31.3 C
আবহাওয়া
২:১০ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » যে কারণে আজ জাতীয় শোক দিবস

যে কারণে আজ জাতীয় শোক দিবস

পিতা হত্যার নিঠুর সেই রাত

।।ওসমান গনী।।
প্রতিদিনের মতো সেইদিনও বঙ্গবন্ধু রাত ৮ টার দিকে বাসায় ফেরেন । কিন্তু তিনি কী জানতেন ইতিহাসের বর্বর এক হত্যাকণ্ডের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের সোনালী স্বপ্ন লুন্ঠন করার এক মহাপরিক্ল্পনা হচ্ছে।রাত ১০টার দিকে সেনানিবাসের উত্তর প্রান্ত থেকে বেঙ্গল ল্যান্সারের টি-৫৪ ট্যাংকগুলো ইউনিট থেকে বেরিয়ে পড়ে। এয়ারপোর্টে ১৮টি কামান ও ২৮টি ট্যাংক একত্রিত হয়।

রাত সাড়ে ১১টার দিকে মেজর শরিফুল হক ডালিম, মেজর এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ বজলুল হুদা, মেজর শাহরিয়ার রশিদ, মেজর আজিজ পাশা, মেজর রাশেদ চৌধুরী প্রমুখ সেখানে জড়ো হন।১৫ অগাস্ট প্রথম প্রহরে মেজর সৈয়দ ফারুক রহমান অফিসারদের নির্দেশ দেন, বিমানবন্দরের কাছে হেড কোয়ার্টারে স্কোয়াড্রন অফিসে মিলিত হতে হবে।সরাসরি আক্রমণের পরিকল্পনা করা হয় সেখানে। সিদ্ধান্ত হয়, ওই বাড়িকে ঘিরে দুটো বৃত্ত তৈরি করা হবে। ভেতরের বৃত্তের সদস্যরা সরাসরি বঙ্গবন্ধুর বাড়ি আক্রমণ করবে।

বাইরে থেকে রক্ষীবাহিনী বা ভেতর থেকে সেনাবাহিনীর কোনো আক্রমণ এলে তা ঠেকানোর দায়িত্বে থাকবে বাইরের বৃত্তের সদস্যদের। বাইরের বৃত্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় মেজর নূর ও মেজর হুদাকে। বঙ্গবন্ধুর বাসায় আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে ধানমণ্ডিতে শেখ ফজলুল হক মণি এবং আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বাসাতেও আক্রমণের সিদ্ধান্ত হয়।ভারী মেশিনগান বসানো দ্রুতগতির একটি জিপে রওনা দেন ডালিম। সঙ্গে এক প্লাটুন সৈন্যসহ একটি বড় ট্রাক।শেখ মণির বাসায় আক্রমণের দায়িত্ব দেওয়া হয় রিসালদার মোসলেমউদ্দিন খানকে। তার সঙ্গে দেওয়া হয় দুই প্লাটুন সৈন্য।

২৮টি ট্যাংক নিয়ে শেরে বাংলা নগরে রক্ষীবাহিনীকে প্রতিহত করার দায়িত্ব নেন মেজর ফারুক নিজে। সেসব ট্যাংকে গোলা না থাকলেও মেশিনগানে প্রচুর গুলি ছিল।মেজর এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি আক্রমণের জন্য ১২টি ট্রাকে সাড়ে তিনশ সাধারণ সৈনিককে তৈরি করা হয়।

সরাসরি আক্রমণে মেজর রশিদের কোনো দায়িত্ব ছিল না। তার দায়িত্ব ছিল হত্যাকাণ্ড পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দেওয়া এবং সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি সমন্বয় করা।ভোর সোয়া ৫টার দিকে মেজর ডালিম ও রিসালদার মোসলেমউদ্দিনের নেতৃত্বে আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ও শেখ মণির বাসায় আক্রমণ হয়।

শেখ মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যা করে ঘাতকরা। প্রাণে বেঁচে যান শেখ মণির ছেলে শেখ ফজলে শামস পরশ ও শেখ ফজলে নূর তাপস।

