বিএনএ, কুবি : মোমবাতি প্রজ্বলন ও আলোচনা সভার মাধ্যমে ‘বরিশাল মুক্ত দিবস’ পালন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আঞ্চলিক সংগঠন বরিশাল বিভাগীয় স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) রাত ৮ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সকল শহীদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালনের মাধ্যমে এ আয়োজন শুরু হয়।
নীরবতা পালন শেষে অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আব্দুল মঈন বরিশাল মুক্ত দিবসের স্মৃতিচারণ করেন। তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের সময় আমরা বাড়ি ছেড়ে নানার বাড়িতে উঠেছিলাম। জুন মাসের পর যখন বাড়ি ফিরি তখন নদীতে শুধু লাশ দেখেছি। বরিশাল মুক্ত যেদিন হয় সেদিন সারা শহরে কারফিউ ছিল, আল বদর রাজাকার, পাকিস্তানি আর্মি পালাচ্ছিল; সন্ধ্যার আগেই আমরা শুনতে পাই জয় বাংলা স্লোগান। সাধারণ মানুষ স্লোগান দিতে দিতে রাস্তায় নেমে এসেছিল। হানাদার মুক্ত হওয়ার পরের দিন, অনেক রাজাকার মুক্তিযোদ্ধার বেশ ধরে জয় বাংলা স্লোগান দিয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকের রাজনৈতিক দর্শন ভিন্ন থাকতে পারে, কিন্তু দেশের স্বাধীনতার ব্যাপারে সবারই এক থাকা উচিত। এক সময় বাংলাদেশকে পাকিস্তানের অংশ বা ভারতের অংশ হিসেবে বিশ্ববাসী চিনতো। এখন আমরা নিজেদের আলাদা পরিচয় তৈরি করতে পেরেছি। আমরা আমাদের পরিচয় নিয়ে গর্ব করি।’
বরিশাল স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শাইমুন মিয়া বলেন, ২০১৯ সাল থেকে বরিশাল ডিভিশনাল স্টুডেন্টস এসোশিয়েন বরিশাল মুক্ত দিবস পালন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে বরিশাল মুক্ত দিবস পালন করছি। এই দিনে আমি সেইসব বীরদের স্মরণ করছি যারা একাত্তরে তাদের আত্মত্যাগ ও বীরত্বের মধ্য দিয়ে প্রিয় স্বাধীনতাকে এনে দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে কুবি অভিভাবক মাননীয় উপাচার্য এবং ট্রেজারার স্যার আমাদের অনুষ্ঠানে উপস্থিতির মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানকে আরও প্রাণবন্ত করেছেন। বিশেষ করে মাননীয় উপাচার্য স্যারের মুক্তিযুদ্ধের বাস্তব অভিজ্ঞতা শেয়ারের মধ্য দিয়ে আমাদের অনেক অনুপ্রাণিত করেছেন।’
এছাড়া এ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান, সংগঠনের সাবেক সভাপতি মেহেদী হৃদয়, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান সহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর বরিশাল থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা পালিয়ে যায়। নগরীর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেন মুক্তিসেনারা। সর্বত্র উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা।
বিএনএ/আদনান, এমএফ