বিএনএ বরিশাল: অব্যবস্থাপনায় রুগ্ন হয়ে পড়েছে শেবাচিমের হৃদরোগ বিভাগটি। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ এটি। তবে গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগটি নিজেই যেন রুগ্ন দশায় ভুগছে। বিভাগটিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ১৮টি এয়ারকন্ডিশনের(এসি) মধ্যে ১৬টিই বিকল হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। কয়েকটি বৈদ্যুতিক ফ্যান চললেও তা কাজে আসছে না রোগীকে শীতল রাখতে। ফলে হাতপাখা ব্যবহার করতে হচ্ছে স্বজনদের।
তবে এ বিষয়ে দায় এড়িয়ে গণপূর্ত বিভাগকে দুষছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আর গণপূর্ত বিভাগের দাবি এসি বিকল হওয়ার কোন খবরই নেই তাদের কাছে।
সিসিআই’র দায়িত্বপ্রাপ্তরা জানিয়েছেন, ‘বিভাগটিতে থাকা ৪টি ছোট এসির সবগুলোই বিকল। বড় ৪টির মধ্যে অচল দুটি। পাশেই থাকা পোস্ট সিসিইউ’র ছোট-বড় মিলিয়ে ১০টি এসির সবগুলোই অচল হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সিসিইউ বিভাগের শয্যা এবং মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। ওপরে কয়েকটি বৈদ্যুতিক ফ্যান চলছে। তাতে কাজ না হওয়ায় হাতপাখা দিয়ে রোগীদের বাতাস দিচ্ছেন স্বজনরা। অনেকে নিজ খরচে ফ্যান কিনে রোগীকে প্রশান্তি দেয়ার চেষ্টা করছে। তবে বিভাগটির সবখানে বিদ্যুতের সংযোগ ব্যবস্থা না থাকায় চাইলেও ফ্যান চালাতে পারছেনা অনেকে। তাই এসব রোগীদের জন্য হাতপাখাই ভরসা।
বিভাগটির মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করা হৃদরোগ আক্রান্ত জামাল হোসেন বলেন, ‘এসি বন্ধ। মাথার ওপর ফ্যান ঘুরলেও বাতাস নিচ পর্যন্ত পৌঁছে না। শারীরিক অসুস্থতার মধ্যে গরমে কি যে অস্বস্থিতে আছি বলে বোঝাতে পারব না।
একই কথা বলেন, ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার বাসিন্দা হৃদরোগী সুদেব চন্দ্র দাসের স্ত্রী কুসুম রানী। তিনি বলেন, ‘সিসিইউতে হৃদরোগীদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ করা হয়। এই বিভাগটি সবসময় শীততাপ নিয়ন্ত্রিত থাকবে। অথচ গত দুদিন ধরে দেখছি এসি লাগানো থাকলেও তা থেকে বাতাস বের হচ্ছে না। পরে জানতে পারি একটি এসিও চলে না। মাথার ওপর ফ্যান ঘুরছে কিনা তা বোঝার সাধ্য নেই। তাই বাধ্য হয়ে পাখা দিয়েই রোগীকে বাতাস করতে হচ্ছে। এখানে একজনকে চিকিৎসা করাতে এসে আমরাও এখন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।
ওয়ার্ডটির দায়িত্বরত সেবিকারা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘এসি বিকল হওয়ার বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে একাধিকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু এগুলো মেরামতের কোন উদ্যোগ দেখছি না। এতে রোগীদের সাথে সাথে আমরাও অসহ্য গরমে ভুগছি।
এ প্রসঙ্গে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এসি মেরামতের জন্য গণপূর্ত বিভাগকে চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত এসিগুলো মেরামত করেনি।
তবে বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কাজী আবু জিহাদ বলেন, ‘হাসপাতালের এসি মেরামত প্রয়োজন হলে অবশ্যই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেটা আমাদের অবগত করবে। কিন্তু অফিশিয়াল ভাবে আমাদের এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। তার পরেও বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।
বিএনএ/ সাইয়েদ কাজল, ওজি/ হাসনাহেনা