26 C
আবহাওয়া
৯:৪০ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » এস আলমের সহযোগী বিএনপি’র লিয়াকত শত কোটি টাকার মালিক!

এস আলমের সহযোগী বিএনপি’র লিয়াকত শত কোটি টাকার মালিক!

দানব এস আলমের সহযোগী হয়ে শতকোটি টাকার মালিক বনে যান বিএনপির লিয়াকত

বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম শিল্পগ্রুপের কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী আন্দোলন করে আলোচনায় আসে বিএনপি নেতা লিয়াকত আলী। সে সময় ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল গণ্ডামারা ইউনিয়নে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করে বসতভিটা রক্ষা কমিটির ব্যানারে আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে ত্রিমুখী সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। এই সুযোগে পরবর্তী সময়ে হয়ে উঠেন এস আলমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ।

এক সময় আর্থিকভাবে তেমন সচ্ছল না হলেও ২০১৬ সালের পর এস আলমের সঙ্গে সখ্যতা হলে লিয়াকতকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। খুনোখুনির পর সমঝোতার মাধ্যমে গন্ডামারার জায়গা-জমি নামমাত্র মূল্যে এস আলমকে মালিক বানিয়ে দিয়ে শত কোটি টাকার মালিক বনে যান তিনি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এক্সফেক্ট্রার সঙ্গে ঝামেলা করে এস আলমের ভরাট কাজ থেকে ৪০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন লিয়াকত। এসব টাকা দিয়ে লিয়াকত নিজে ও তার স্ত্রীর নামে প্রায় ১০০ বিঘা জায়গা ক্রয় করেন। কামিয়ে নেন শত শত কোটি টাকা।

বিএনপির এই নেতার দুটি ছবিতে তাকে ব্যাংক খাতে লুটপাটের হোতা সাইফুল ইসলাম মাসুদের পাশে দেখা যাচ্ছে। পরে ইউনিয়ন নির্বাচনে ওই এলাকা হতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তবে ২০২৩ সালের মার্চে লিয়াকত আলীকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি দক্ষিণ জেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। পরে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে দলের পদটিও হারান তিনি। তার বিরুদ্ধে খুন, চাঁদাবাজি, পুলিশের ওপর হামলা, দস্যুতা, ভয়ভীতি, রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডসহ নানা অপরাধে বিভিন্ন থানায় ২১টির বেশি মামলা রয়েছে।

স্থানীয় সূত্র বলছে তার অন্যতম শিষ্য আবু আহমদও বাঁশখালী উপজেলার ছাত্রদল নেতা ছিলেন। পরে তার সাথেও বিরোধে জড়ান। দু’জনে বাঁশখালীর গন্ডামারায় ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের বিরোধিতা করে ব্যাপক সংঘর্ষ লাগিয়ে আলোচিত ছিলেন। এতে পৃথক পৃথক সময়ে ১৩ জন নিহত হয় ও শতাধিক শ্রমিক আহত হয়। পরে কয়লা বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করে বালি সরবরাহ, জায়গা ক্রয়, স্ক্র্যাপ ব্যবসা, শ্রমিক সরবরাহ ব্যবসাসহ বিভিন্ন ব্যবসা করে কয়েক শত কোটি টাকা আয় করেন। পরে ৭৫ একর খরিদা জমির মালিক হয়ে যান। চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় নামে, বেনামে ফ্ল্যাট ও সম্পদ ক্রয় করেন। এরপর টাকা ও জমির ভাগাভাগি নিয়ে দু’জনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।

স্থানীয়রা জানান, প্রথমে বিরোধীতা করলেও পরে মিলেমিশে এস আলমের অপকর্মের সহযোগী বনে যান। এস আলমের কাছে জমি বিক্রয়ে দালালি, সাপ্লাইসহ নানা কাজ করেন । নাম প্রকাশ না করে অনেকে বলছেন, এস আলমের অর্থ পাচারসহ , লুটপাটের অনেক খবর লিয়াকত আলি জানেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিদুৎ খাতে এস আলমের লুটপাটের খবর বের হবে।

সেসময় সংবাদ মাধ্যমকে বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের সহকারী সমন্বয়কারী বাহাদুল আলম হিরণ জানান, জমি অধিগ্রহণে আমরা কাউকে জবরদস্তি করিনি। বরং বাজারমূল্যের চেয়েও দ্বিগুণ বেশি দাম দিয়েছি। লিয়াকত আলীও মূল্য পরিশোধে সহযোগী হিসেবে ছিলেন। কিন্তু পরে তিনি ব্যক্তিগত কোন্দলের কারণে বিরোধিতায় নেমেছেন।

তিনি বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শামসুল আলমের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের বিরোধ। ইউপি নির্বাচন নিয়ে এ বিরোধ তুঙ্গে ওঠে।

বাহাদুর আলম হিরণ জানান, এস. আলম গ্রুপ ও চায়না সেফকো ইলেক্ট্রিক প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁশখালি উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের গন্ডমারা উপকুলীয় এলাকায় ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প কাজ বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের ৭০ ভাগের মালিকানা এস. আলম গ্রুপ। বাকি ৩০ ভাগ মালিকানা চায়না সেফকোর।

এ সব বিষয়ে কথা বলতে লিয়াকত আলীকে মোবাইলে একাধিক বার নক করলেও  যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বিএনএনিউজ/নাবিদ/এইচমুন্নী

Loading


শিরোনাম বিএনএ