বিএনএ,নোয়াখালী:বাংলাদেশে আশ্রিত মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের চতুর্থ দলটিকে কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে।সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম থেকে জাহাজে করে ২ হাজার ১১ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে রোববার তাদের উখিয়া আশ্রয় শিবির থেকে চট্টগ্রামে নেয়া হয়। রাতে রাখা হয় বিএএফ শাহীন কলেজের অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে।এরপর সোমবার চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর বোটক্লাব জেটি থেকে পাঁচটি জাহাজে করে ভাসানচরে নেয়া হয় প্রায় ৫’শ পরিবারের ২ হাজার ১১ জন রোহিঙ্গাকে। স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে নাম তালিকাভুক্ত করে তারা।
ভাসানচরে যেতে স্বেচ্ছায় নাম লিখিয়েছে আরও দেড় হাজারের মত রোহিঙ্গা। মঙ্গলবার(১৬ ফেব্রুয়ারি) তাদেরকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
কক্সবাজারের আর্থ-সামাজিক কাঠামো এবং পরিবেশের ওপর চাপ কমাতে গেল বছরের ৪ ডিসেম্বর ভাসানচরে অস্থায়ীভাবে রোহিঙ্গা স্থানান্তর শুরু হয়। তিন ধাপে, এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে সাত হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেয়া হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায়, সোমবার সকালে শুরু হয় রোহিঙ্গাদের চতুর্থ ধাপের স্থানান্তর।
এর আগে, ভাসানচরে যাওয়া রোহিঙ্গারা সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে থাকা আত্মীয়-স্বজনদের সেখানে আসার আহ্বান জানানোর পরিপ্রেক্ষিতেই এই স্থানান্তর।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ জন, ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় ১ হাজার ৮০৪ জন, ২৯ জানুয়ারি তৃতীয় দফার (প্রথম অংশে) ১ হাজার ৭৭৮ জন, ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় দফার (দ্বিতীয় অংশে) ১ হাজার ৪৬৪ জনসহ এ পর্যন্ত ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পে স্থানান্তর করা হয়েছে।এর আগে ২০২০ সালের মে মাসে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা ৩০৬ রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুকে কক্সবাজার ও টেকনাফ থেকে উদ্ধার করার পর ভাসানচর নিয়ে যায় সরকার।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে মায়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। শিবিরগুলোয় চাপ কমাতে দুই বছর আগে অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা গ্রহণ করে সরকার।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।
বিএনএনিউজ/আরকেসি