বিএনএ,চট্টগ্রাম: প্রবর্তক সংঘ ও ইসকনের দ্বন্দ্ব এবার নতুন মোড় নিয়েছে। প্রবর্তক সংঘের দুই শীর্ষ নেতা অধ্যাপক রণজিৎ দে ও তিনকড়ি চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মানহানির মামলা করেছে ইসকন। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ৪ থেকে ৫ জনকেও আসামি করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) মামলার বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক(তদন্ত) মো. কবিরুল ইসলাম । এরআগে বুধবার (১৪ জুলাই) রাতে মামলাটি দায়ের করেন ইসকনের সেবাদাস জুয়েল শীল।
পাচঁলাইশ থানার পরিদর্শক(তদন্ত) মো. কবিরুল ইসলাম বলেন, ইসকনকে জঙ্গি বলে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানার অভিযোগ এনে প্রবর্তক সংঘের সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা দায়ের করে ইসকন । এই বিষয়ে তদন্তের মাধ্যমে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ইসকনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শুভাশীষ শর্মা জানান, ১৯৬৬ সালে ইসকন প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকে অদ্যাবধি সারা বিশ্বের প্রায় ১১২টিরও অধিক দেশে প্রায় ৭৫০ টি বড় ইসকন মন্দির ছাড়াও শুধুমাত্র বাংলাদেশে প্রায় ১১০টি ইসকন মন্দির রয়েছে। ধর্ম প্রচারের পাশাপাশি ইসকন ফুড ফর লাইফ, অনাথ ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যবস্থা, ধর্মীয় শাস্ত্রের জ্ঞান প্রচার সহ বিভিন্ন মানবিক ও ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কিন্তু গত ২৬ জুন প্রবর্তক সংঘের সাধারণ সম্পাদক তিনকড়ি চক্রবর্তীসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা “ইসকন একটি জঙ্গি সংগঠন এবং তাহারা সাধুবেশে জঙ্গি তৎপরতা চালায়” উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলন করে। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার হয়।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ধর্ম প্রচারের সংগঠন ইসকনকে জঙ্গি সংগঠন আখ্যায়িত করা সহ বিভিন্ন মানহানিকর শব্দ চয়ন ও লিখিতভাবে প্রচার করে সংগঠনের ভাবমূর্তি চরমভাবে বিনষ্ট হয়েছে। যা বিভিন্ন মিডিয়ায় বহুল প্রচার ও শেয়ারের মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার কারণে বিশ্বের লাখো কোটি ভক্ত অনুরাগীর হৃদয়ে ও ধর্মীয় অনুভূতিতে মারাত্মক আঘাত হেনেছে।
এ বিষয়ে প্রবর্তক সংঘের সাধারণ সম্পাদক তিনকড়ি চক্রবর্তী বলেন, আমরা সংবাদ সম্মেলনে বলেছি যে, রাতের অন্ধকারে তারা আমাদের জায়গা দখল করে। এসময় তারা প্রবর্তক সংঘের ১০ থেকে ১২ জন স্টাফকে আহত হয়। এর আগে গত ১৫ মার্চ তারা সব জায়গা দখল করার হুমকি দেয়। এই প্রেক্ষিতে আমরা তাদেরকে ”জঙ্গি” বলেছি এতে কোন ভুল কথা বলা হয়নি ?
মামলার ব্যাপারে প্রবর্তক সংঘের সদস্য অ্যাডভোকেট স্বভূপ্রসাদ বিশ্বাস বলেন, মামলায় যে অভিযোগ করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। আমরা আইনগতভাবে এর মোকাবেলা করবো।
এর আগে বেআইনিভাবে প্রবর্তক সংঘের ভূমি আত্মসাৎ, মন্দিরের দানের অর্থ লোপাটসহ বিভিন্ন ‘অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে ইসকনের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় প্রবর্তক সংঘ। গত ২৬ জুন সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হল মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান প্রবর্তক সংঘের সাধারণ সম্পাদক তিনকড়ি চক্রবর্তী।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, উভয়পক্ষের মৌখিক আবেদনে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত ঢাকায় গত ২ এপ্রিল সমঝোতার চেষ্টায় ত্রি-পক্ষীয় বৈঠক আহ্বান করেন। কিন্তু বৈঠকে ইসকন কর্তৃপক্ষ উপস্থিত হয়নি।
বিএনএনিউজ/মনির