আদালত প্রতিবেদক: ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল (বাংলা ১৪০৮ সনের ১ বৈশাখ)বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানস্থলে দুটি বোমা পুঁতে রাখা হয় এবং পরে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে তা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সকাল ৮টা ৫ মিনিটে একটি ও ১০-১৫ মিনিট পর আরেকটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। বোমা হামলায় প্রাণ হারান ১০ জন। আহত হন আরও অনেকেই।
ঘটনায় রমনা থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) কবির হোসেন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা ও আরেকটি বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। বোমা হামলার ২০ বছর পূর্ণ হলো আজ। সাত বছর আগে হামলার ঘটনায় হত্যা মামলার রায়ে আটজনের মৃত্যুদণ্ড ও ছয় জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। তবে একই ঘটনায় করা বিস্ফোরক আইনের মামলায় সাক্ষী না আসায় এখনো শেষ হয়নি বিচার। বিস্ফোরক আইনের করা মামলাটি ঢাকার ১ নং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে।মামলায় ৮৪ জনের মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৫ জন। গত ৫ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আবু হেনা মো. ইউসুফের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। করোনা প্রার্দুভাবের কারণে আদালত বন্ধ থাকায় মামলাটির সাক্ষ্য হয়নি। তিনি সাক্ষ্য দিলেই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের কার্যক্রম সমাপ্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে সিআইডির পরিদর্শক আবু হেনা মো. ইউসুফ আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর মধ্যে ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা বিচারিক আদালতের বিচারক মো. রুহুল আমিন হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মুফতি হান্নানসহ আটজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন- মাওলানা আকবর হোসাইন, মুফতি আব্দুল হাই (পলাতক), হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর (পলাতক), মাওলানা আবু বকর, মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক), মাওলানা তাজউদ্দিন (পলাতক) ও আরিফ হাসান সুমন। আসামিদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন আদালত। এ ছাড়াও তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা সাব্বির, হাফেজ ইয়াহিয়া, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মাওলানা আব্দুর রউফ ও মাওলানা শাহাদাৎ উল্লাহ জুয়েল। ৩০২/৩৪ ধারায় তাদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত মুফতি আব্দুল হান্নানের ফাঁসি ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রাতে কার্যকর হয়েছে। সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার দায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। তাই মামলা হতে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
বিএনএ নিউজ২৪/সহিদুল, এসজিএন