বিএনএ, নোবিপ্রবি: শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দ, লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত বই সংযুক্ত করাসহ অফিসের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এসময় তাদের দাবি সম্বলিত-পোষ্টার বহন ও বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা।
সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহঃ ১. ক্লাসরুম বরাদ্দ দিতে হবে। ২. লাইব্রেরিতে বই সংযুক্ত করতে হবে। ৩. অফিসের সুযোগ-সুবিধাদি বাড়াতে হবে
রোববার (১৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। এ পরিস্থিতিতে বিভাগটির পূর্ব নির্ধারিত ক্লাস টেষ্ট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
পরবর্তীতে দুপুর ১টার দিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নোবিপ্রবি সমাজকর্ম বিভাগের ক্লাস সংকট নিরসনের আশ্বাস দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই ১৫ দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত করেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তবে আগামি ১৫দিনের মধ্যে তাদের দাবিগুলো আদায় না করা হলে পুনঃরায় আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, সমাজকর্ম বিভাগের শ্রেণিকক্ষের সংকট দীর্ঘদিনের। বিষয়টি নিয়ে বিভাগের শিক্ষকদের কাছে দফায় দফায় ধরনা দিয়েও কোন লাভ হয়নি। আবার বিভাগের শিক্ষকেরাও সংকট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বারবার আলোচনা করেও কোন ফল পাননি। এ কারণে বিভাগের শিক্ষার্থীরা রোববার সকাল থেকে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে শহীদ মিনার চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন তারা, যা চলে দুপুর পর্যন্ত।
সমাজকর্ম বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, বিভাগটিতে তিনটি ব্যাচে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৫০ জন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম ভবনের পঞ্চম তলার একটি কক্ষকে শ্রেণিকক্ষ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে দীর্ঘদিন। এই একটি মাত্র কক্ষে তিনটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ক্ষেত্রে নানারকম সমস্যা দেখা দেয়। ফলে ঠিক মত পাঠদান করা যায় না। একই সঙ্গে পরীক্ষাগুলো যথাসময়ে দেওয়া সম্ভব হয়না। এক কথায়, ক্লাশ নিয়মিত রাখতে গেলে পরীক্ষা নেওয়া হয় না, আবার পরীক্ষা থাকলে ক্লাস করানো সম্ভব হয় না। এর মধ্যে নতুন আরও একটি ব্যাচের ভর্তি প্রক্রিয়া বর্তমানে চলমান রয়েছে। নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হলে সংকট আরও তীব্র হয়ে উঠবে।
শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করে বলেন, শুধু শ্রেণিকক্ষের সংকট নয়, শিক্ষকের সংকটও চরম। তিনটি ব্যাচের জন্য অন্তত আটজন শিক্ষক থাকার দরকার। সেখানে শিক্ষক আছেন মাত্র চারজন। শিক্ষক সংখ্যা কম হওয়ায় দায়িত্বে থাকা শিক্ষকগণ তিনটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পরীক্ষা সময়মত নিতে পারছেন না। লাইব্রেরিতে নেই পর্যাপ্ত পরিমাণ বই।
জানতে চাইলে সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান চয়ন শিকদার বলেন, বিভাগে শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষকের তীব্র সংকট রয়েছে। একটিমাত্র শ্রেণিকক্ষ দিয়ে তিনটি ব্যাচের পাঠদান করানো খুবই কষ্টকর। চারজন শিক্ষক দিয়ে বর্তমানে তিনটি ব্যাচের পাঠদান ঠিকমত নেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। তারপর নতুন শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তিও চলমান রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়টি স্বীকার করেন প্রক্টর ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদেরকে আশ্বস্ত করা হলে তারা আন্দোলন থেকে সরে এসেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের নতুন শ্রেণিকক্ষ দেওয়া হবে। এছাড়া শিক্ষক নিয়োগের নতুন সার্কুলারও দেওয়া হয়েছে। সবমিলেয়ে চলতি মাসের মধ্যে শিক্ষক সংকটের নিরসন হবে বলেও জানান তিনি।
বিএনএ/শাফি, এমএফ