দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী

বিএনএ ঢাকা: গ্লাসগো, লন্ডন ও প্যারিসে প্রায় দুই সপ্তাহের সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্লাইটটি রোববার (১৪ নভেম্বর) সকাল ৭টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

এর আগে স্থানীয় সময় শনিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেল সোয়া চারটায়  প্যারিসের চার্লস দ্যা গল বিমানবন্দর ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা।

বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খন্দকার মোহাম্মদ তালহা এবং ফ্রান্সের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল। বিমানে ওঠার সময় ২১ সদস্যের গার্ড দল তাকে স্ট্যাটিক গার্ড অব অনার দেয়।

গত ৩১ অক্টোবর যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে দুই সপ্তাহের সফরে স্কটল্যান্ডের বন্দরনগরী গ্লাসগো পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গ্লাসগোতে কপ-২৬ বিশ্ব নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে এবং অন্যান্য ইভেন্টে যোগদান করেন তিনি। সেখানে অবস্থানকালে, ১ নভেম্বর সকালে, প্রধানমন্ত্রী স্কটিশ ইভেন্ট ক্যাম্পাসে (এসইসি) কমনওয়েলথ প্যাভিলিয়নে “সিভিএফ- কমনওয়েলথ হাই লেভেল প্যানেল ডিসকাসন অন ক্লাইমেট প্রসপারিটি পার্টনারশিপ” শীর্ষক একটি সাইড ইভেন্টে যোগ দেন।

কমনওয়েলথের মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড কিউসির সঙ্গে একটি বৈঠকের পর, কপ-২৬-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদান করেন এবং একই অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন তিনি। ব্রিটিশ প্যাভিলিয়নে ‘অ্যাকশন অ্যান্ড সলিডারিটি-দ্য ক্রিটিক্যাল ডিকেড’ শীর্ষক বৈঠকে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।

ওইদিনই বিকেলে বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পরে কপ-২৬-এর একটি ভিভিআইপি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন শেখ হাসিনা। সন্ধ্যায় স্কটল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় ভার্চুয়ালি অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।

২ নভেম্বর সকালে শেখ হাসিনা স্কটিশ প্যাভিলিয়নে ‘ওমেন এন্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন। পরে স্কটল্যান্ডের ফাস্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ছাড়াও এরপর কমনওয়েলথ সংবর্ধনায় যোগদান করেন তিনি।

একইদিন বিকেলে প্রিন্স চার্লস শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং পরে তিনি ইউকে মিটিং রুমে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং দ্বিপাক্ষিক বৈঠক বুথে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে পৃথক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।

এছাড়া, সভাকক্ষ-৪ এ ‘ফোর্জিং এ সিভিএফ কপ-২৬ ক্লাইমেট ইমার্জেন্সি প্যাক্ট’ শীর্ষক সাইড ইভেন্টে এবং ‘ওয়াল্ড লিডার্স সামিট’র সমাপনী পর্বেও অংশ নেন তিনি।

ওই দিন সন্ধ্যায় স্কটিশ পার্লামেন্টের স্পিকার অ্যালিসন জনস্টোন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন শেখ হাসিনা । স্কটিশ পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত ‘এ বাংলাদেশ ভিশন ফর গ্লোবাল ক্লাইমেট প্রসপারিটি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন তিনি।

৩ নভেম্বর দুপুরে  বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে লন্ডন যাত্রা করেন প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা। ওইদিন লন্ডনে পৌঁছার পর ব্রিটিশ পার্লামেন্টের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোইলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

সেখানে ‘‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১ : বিল্ডিং সাসটেইনেবল গ্রোথ পার্টনারশিপ”, বঙ্গবন্ধুর ওপর সিক্রেট ডকুমেন্টের আন্তর্জাতিক প্রকাশনা এবং লন্ডনে বসবাসরত বাংলাদেশিদের নাগরিক সংবর্ধনাসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।

৯ নভেম্বর সকালে সফরসঙ্গীদের নিয়ে লন্ডন থেকে প্যারিস যান প্রধানমন্ত্রী। ওইদিন ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে পৌঁছার পরপরই এলিসি প্যালেসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং দেশটির প্রধানমন্ত্রী জিন কাস্টেক্সের সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন ম্যাটিগননে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন শেখ হাসিনা ।

ইউনেসকো সদর দফতরে ‘‘ইউনেসকো-বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর দ্য ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’-র পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান’’, ইউনেসকোর ৪১তম সাধারণ সম্মেলন, প্যারিস শান্তি ফোরাম এবং ইউনেস্কোর ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপনসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেন তিনি।

সবশেষ সফরের শেষ দিন ১৩ নভেম্বর ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের নাগরিক সংবর্ধনায় ভার্চুয়ালি যোগ দেন শেখ হাসিনা।

বিএনএনিউজ/আরকেসি