বিএনএ, ঢাকা : করোনায় চলমান লকডাউনের মধ্যে ৪২ কার্যদিবসে সারাদেশে ৬৫ হাজার ৮৯৯ জন কারাবন্দি আসামিকে জামিনে মুক্তি দিয়েছেন নিম্ন আদালত। ১ লাখ ২৯ হাজার ২৯৩ টি জামিনের দরখাস্ত ভার্চুয়াল শুনানি নিয়ে এসব জামিনে মুক্তি আদেশ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (১৫ জুন) সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ও মুখপাত্র মুহাম্মদ সাইফুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, গত ১২ এপ্রিল থেকে করোনা সংক্রমণ রোধকল্পে পুনরায় দ্বিতীয় দফায় সারাদেশে অধঃস্তন আদালত এবং ট্রাইব্যুনালে শারীরিক উপস্থিতি ব্যতিরেকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে জামিন ও অতি জরুরি ফৌজদারি দরখাস্ত শুনানি হচ্ছে। গত ১২ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত মোট ৪২ কার্যদিবসে সারাদেশে অধঃস্তন আদালত এবং ট্রাইব্যুনালে এক লাখ ২৯ হাজার ২৯৩ টি জামিনের দরখাস্ত ভার্চুয়াল শুনানির মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়। এ সময়ে মোট ৬৫ হাজার ৮৯৯ জন হাজতি অভিযুক্ত ব্যক্তি জামিন পেয়ে কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন। একই সময়ে জামিন পেয়েছে ১0৬৯ শিশু।
আর ১৪ জুন সারা দেশে অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালে ২৯৪৮টি ফৌজদারী মামলার ভার্চুয়াল শুনানিতে জামিন-দরখাস্ত নিষ্পত্তি হয়এবং ১৩২৩ জন হাজতী অভিযুক্ত ব্যক্তি জামিন প্রাপ্ত হয়ে কারামুক্ত হয়েছেন।
ভার্চুয়াল শুনানি নিয়ে গত ১২ এপ্রিল এক হাজার ৬০৪ জন, ১৩ এপ্রিল তিন হাজার ২৫৯, ১৫ এপ্রিল দুই হাজার ৩৬০ জন, ১৮ এপ্রিল এক হাজার ৮৪২, ১৯ এপ্রিল এক হাজার ৬৩৫, ২০ এপ্রিল এক হাজার ৫৭৬, ২১ এপ্রিল এক হাজার ৩৪৯, ২২ এপ্রিল এক হাজার ৫৯২ জন, ২৫ এপ্রিল ১ হাজার ৮৩৯ জন, ২৬ এপ্রিল ১ হাজার ৫৯৩ জন, ২৭ এপ্রিল ১৩৯৫ জন, ২৮ এপ্রিল ১৪২২, ২৯ এপ্রিল ১৪১২ জন, ২ মে ১৭২১ জন, ৩ মে ১৭১৪ জন, ৪ মে ১৫৩৬ জন, ৫ মে ১৪৪৭ জন, ৬ মে ১৯১৭ জন, ৯ মে ২৬৪২ জন, ১১ মে ৩১৫০ জন, ১২ মে ২৪১৮ জন, ১৬ মে ৫৮৬ জন, ১৭ মে ৮৪৭ জন, ১৮৯৯৮ জন, ১৯ মে ৯৭৮ জন, ২০ মে ১২৫৩ জন, ২৩ মে ১৭২২ জন, ২৪ মে ১৩৯৯ জন, ২৫ মে ১২৯৭ জন, ২৭ মে ১৪০৭ জন, ৩০ মে ১৬৭৯ জন, ৩১ মে ১৩০০ জন, ১ জুন ১০৬৮ জন, ২ জুন ১১১৭ জন, ৩ জুন ১৩০২ জন, ৬ জুন ১৫৪৬ জন, ৭ জুন ১৩৩৭ জন এবং ৮ জুন ১২৩৫ জন, ৯ জুন ১১৪১ জন, ১০ ১৪৪৪ জন, ১৩ জুন ১৫০১ কারাবন্দি আসামিকে জামিন দেন নিম্ন আদালত।
লকডাউনের মধ্যে আদালতের কার্যক্রম চালাতে প্রধান বিচারপতির আদেশক্রমে ১১ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মো: গোলাম রব্বানী। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাদুর্ভূত মহামারীর কোভিড-১৯ ব্যাপক বিস্তার রোধে আগামী ১২ এপ্রিল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে জামিন ও অতীব জরুরি ফৌজদারি দরখাস্তগুলো নিষ্পত্তি করার উদ্দেশ্যে আদালত ও ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
প্রত্যেক জেলার জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর এলাকার মহানগর দায়রা জজ, নারীও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, শিশু আদালতের বিচারক এবং চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিজে অথবা তার নিয়ন্ত্রণাধীন এক বা একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা- আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০ এবং হাইকোর্ট কর্তৃক জারীকৃত এতদসংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ পূর্বক শুধু জামিন ও অতীব জরুরি ফৌজদারী দরখাস্তসমূহ নিষ্পত্তি করার উদ্দেশে ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
এর আগে ভার্চুয়াল আদালত শুরু হওয়ার পর প্রথম দফায় ২০২০ সালের ১১ মে থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত মোট ৫৮ কার্যদিবসে সারাদেশে অধস্তন আদালত এবং ট্রাইব্যুনালে ভার্চুয়াল শুনানিতে মোট এক লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৯ টি ফৌজদারি মামলায় জামিন-দরখাস্ত নিষ্পত্তি হয় এবং ৭২ হাজার ২২৯ জন অভিযুক্ত ব্যক্তির (শিশুসহ) জামিন মঞ্জুর করা হয়।
বিএনএনিউজ/ আজিজুল/এইচ.এম।