ডালিমের নেতৃত্বে হত্যা করা হয় আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ১৪ বছর বয়সী মেয়ে বেবী, ১২ বছরের ছেলে আরিফ, চার বছরের নাতি বাবু (আবুল হাসনাত আবদুল্লার ছেলে), ভাতিজা শহীদ সেরনিয়াবাত, ভাগ্নে আবদুল নইম খান রিন্টু (আওয়ামী লীগ নেতা আমীর হোসেন আমুর খালাতো ভাই), তিন অতিথি এবং চারজন গৃহকর্মীকে।ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি আক্রান্ত হওয়ার আগেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার আত্মীয় ও মন্ত্রিসভার সদস্য আবদুর রব সেরনিয়াবাতের হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে যান।যে ঘরে বঙ্গবন্ধু ছিলেন, তার বাইরের বারান্দায় ঘুমিয়েছিল বাসার কর্মচারী মো. সেলিম (আব্দুল) ও আব্দুর রহমান শেখ (রমা)।

উপর থেকেই বঙ্গবন্ধু নিচতলায় তার ব্যক্তিগত সহকারী এ এফ এম মহিতুল ইসলামকে টেলিফোন করে বলেন, সেরনিয়াবাতের বাসায় দুষ্কৃতকারীরা আক্রমণ করেছে। জলদি পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ফোন করতে হবে।পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ফোন করে কোনো সাড়া না পেয়ে মহিতুল গণভবন (তৎকালীন রাষ্ট্রপতির কার্যালয়) এক্সচেঞ্জে চেষ্টা করতে থাকেন।

ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির রক্ষীরা বিউগল বাজিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন শুরু করা মাত্র বাড়ির দিকে দক্ষিণ দিক থেকে সরাসরি আক্রমণ শুরু হয়।

একটু পরেই বঙ্গবন্ধু তার ঘরের দরজা খুলে বারান্দায় বেরিয়ে আসেন। ঘুম থেকে ওঠেন গৃহকর্মী আব্দুল আর রমা। বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের কথায় রমা নিচে নেমে মূল ফটকের বাইরে গিয়ে দেখেন, সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য গুলি করতে করতে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির দিকে এগোচ্ছে।রমা বাড়ির ভেতরে ফিরে দেখেন, লুঙ্গি আর গেঞ্জি পরা অবস্থাতেই বঙ্গবন্ধু নিচতলায় নামছেন।

রমা দোতলায় শেখ জামাল ও তার স্ত্রীকেও ঘুম থেকে তোলেন। জামা-কাপড় পরে শেখ জামাল তার স্ত্রীকে নিয়ে দোতলায় ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের কক্ষে যান।ওদিকে গোলাগুলির মধ্যে অভ্যর্থনা কক্ষে বঙ্গবন্ধুর সামনেই বিভিন্ন জায়গায় ফোন করতে থাকেন মহিতুল।

পুলিশ কন্ট্রোল রুম ও গণভবন এক্সচেঞ্জে চেষ্টার এক পর্যায়ে রিসিভার নিয়ে বঙ্গবন্ধু নিজেই বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিব বলছি …”।
বঙ্গবন্ধু তার কথা শেষ করতে পারেননি।একঝাঁক গুলি জানালার কাচ ভেঙে অফিসের দেয়ালে লাগে। কাচের এক টুকরোয় মহিতুলের ডান হাতের কনুই জখম হয়। ওই জানালা দিয়ে গুলি আসতেই থাকে। বঙ্গবন্ধু টেবিলের পাশে শুয়ে পড়েন এবং মহিতুলের হাত ধরে কাছে টেনে শুইয়ে দেন।

এর মধ্যেই গৃহকর্মী আব্দুলকে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর কাছে তার পাঞ্জাবি ও চশমা পাঠিয়ে দেন ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। কিছুক্ষণ পর গুলি থেমে গেলে বঙ্গবন্ধু উঠে দাঁড়িয়ে আব্দুলের হাত থেকে পাঞ্জাবি আর চশমা নিয়ে পরেন। নিচতলার ওই ঘর থেকে বারান্দায় বের হয়ে বঙ্গবন্ধু পাহারায় থাকা সেনা ও পুলিশ সদস্যদের বলেন, “এতো গুলি হচ্ছে, তোমরা কী করছ?”এ কথা বলে বঙ্গবন্ধু দোতলায় চলে যান।

ঠিক তখনই মেজর নূর, মহিউদ্দিন আহমেদ (ল্যান্সার) এবং ক্যাপ্টেন বজলুল হুদা সৈন্যদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে ঢোকে। গেটের ভেতর ঢুকেই তারা ‘হ্যান্ডস আপ’ বলে চিৎকার করতে থাকে। মহিতুল ইসলামকে টেনে ঘরের মধ্যে নিয়ে যান নুরুল ইসলাম খান।

