বিএনএ, চট্টগ্রাম : ঊর্ধ্বতন র্যাব কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণার দায়ে আমান উল্লাহ নামে এক প্রতারক’কে আটক করেছে র্যাব। এ সময় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ও টাকা উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) এ অভিযান চালানো হয়। আমানউল্লাহ ভূজপুর থানার মৃত আবুল কালামের পুত্র।
র্যাব-৭ জানায়, প্রতারণার শিকার একজন মহিলা। তার ৮ বছরের দাম্পত্য জীবনে ৬ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তার স্বামী মোঃ ইলিয়াস এর সাথে পারিবারিক কলহের কারণে বনিবনা না হওয়ায় স্বামী তাকে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। অতঃপর ভিকটিম তখন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চট্টগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী গত ১২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে উক্ত মামলা সংক্রান্ত ব্যাপারে জানতে আসলে মোঃ আমান উল্লাহ নামক এক ব্যক্তির সাথে তার পরিচয় হয়। সে নিজেকে একজন র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে দাবি করেন ও বিজ্ঞ আদালতে কি কারণে এসেছেন জিজ্ঞাসা করলে ভিকটিম তখন তাকে বিস্তারিত বলে।
তখন মোঃ আমান উল্লাহ উক্ত মামলা তদন্তের সকল কাজ করে দিবে এবং আসামীর নামে ওয়ারেন্ট বের করে আসামীকে গ্রেফতার করার ব্যবস্থা করে দিবেন বলে ভিকটিমকে আশ্বস্থ করে। ভিকটিম তার সকল কথা সরল মনে বিশ্বাস করে। মোঃ আমান উল্লাহ মামলাটি র্যাব দিয়ে তদন্ত করিয়ে দিবে এবং তার ডিভোর্সী স্বামী’কে গ্রেফতার করিয়ে দেবার কথা বলে ১ লক্ষ টাকা দাবি করে। ভিকটিম তখন তার কথায় বিশ্বাস করে বিভিন্ন সময় মোঃ আমান উল্লাহ’র ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল নাম্বারে সর্বমোট ৩৭,৫০০/- প্রদান করে। পরবর্তীতে ভিকটিম মোঃ আমান উল্লাহ’কে তার মামলা সংক্রান্তে এবং তার ডিভোর্র্সি স্বামীকে গ্রেফতার সংক্রান্ত ব্যাপারে জানতে চাইলে আমান উল্লাহ তখন ভিকটিমের নিকট পুনরায় আরো ২০ হাজার টাকা দাবি করে। এছাড়াও ভিকটিমকে বলে যে, যদি তাকে আরও ২০ হাজার টাকা না দেয়া হয় তাহলে তার মামলাটি ভিকটিমের বিপক্ষে যাবে এবং উল্টো তাকেই গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে বলে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। ভিকমিট তখন বিষয়টি তার আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের লোকজনকে জানালে তারা তাকে নিকটস্থ র্যাব অফিসে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেয়।
ভিকটিম তার আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের কথা মতো র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বরাবর একটি লিখিত আবেদন দাখিল করেন। উক্ত আবেদনের বিষয়টি র্যাব-৭ গত ১৩ ডিসেম্বর বিকেলে চট্টগ্রাম জেলার ভূজপুর থানাধীন ভূজপুর ইউনিয়নস্থ কাজীর টিলা (পাগলীছড়ি) নামক এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ আমান উল্লাহকে গ্রেফতার করে।
আটককৃত আসামী প্রতারণার কথা স্বীকার করে।তার কাছ থেকে ১ টি এনড্রয়েড মোবাইল এবং নগদ ৩০ হাজার টাকা উপস্থিত স্বাক্ষীদের উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, সিডিএমএস পর্যালোচনায় ধৃত আসামী মোঃ আমান উল্লাহ @ মানিকের বিরুদ্ধে সিএমপি এর চান্দগাঁও থানার মামলা নং-১৯/৪১৫, তারিখ-১২/০৯/২০১৯ ইং, ধারা-মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ১০(২)-এ ০১ টি মামলা পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চট্টগ্রাম জেলার সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিএনএ/ ওজি