বিএনএ, চবিঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ‘কম্যুউনিকেশন এন্ড জার্নালিজম রিসার্চ এসোসিয়েশন’ এর উদ্যোগে দিনব্যাপী ‘ওয়ার্কশপ অন রিসার্চ এন্ড পাবলিকেশন’ শীর্ষক দুই পর্বের একটি গবেষণা কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থীর পাশাপাশি শিক্ষকরাও অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালা শেষে অংশগ্রহণকারীদের সনদ প্রদান করা হয়।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে সকাল নয়টায় কর্মশালার প্রথম পর্ব শুরু হয়ে শেষ হয় বেলা একটায়। দুপুর দুইটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত শিক্ষকদের অংশগ্রহণে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের কনফারেন্স কক্ষে কর্মশালার দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি ড. মো. শহীদুল হকের সভাপতিত্বে কর্মশালাটিতে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্যের ল্যাঙ্কাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক বেনু কুমার দে। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী গোলাম আজম। অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ ও ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়৷
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমান বলেন, বর্তমানে পৃথিবীতে এমন কোনো ফিল্ড নেই যেখানে গবেষণার প্রয়োজন নেই। গবেষণা একটি প্রতিষ্ঠানকে যেমন সামনের দিকে এগিয়ে নেয়, তেমনি একজন শিক্ষার্থীকেও তার কাঙ্খিত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যেটি দরকার তা হলো সেল্ফ মোটিভেশন। কেননা গবেষণা এমন একটি কাজ যেখানে আপনি অল্পতেই সফল হতে পারবেন না। আবার অন্যদের থেকেও খুব একটা সাহায্য পাবেন না। আপনার নিজেকেই নিজের সাহায্য করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের শিল্পকারখানা বিশ্বের প্রতিটি দেশেই বিখ্যাত। এটা সম্ভব হয়েছে গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন পণ্য আবিষ্কারের ফলে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীদের তুলনায় আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা অনেক মেধাবী। তবে একজন সফল গবেষক হতে হলে প্রয়োজন ইচ্ছাশক্তি, মনোবল এবং ধৈর্য।
এরপর তিনি গবেষণার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন এবং গবেষণাপত্র লেখার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের নানা দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক বেনু কুমার দে বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সকলের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে গবেষণার বিকল্প নেই। গবেষণার মাধ্যমে আমরা অনেক অজানা বিষয় থেকে নতুন কিছু জানতে পারছি এবং এটাকে কাজে লাগিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
সভাপতির বক্তব্যে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি ড. মো. শহীদুল হক বলেন, এই কর্মশালাটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বড় সুযোগ। কারণ গবেষণা ছাড়া আপনি আজকের এই দুনিয়ায় সামনের দিকে এগোতে পারবেন না। বর্তমান পৃথিবীর সবগুলো সেক্টরে গবেষণা আছে। এমনকি আপনি যদি উচ্চ শিক্ষা অর্জন করতে চান তাহলে গবেষণা করা এবং গবেষণা করতে জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমি মনে করি এই গবেষণা কর্মশালার মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে ভালো গবেষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারবে।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোরশেদুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ ও চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাবির হোসেন। এছাড়া বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রধান আলোচক অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমান মালয়েশিয়ার সেরা বিজ্ঞানীদের একজন। বিশ্বের গবেষকদের মধ্যে ন্যানোফ্লুয়েড গবেষণায় তিনিই প্রথম। ২০২০ সালে ল্যাঙ্কাস্টার জরিপে সেরা চার গবেষকের একজন হচ্ছেন সাইদুর রহমান। বিশ্বের নামকরা ৬ শতাধিক জার্নালে তাঁর গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর গবেষণাপত্র বিশ্বের অন্যান্য গবেষকের কাছেও বেশ সমাদৃত।
বিএনএ/ সুমন বাইজিদ, ওজি