বিএনএ ডেস্ক : জো বাইডেন মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট। ডোনাল্ড ট্রাম্প সাবেক প্রেসিডেন্ট। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শক্তিশালী দুই প্রতিদ্বন্দ্বী তাঁরা। যদিও নির্বাচনী লড়াই পেরিয়ে শেষে হাসি হাসবেন একজনই। কিন্তু কে হাসবেন সে হাসি? শুধু মার্কিন নয়, বিশ্বরাজনীতির জন্যও এটা গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন। উত্তর পেতে মুখিয়ে আছে বিশ্ববাসী।
কে হচ্ছেন হোয়াইট হাউসের পরবর্তী বাসিন্দা? প্রশ্নটির উত্তর পেতে নির্বাচনের ফল অবধি অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু আগে থেকে অনুমান করা যেতেই পারে। সেটাই করেছেন অ্যালান লিচম্যান। তিনি মার্কিন নির্বাচন নিয়ে আগেও ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছেন।
ফক্স নিউজ এক প্রতিবেদনে বলেছে, অবাক করা বিষয় হলো, ১৯৮৪ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছে, প্রতিবারই অ্যালান লিচম্যানের দেওয়া পূর্বাভাস মিলে গেছে। অ্যালান যাঁর পক্ষে মত দিয়েছেন, তিনিই নির্বাচনে জিতে প্রেসিডেন্ট হয়েছেন।
২০১৬ সালের নির্বাচনে জিতে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর আগে অ্যালানের পূর্বাভাস ছিল যে শেষ হাসি ট্রাম্পই হাসবেন। পরে ২০২০ সালে অ্যালান বলেছিলেন, ট্রাম্প বিদায় নেবেন। হোয়াইট হাউসের বাসিন্দা হতে যাচ্ছেন জো বাইডেন। শেষ পর্যন্ত তা-ই হয়েছে।
এবার কে, ট্রাম্প নাকি বাইডেন? অ্যালান বলছেন, এখন পর্যন্ত বাইডেনের জয়ের পাল্লা কিছুটা ভারী। কিন্তু কীভাবে এত নিখুঁত পূর্বাভাস দেন অ্যালান, কীভাবে চার দশক ধরে অ্যালানের দেওয়া পূর্বাভাস হুবহু মিলে যাচ্ছে, সেটা নিয়ে আগ্রহ অনেকের।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কে জিতবেন, তা নিয়ে অ্যালানের একটি ফর্মুলা বা সূত্র রয়েছে। তিনি নিজেই ‘কিজ টু দ্য হোয়াইট হাউস’ নামে একটি ফর্মুলার উদ্ভাবন ও উন্নয়ন করেছেন। ১৩টি সত্য/মিথ্যা প্রশ্নের উত্তরে পাওয়া যায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। সেসব উত্তর বিশ্লেষণ করে অ্যালান নির্ভুলভাবে বলে দিতে পারেন, কে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিততে চলেছেন।
চূড়ান্ত লড়াইয়ে এগিয়ে থাকা দুই প্রার্থীকে নিয়ে এই ১৩টি প্রশ্ন। যদি প্রশ্নের উত্তর ‘সত্য’ হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী একটি ‘কি’ বা পয়েন্ট পান। আর উত্তর ‘মিথ্যা’ হলে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পান এক পয়েন্ট।
অ্যালানের ফর্মুলা অনুযায়ী, ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে এখন পর্যন্ত বাইডেন ৫ পয়েন্ট পেয়েছেন। আর ট্রাম্প অল্প ব্যবধানে পিছিয়ে আছেন। তিনি পেয়েছেন ৩ পয়েন্ট। আরও ৫টি প্রশ্নের উত্তর বা ৫ পয়েন্ট এখনো অমীমাংসিত।
মার্কেট ওয়াচকে অ্যালান বলেন, এবারের নির্বাচনে বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে। যেহেতু আরও ৫ পয়েন্ট এখনো বাকি, তাই আগামী নভেম্বরে নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের সামনে বড় সুযোগ অপেক্ষা করছে।
ফর্মুলার ১৩টি প্রশ্ন যেসব বিষয়ে সেগুলো হলো—দলীয় মনোনয়ন বা ম্যান্ডেট, কনটেস্ট বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা, ক্ষমতাসীন প্রার্থী কি না, তৃতীয় পক্ষের ভূমিকা, স্বল্প মেয়াদে অর্থনৈতিক বিষয়াবলি, দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিক বিষয়াবলি, নীতি পরিবর্তন, সামাজিক অস্থিরতা, কেলেঙ্কারি, পররাষ্ট্র/সামরিক ব্যর্থতা, পররাষ্ট্র/সামরিক সাফল্য, এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ক্যারিশমা।
ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেন এমনিতেই তিন নম্বর প্রশ্নে এক পয়েন্ট পেয়েছেন। আগের দুই প্রেসিডেন্টের তুলনায় বাইডেনের মেয়াদে মাথাপিছু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ভালো থাকায় তিনি এ–সংক্রান্ত পয়েন্ট পেয়েছেন। নিজের শাসনামলে নীতির পরিবর্তনের পয়েন্টও বাইডেন পেয়েছেন বলে জানান অ্যালান।
অন্যদিকে ট্রাম্প প্রথম প্রশ্নে এক পয়েন্ট পেয়েছেন। ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টি এখন মার্কিন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। ক্যারিশম্যাটিক নেতা হিসেবে ট্রাম্পের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছেন বাইডেন। এখানেও এক পয়েন্ট পেয়েছেন ট্রাম্প।
এ ছাড়া বাইডেন তাঁর শাসনামলে পররাষ্ট্র কিংবা সামরিক খাতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখাতে পারেননি। তাই এই প্রশ্নের এক পয়েন্ট ট্রাম্পের ঝুলিতে গেছে। এখন দেখার বিষয় হলো, অতীতের মতো আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও অ্যালানের দেওয়া ভবিষ্যদ্বাণী পুরোপুরি মিলে যায় কি না।
বিএনএ/ শাম্মী, ওজি