বিএনএ, চট্টগ্রাম : আগামী ৩০ জুলাইয়ের পর কোনো অনুমোদনহীন লাইটার জাহাজে পণ্য দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অনুমোদনহীন জাহাজের ডুবে যাওয়া পণ্যের বীমা দাবি নাকচ হয়ে যাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে আমদানিকারকেরা মাঠে নেমেছেন।
এর প্রতিবাদে গত সোমবার ও মঙ্গলবার দুইদিন কোন জাহাজ বরাদ্দ নেয়নি পণ্যের এজেন্টরা । তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে বে ক্রসিং অনুমতিবিহীন জাহাজ বরাদ্দ বন্ধ করতে হবে। এ ধরনের জাহাজ তাদেরকে বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন করেছে।
সূত্র জানায়, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন রুটে পণ্য পরিবহনের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে লাইটারেজ জাহাজ। বিশ্বের নানা দেশ থেকে আনা বিভিন্ন ধরনের পণ্য লাইটারেজ জাহাজের মাধ্যমে সারা দেশে পরিবাহিত হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থানকারী মাদার ভ্যাসেল এবং বন্দরের অভ্যন্তরের বার্থিং নেয়া জাহাজের ওভারসাইট থেকে পণ্য নিয়ে লাইটারেজ জাহাজগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। বিভিন্ন সময় নানা প্রতিকূলতায় কোটি কোটি টাকার পণ্যসহ লাইটারেজ জাহাজডুবির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় আমদানিকারকের পক্ষ থেকে বীমার ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়। বীমা কোম্পানিগুলো ক্ষতিপূরণ দেয়ার আগে তদন্তে নেমে তথ্য পায়, ডুবে যাওয়া জাহাজের অনুমোদন ছিল না। এই ধরনের অনেক ঘটনা অভ্যন্তরীণ নৌ রুটে ঘটেছে। বীমা কোম্পানি ক্ষতিপূরণের টাকা না দেয়ায় আমদানিকারকেরা পণ্যের এজেন্ট থেকে টাকা কেটে রাখেন।
নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বে ক্রসিংয়ের অনুমতিবিহীন জাহাজ বরাদ্দে। সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের ২০১২ সালের পরিপত্র অনুযায়ী বে ক্রসিং অনুমতিবিহীন কোন জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দর হতে সমুদ্র উপকূল অতিক্রম করতে পারবেনা। এ ধরনের জাহাজগুলো ডুবে গেলে আমদানিকারক ইন্সু্রেন্স দাবি আদায় করতে পারে না।
সম্প্রতি বিষয়টি চরম আকার ধারণ করলে পণ্যের এজেন্টদের পক্ষ থেকে অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন রুটে পণ্য পরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়। পণ্যের এজেন্টরা ডব্লিউটিসির কাছ থেকে অনুমোদিত জাহাজ বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানান। যেসব জাহাজের অনুমোদন নেই সেইসব জাহাজ বরাদ্দ নিতে অস্বীকৃতি জানায় তারা। অবশেষে নানা দেনদরবার শেষে আগামী ৩০ জুলাই পর্যন্ত সিরিয়াল অনুযায়ী জাহাজ নেয়ার বিষয়টি পণ্যের এজেন্টদের পক্ষ থেকে মেনে নেয়া হয়। এরপর যেসব জাহাজের বে ক্রসিং পারমিশন নেই সেসব জাহাজে পণ্য না দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে এজেন্টদের পক্ষ থেকে।
এ বিষয়ে এজেন্টরা জানান, যেসব জাহাজের সাগর পাড়ি দেয়ার অনুমোদন নেই সেগুলো ডুবে গেলে বা কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায় না। বিষয়টি আমদানিকারকদের জন্য উদ্বেগের। আমদানিকারকেরা ক্ষতিপূরণ হিসেবে পণ্যের এজেন্টদের কাছ থেকে অনেক টাকা কেটে রেখে দিয়েছেন। দিন দিন এই সংকট তীব্র হচ্ছে। অথচ জাহাজগুলো অনুমোদন নিলে এই সংকট থাকে না।
বিএনএ/ ওজি