বিএনএ, ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে গৃহবধূকে ধর্ষণের পর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) ছড়িয়ে দেওয়ার মামলায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইমরান হাসান সিজানকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে এপিবিএন-২ সাইবার ক্রাইম শাখা। গ্রেপ্তারের পর আদালতের নির্দেশে ইমরান হাসান সিজানকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে গ্রেপ্তার ইমরান হাসান সিজানকে ময়মনসিংহ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে দেওয়ান মনিরুজ্জামান তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে পৌর সদরের হাসপাতাল রোড এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ইমরান হাসান সিজান পৌর সদরের ধামদী এলাকার শামছুল্লাহ নান্টুর ছেলে। সে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ছাত্রলীগের প্রার্থী ছিলেন।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত ইমরান হাসান সিজান তার বন্ধুর মাধ্যমে কৌশলে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকায় বেড়াতে আসা গৃহবধুর নম্বর নেয়। নম্বর নেয়ার পর প্রায়ই মোবাইলে তাদের কথা হতো। এর মাঝে গত নভেম্বর মাসে মোবাইলে তরুণীকে ডেকে নিজ বাড়িতে নিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রথমে আপত্তিকর ছবি তুলে ও ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে। এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই আপত্তিকর ভিডিও ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে বারবার তার কাছে যেতে বাধ্য করে। সম্প্রতি ওই তরুণীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর আবারও ওই তরুণীকে কুপ্রস্তাব দিত। কিন্তু তরুণী তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ইমরান হাসান সিজান ভুক্তভোগীর নামে ফেসবুকের আইডিতে ধর্ষণের ভিডিও আপলোড করে ভুক্তভোগীর স্বামীসহ বিভিন্ন গ্রুপ ও মেসেঞ্জার ছড়িয়ে দেয়।
বিষয়টি ওই নারী জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল দিয়ে আইনগত সহযোগিতা চাইলে তাকে ময়মনসিংহ এপিবিএন-২ মুক্তাগাছায় যেতে বলা হয়। পরে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে এপিবিএন-২’র এসআই আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে একটি টিম গত রাতে অভিযান চালিয়ে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরের হাসপাতাল রোড এলাকার নিজ বাসা থেকে ইমরান হাসান সিজানকে গ্রেপ্তার করে এপিবিএন। গ্রেপ্তারের পর তাকে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা বলেন, প্রেম ঘটিত ঘটনা থেকে ধর্ষণ মামলা হয়েছে। সে পৌর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন।
এসআই মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ইমরান হাসান সিজানকে গ্রেপ্তার করে এপিবিএন থানায় হস্তান্তর করে। ওই তরুণী বাদী হয়ে ইমরান হাসান সিজানকে আসামী করে ধর্ষণ, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। মামলার পর তাকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বিএনএনিউজ/ হামিমুর রহমান/ বিএম