বিএনএ ডেস্ক: সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই খন্দকার মোহতেশাম একটি সিন্ডেকেট চালাতেন বলে আসামিদের জবানবন্দিতে এসেছে। তাঁর এসব কর্মকাণ্ডের জন্য সরকার ও দেশের মানুষের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। তিনি অন্য আসামিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন, পরামর্শদাতাও ছিলেন। তিনি রিং লিডার। এ ধরনের আসামিদের কেন জামিন দেব?
বুধবার (১৪ জুন) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন। দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার মোহতেশাম হোসেনের জামিনের শুনানিতে আদালত বলেন, এ মামলায় সংঘটিত অপরাধের মাস্টারমাইন্ড তিনি।
আদালতে মোহতেশামের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ মিজানুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন শুনানি করেন। শুনানিতে আদালত জামিন আবেদন খারিজ করার অভিপ্রায় জানালে মোহতেশামের আইনজীবী আবেদনটি না চালানোর কথা বলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে না চালানোর দিক বিবেচনায় আবেদনটি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
শুনানিতে সৈয়দ মিজানুর রহমান বলেন, মোহতেশামের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। মানি লন্ডারিং সংজ্ঞার উপাদান এই মামলায় নেই। তাঁর চাঁদাবাজি করার কোনো প্রয়োজন নেই। তাঁর শ্বশুর মন্ত্রী ছিলেন। তাঁর পরিবারও অভিজাত।
এই আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘এজাহার, অভিযোগপত্র ও আসামিদের দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালাচেনায় দেখা যাচ্ছে, আপনি (মোহতেশাম) একজন মন্ত্রীর ভাই। আপনি একটি সিন্ডিকেট চালাতেন। আপনার একটা নেতৃত্ব রয়েছে। এলজিইডি থেকে শুরু করে এমন কোনো দপ্তর নেই, যেখানে টেন্ডারবাজি করেননি।
এ সময় সৈয়দ মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি (মোহতেশাম) মন্ত্রীর ভাই এটি ঠিক। তবে অপপ্রচারের শিকার। মিডিয়ার মাধ্যমে বিচার করলে হবে না।’ আদালত বলেন, ‘আপনি (মোহতেশাম) অপরাধী কি না, তা বিচারে প্রমাণিত হবে। তবে নথিতে অপরাধের প্রাথমিক উপাদান রয়েছে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন শুনানিতে বলেন, অর্থ পাচার সংঘবদ্ধ একটি অপরাধ। এই মামলায় অপরাধের প্রধান হোতা মোহতেশাম। তাঁর নেতৃত্বেই সিন্ডিকেট চলেছে।
খন্দকার মোহতেশাম ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে সিআইডির কর্মকর্তা বাদী হয়ে ২০২০ সালের ২৬ জুন কাফরুল থানায় অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলা করেন। ওই মামলায় গত বছরের ৩ মার্চ বরকত, রুবেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়। অর্থ পাচারের মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি মোহতেশামকে গত ৮ মার্চ রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বিএনএ/ এ আর