বিএনএ ডেস্ক: দুই সপ্তাহ পরই কোরবানির ঈদ। যাত্রীবাহী গাড়ির পাশাপাশি কোরবানির পশুবাহী গাড়িও চলবে মহাসড়কে। একদিকে যেমন ঢাকা থেকে যাত্রীবাহী গাড়ি বের হবে, অন্যদিকে কোরবানির পশুবাহী ট্রাক ঢাকায় প্রবেশ করবে। এতে সড়কের উভয় অংশেই যানবাহনের সমান চাপ থাকবে। ফলে সড়কে যানজট হওয়ার আশঙ্কা আছে।
সড়কের চাপ সামলাতে এবং যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন সংশ্লিষ্টরা। মহাসড়কের যেসব জায়গায় যানজট হতে পারে, সেই জায়গায় যান চলাচল স্বাভাভিক রাখার বিকল্প পথ তৈরি করা হয়েছে গত ঈদের মতো। গত ঈদে যানজট প্রবণ স্পট ছিল ৪৬টি। এবার তা বেড়ে হয়েছে ৭৬টি। অর্থাৎ যানজট স্পট বেড়েছে ৩০টি।
প্রতি ঈদেই যানজটে বেশি নাকাল হতে হয় উত্তরবঙ্গে ঢোকার প্রবেশদ্বার টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়কে। এই সড়কে যানজট হওয়ার কারণ হিসেবে জানা গেছে, চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত চার লেন আছে। কিন্তু এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার সার্ভিস লেনসহ ছয় লেনের সড়ক নির্মাণকাজ চলছে। এর ফলে ফোর লেনের গাড়িগুলো যখন টাঙ্গাইল থেকে এলেঙ্গায় ঢোকে, তখনই যানজট তৈরি হয়। তবে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে গাড়িগুলো যেন উত্তরবঙ্গে যানজট ছাড়া যেতে পারে এবং ঢাকামুখী পশুবাহী ট্রাক নির্বিঘ্নে আসতে পারে তার তার ব্যবস্থা করেছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা।
এই সড়কের সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে সাসেক সড়ক সংযোগ-২-এর প্রকল্প পরিচালক ড. মো. ওয়ালিউর রহমান বলেন, ‘রাস্তা পুরোপুরি রেডি আছে। আমাদের প্রকল্প এলাকায় বোটলনেক তৈরি হওয়ার মতো এমন কোনো জায়গা নেই। যেখানে দুই লেন আছে, সেই রাস্তাগুলো বড় করে দেয়া হয়েছে। বাইপাস সড়ক করে দেয়া হয়েছে।
ঈদে যানজট প্রবণ স্পট বেড়েছে
গত রোজার ঈদে ঢাকা থেকে ঘরমুখী যাত্রীদের ৪৬টি স্পটে যানজটে পড়ার আশঙ্কা করা হয়েছিল। এগুলোর মধ্যে ২০টি ঢাকার ভেতর এবং প্রবেশ বা বের হওয়ার পথ। বিআরটিএর এক পর্যবেক্ষণে এসব ৪৬টি স্পটের তথ্য উঠে এসেছিল। এসব স্পটের সংখ্যা এবার আরও ৩০টা বাড়তে পারে।
ঈদযাত্রার প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, ‘আমাদের রুটিন কাজ যেগুলো হয় সেগুলো চলবে। বাস টার্মিনালগুলোতে মনিটরিং টিম মাঠে থাকবে। যানজটের আশঙ্কা যেখানে আছে এমন জায়গায় আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটরা দুই শিফটে কাজ করবেন। রাস্তাঘাটে পশুর হাট না বসানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যানজট হতে পারে এমন স্পট গত ঈদে ৪৬টা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এবার আরও কিছু স্পট বেড়েছে। যেগুলো জেলা পর্যায়ে আছে। বেশির ভাগ চট্টগ্রাম অঞ্চলে। ৪৬টি স্পটের সঙ্গে আরও ৩০টা স্পট বাড়তে পারে। এসব জায়গায় পুলিশের এবং আমাদের লোকজন থাকবে যানজট যেন না হয়।’
এলেঙ্গা-রংপুর মহাসড়কের ৬৪ শতাংশ কাজ শেষ
১৯০ দশমিক ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়কটি সাউথ এশিয়ান সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) করিডর সড়ক প্রকল্পের প্রায় ৬৪ শতাংশ কাজ শেষ। তবে কিছু প্যাকেজের ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ। ১৯০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে চার লেন সড়কের কাজ অনেক অংশে শেষ হয়ে গেছে। যাতে মানুষ সুবিধা পাচ্ছে। প্রতিটি বাজার এলাকায় ফোর লেন হয়ে গেছে। টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত ১৯০ দশমিক ৪০ কিলোমিটারের এই প্রকল্প ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে একনেকে অনুমোদন পায়।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘ঈদুল ফিতরের ঈদটা যেমনটা স্বস্তিদায়ক হয়েছে, কোরবানির ঈদ তেমনটা হবে বলে আমরা মনে করছি না। কারণ এবার ঈদের ছুটি কম। তা ছাড়া ঈদের সময় অনেকগুলো রাস্তা একমুখী করা যায় গাড়ি চালানোর জন্য, কিন্তু কোরবানির ঈদে যেহেতু পশুবাহী গাড়ি আসবে, তাই রাস্তা একমুখী করার সুযোগ নেই।’
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