বিএনএ, ববি: যথাযোগ্য মর্যাদায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) পালিত হয়েছে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। জাতির এ সূর্যসন্তানদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় শোক র্যালি।
র্যালি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় দফা বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রু.দা.) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া।
এরপর পর্যায়ক্রমে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, অফিসার্স এসোসিয়েশন, গ্রেড ১১-১৬ ও গ্রেড ১৭-২০ কল্যাণ পরিষদ, বঙ্গবন্ধু হল, শেরে বাংলা হল, শেখ হাসিনা হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, বিভিন্ন বিভাগ, ববিতে কর্মরত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের সংগঠন উত্তরাধিকারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণে অংশ নেয়।
এর পূর্বে সকাল ৮ টায় বরিশাল শহরের ত্রিশ গোডাউনস্থ বধ্যভূমিতে ফুল দিয়ে বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উপাচার্য। এদিকে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরতে সকাল সাড়ে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি আয়োজিত এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টে’র সভাপতি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী।
এসময় তিনি বলেন, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিলো কারণ তাঁরা বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পূর্বেই স্বাধীন বাংলাদেশে বিশ্বাস করতেন, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে বিশ্বাস করতেন। মুক্তিযুদ্ধের পরে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ বিনির্মানে তাঁরা হতেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোদ্ধা। বুদ্ধিজীবীদের হত্যা ছিলো একটি হিংস্র হীন রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। যার লক্ষ্য ছিলো অত্যন্ত সুদূর প্রসারী।
তিনি আরও বলেন, এদেশকে ভবিষ্যতে যারা সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে সেসকল তরুণদের মাঝে বাঙালীর চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস পৌঁছে দিতে হবে। আর তাহলেই বুদ্ধিজীবীদের এ আত্মত্যাগ স্বার্থক হবে।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রু.দা.) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, একজন বাঙালি হিসেবে আমাদের নিজেদের ইতিহাস জানতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে আমাদের ইতিহাস বহুবার মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে, এখনও হচ্ছে। আমাদের সকলের দায়িত্ব হচ্ছে আগামীর প্রজন্মের কাছে বাঙালীর হাজার বছরের ইতিহাসকে সঠিকভাবে পৌঁছে দেয়া, যাতে তারা কখনো বিভ্রান্ত না হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর শাহানা পারভীন। শিক্ষক সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন দিলআফরোজ খানম, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দীন, শেরে বাংলা হলের প্রভোস্ট আবু জাফর মিয়া, প্রক্টর ড. খোরশেদ আলম, রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম এবং অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. তানজীন হোসেন।
বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। সভাটি সঞ্চালনা করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. তাজিজুর রহমান।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের আয়োজনে দুপুর ১ টায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় কুইজ প্রতিযোগিতা। এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া এবং মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনারও আয়োজন করা হয়।
বিএনএনিউজ/ রবিউল/ বিএম