারই প্রতিচ্ছবি।
জিপি এক্সপ্লোরারস একটি বিশেষ ডিজিটাল স্কিলস একাডেমি, যার লক্ষ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার ও প্রয়োজনীয় দক্ষতার মধ্যে ব্যবধান দূর করে সফট ও ডিজিটাল দক্ষতা বিকাশের মাধ্যমে তাদের প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আপস্কিল ও দক্ষ করে তোলা। জিপি একপ্লোরারসের এবারের আয়োজনে ৬৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬শ’র বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেন, যার মধ্যে ৩৫৭ জন শিক্ষার্থীকে নির্বাচন করা হয়। ২০ সপ্তাহব্যাপী এ আপস্কিলিং প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক জ্ঞানের সাথে তাদের যোগাযোগ দক্ষতা, উদ্যোক্তা মানসিকতা এবং ডিজিটাল দক্ষতার ওপর আলোকপাত করা হয়।
bnanews24,GN