কোনো কথা না বলেই শেখ কামালের পায়ে গুলি করেন বজলুল হুদা। নিজেকে বাঁচাতে লাফ দিয়ে ঘরের মধ্যে গিয়ে পড়েন শেখ কামাল। মহিতুলকে বলতে থাকেন, “আমি শেখ মুজিবের ছেলে শেখ কামাল। আপনি ওদেরকে বলেন।”

মহিতুল ঘাতকদের বলেন, “উনি শেখ মুজিবের ছেলে শেখ কামাল।”এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে বজলুল হুদা তার হাতের অস্ত্র দিয়ে শেখ কামালের ওপর ব্রাশফায়ার করেন। সঙ্গে সঙ্গে মারা যান শেখ কামাল।

ভবনের নিচে কী হচ্ছে তার কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি দোতলায় তার ঘরের দরজা বন্ধ করে বিভিন্ন জায়গায় ফোন করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ফোনে তার সামরিক সচিব কর্নেল জামিলউদ্দিনকে পান।

তিনি তাকে বলেন, “জামিল, তুমি তাড়াতাড়ি আসো। আর্মির লোকরা আমার বাসা অ্যাটাক করেছে। সফিউল্লাহকে ফোর্স পাঠাতে বল।”

তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল সফিউল্লাহকেও ফোন করেন বঙ্গবন্ধু।তিনি তাকে বলেন, “সফিউল্লাহ তোমার ফোর্স আমার বাড়ি অ্যাটাক করেছে, কামালকে (শেখ কামাল) বোধ হয় মেরে ফেলেছে। তুমি জলদি ফোর্স পাঠাও।”

জবাবে সফিউল্লাহ বলেন, “আই অ্যাম ডুয়িং সামথিং। ক্যান ইউ গেট আউট অফ দ্য হাউজ?”

বঙ্গবন্ধুর ফোন পাওয়ার পর কর্নেল জামিল তার ব্যক্তিগত লাল রঙের গাড়িটি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হন। সঙ্গে ছিলেন গাড়িচালক আয়েনউদ্দিন মোল্লা। কিন্তু পথেই সোবহানবাগ মসজিদের কাছে তাকে গুলি করে হত্যা করে ঘাতকরা। পালিয়ে বেঁচে যান আয়েনউদ্দিন।

এদিকে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির গেইটের সামনে মহিতুল, নুরুল ইসলাম, আব্দুল মতিন, পুলিশের বিশেষ শাখার সদস্যসহ অন্য সদস্যদের সারি বেঁধে দাঁড় করানো হয়। ঘাতকদের একজন পুলিশের বিশেষ শাখার এক সদস্যকে গুলি করলে তিনি পড়ে যান।

এরপর ঘাতকরা গুলি করতে করতে ওপরে চলে যায়। তারা শেখ জামালের ঘরের বাথরুমে আশ্রয় নেওয়া গৃহকর্মী আব্দুলকে গুলি করে। হাতে ও পেটে গুলিবিদ্ধ অবস্থাতে তিনি সিঁড়ির পাশে গিয়ে হেলান দিয়ে বসে থাকেন।

বঙ্গবন্ধুর ঘরে তিনি ছাড়াও ছিলেন স্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, ছেলে শেখ জামাল ও শেখ রাসেল, শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল, শেখ জামালের স্ত্রী পারভীন জামাল রোজী।

ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর ঘরের বাইরে অবস্থান নেয়। গোলাগুলি থামলে বঙ্গবন্ধু দরজা খুলে বারান্দায় বেরিয়ে আসতেই ঘাতকরা তাকে ঘিরে ধরে।মেজর মহিউদ্দিন ও তার সঙ্গের সৈন্যরা বঙ্গবন্ধুকে নিচে নিয়ে যেতে থাকে। ঘাতকদের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু বলেন, “তোরা কী চাস? কোথায় নিয়ে যাবি আমাকে?”বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্বের কাছে মহিউদ্দিন ঘাবড়ে যান।

বঙ্গবন্ধু বলেন, “তোরা আমাকে কোথায় নিয়ে যাবি, কী করবি- বেয়াদবি করছিস কেন?” এ সময় নিচতলা ও দোতলায় সিঁড়ির মাঝামাঝিতে অবস্থান নেয় বজলুল হুদা ও নূর। বঙ্গবন্ধুকে নিচে নিয়ে আসার সময় নূর কিছু একটা বললে মহিউদ্দিন সরে দাঁড়ান।

সঙ্গে সঙ্গে বজলুল হুদা ও নূর তাদের স্টেনগান দিয়ে গুলি করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।বঙ্গবন্ধুর বুকে ও পেটে ১৮টি গুলি লাগে।নিথর দেহ পড়ে থাকে সিঁড়ির মধ্যে।সারা সিঁড়ি ভেসে যায় রক্তে।

শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে রমাই প্রথম জানান, বঙ্গবন্ধুকে গুলি করা হয়েছে।এ সময় ওই ঘরের বাথরুমে আশ্রয় নেন ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, সুলতানা কামাল, রোজী জামাল, শেখ নাসের ও রমা। ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে নিচে নেমে এসে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।

এর পরপরই মেজর আজিজ পাশা ও রিসালদার মোসলেউদ্দিন তাদের সৈন্যদলসহ বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে ঢোকেন। আজিজ পাশা তার সৈন্যদের নিয়ে দোতলায় চলে যান।

তারা বঙ্গবন্ধুর ঘরের দরজায় ধাক্কা দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে তারা দরজায় গুলি করেন। ফজিলাতুন্নেছা মুজিব তখন দরজা খুলে দেন এবং ঘরের মধ্যে যারা আছেন, তাদের হত্যা না করার অনুরোধ করেন।

কিন্তু ঘাতকরা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, শেখ রাসেল, শেখ নাসের ও রমাকে নিচে নিয়ে আসতে থাকে।

সিঁড়িতে বঙ্গবন্ধুর মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার স্ত্রী। চিৎকার করে বলেন, “আমি যাব না, আমাকে এখানেই মেরে ফেল।”

ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নিচে নামতে অস্বীকৃতি জানালে ঘাতকরা শেখ রাসেল, শেখ নাসের ও রমাকে নিচে নিয়ে যায়। আর ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে তার ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

বঙ্গবন্ধুর ঘরে আগে থেকেই ছিলেন শেখ জামাল, সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল। ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ সবাইকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে আজিজ পাশা ও রিসালদার মোসলেউদ্দিন।

ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নিথর দেহটি ঘরের দরজায় পড়ে থাকে। বাঁ দিকে পড়ে থাকে শেখ জামালের মৃতদেহ। রোজী জামালের মুখে গুলি লাগে। রক্তক্ষরণে বিবর্ণ হয়ে যায় সুলতানা কামালের মুখ।

শেখ নাসের, শেখ রাসেল আর রমাকে এরপর নিচে নিয়ে লাইনে দাঁড় করানো হয়। এ সময় শেখ নাসের ঘাতকদের উদ্দেশে বলেন, “আমি তো রাজনীতি করি না। কোনো রকম ব্যবসা-বাণিজ্য করে খাই।”

এরপর এক ঘাতক শেখ নাসেরকে বলে, “ঠিক আছে। আপনাকে কিছু বলব না। আপনি ওই ঘরে গিয়ে বসেন।” এই বলে তাকে অফিসের সঙ্গে লাগোয়া বাথরুমে নিয়ে গুলি করে।শেখ নাসের ‘পানি পানি’ বলে গোঙাতে থাকেন। তখন শেখ নাসেরের ওপর আরেক দফা গুলিবর্ষণ হয়।১১ বছরের শেখ রাসেল লাইনে দাঁড়িয়ে প্রথমে রমাকে এবং পরে মহিতুল ইসলামকে জড়িয়ে ধরে বলে, “ভাইয়া, আমাকে মারবে না তো?”

মহিতুল জবাব দেন, “না ভাইয়া, তোমাকে মারবে না।”এ সময় শেখ রাসেল তার মায়ের কাছে যেতে চাইলে আজিজ পাশা তাকে জোর করে মহিতুলের কাছ থেকে নিয়ে দোতলায় নিয়ে যেতে বলেন।

আজিজ পাশার কথামত এক হাবিলদার শেখ রাসেলকে দোতলায় নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করে। রাসেলের চোখ বেরিয়ে যায়। মাথার পেছনের অংশ থেঁতলে যায়। দেহটি পড়ে থাকে সুলতানা কামালের পাশে।

 

আরও পড়ুন১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড: ‌বিশ্ব নেতা‌দের প্রতি‌ক্রিয়া

তথ্যসূত্র: বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় এ এফ এম মহিতুল ইসলাম, আব্দুর রহমান শেখ (রমা), মো. সেলিম (আব্দুল), অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার মো. কুদ্দুস শিকদার, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল হামিদ, সাবেক সেনাপ্রধান সফিউল্লাহ, আয়েনউদ্দিন মোল্লা (সোবহানবাগে নিহত বঙ্গবন্ধুর সামরিক সচিব কর্নেল জামিলউদ্দিনের গাড়িচালক) এর সাক্ষ্য ।

Loading


শিরোনাম বিএনএ