বিএনএ, নবি: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়ন এই তিনটি মোটোকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাইকে নিয়ে কাজ শুরু করি। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন দিক থেকে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় পূর্বের অবস্থা থেকে অনেক এগিয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) এর বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি এপিএ র্যাংকিংয়ে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ১৪তম হয়েছে। অথচ এর আগে ৪২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৯তম অবস্থানে ছিল নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। আমি যোগদানের পর ৪৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২৯তম অবস্থানে আসে এবং এবার ১৪তম অবস্থান দখল করতে সক্ষম হয়। আগামীতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় আরও এগিয়ে যাবে এবং বিশ্বে এমন ভাবমূর্তি তৈরি হবে বিশ্ববাসী একনামে চিনবে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়কে।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) জয়ধ্বনি মঞ্চে রংপুর ডিভিশনাল স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত নবীন বরণ ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ২০২৩ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর।
প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতে ড. সৌমিত্র শেখর ১৯৭৫ সনের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সকল শহিদদের প্রতি এবং জেল হত্যা দিবস ও মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত সকল শহিদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। বঙ্গবন্ধু আজীবন বাঙালির জন্য সংগ্রাম করেছেন, বাঙালির আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিয়েছেন। তিনি ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত এক উন্নত বাংলাদেশের নকশা করেছিলেন। কিন্তু ঘাতকদের বুলেট তাঁর সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন হতে দেয়নি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে নিজের জন্য না ভেবে দেশের জন্য ভাবতে এবং অন্যের উপকারে কাজ করতে রংপুর ডিভিশনের নবীন শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান অতিথি।
ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন এবং তাঁর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে ১৯৮১ সনে বাংলাদেশে আসেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে পৌঁছে গেছে এবং বাংলাদেশ এখন স্মার্ট বাংলাদেশের নিকটে। প্রযুক্তি ও জ্ঞান নির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রংপুর ডিভিশনের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য আরও বলেন, আমরা জানি তোমরা একে অন্যের প্রতি অত্যন্ত সহনশীল। তোমরা শুধু রংপুরের শিক্ষর্থীদের সাথেই নয় বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলের প্রতি আন্তরিক হবে। আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়কে এমন জায়গায় নিয়ে যেতে চাই যেখানে কোন দারোয়ান থাকবে না, থাকবে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। এই ক্যাম্পাস হবে একটি নন্দন কানন। প্রথমটি জয় বাংলা এবং দ্বিতীয়টি জয় বঙ্গবন্ধু নামে দুইটি গেইট থাকবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কারও পরিচয় যখন শুনবে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের তখন যেন ইতিবাচক ধারণা তৈরি এমন অবস্থায় আমরা নিয়ে যেতে কাজ করছি। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়কে এমন ভাবমূর্তি তৈরির জন্য আমাদের সকলকে একসাথে কাজ করে যেতে হবে।
র্যাগিং বিষয়ে আমাদের কঠোর অবস্থান এবং এই ক্ষেত্রে আমাদের জিরো টলারেন্স উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, তোমাদের যদি কেউ কখনো শারীরিক বা মানসিকভাবে নির্যাতন করে তাহলে তোমরা প্রক্টরিয়াল বডির যেকাউকে জানাবে। র্যাগিংয়ের মতো কোন ঘটনা ঘটলে আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করব।
অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কে এম জাকির হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর তপন কুমার সরকার। রংপুর ডিভিশনাল স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল প্রামাণিক অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভার পর শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আরও পড়ুন: গাছে পেরেক ঠুকে রাবিতে সাঁটানো হচ্ছে ব্যানার-পোস্টার
বিএনএনিউজ/ রোকন বাপ্পি, বিএম হাছিনা আখতার মুন্নী