বিএনএ, ডেস্ক, ঢাকা: শীতের রেশ এখনও কাটেনি। হিম বাতাস তার সঙ্গে কুয়াশার বিচরণ এখনও প্রকৃতিতে বহমান। তারপরেও বিদায় নিয়েছে শীত। গাছে গাছে নতুন পাতা, তাতে রোদের ঝিকিমিকি, কোকিলের কুহু ডাক জানান দিচ্ছে, ‘বসন্ত এসে গেছে।’
‘আজ পহেলা ফাল্গুন’, সেই সঙ্গে ‘ভালোবাসা দিবস’ও। ঋতুচক্রের নিয়মে এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত। অজস্র পলাশ, শিমুল, কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম আভায় বনে লাগছে আগুন। েবসন্তে আগুন সাজে প্রকৃতিকন্যা, পৃথিবীর সব ফুল তার অনুষঙ্গ। এ যেন ফুলেল সময়! প্রকৃতিতে শিমূল-পলাশ-কৃষ্ণচূড়ার বর্ণিল সাজ। তরুণীদের ফুলসজ্জার রাজসিক চাল বলে দেয়, এ যেন প্রেমের সময়! আবার বসন্ত মানে ঝরা পাতার হাহাকার, শূন্য গাছের বিষণ্ণতা
ফাল্গুন- ফুলের ঋতু। কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, কাঁঠালচাঁপা, কাঠগোলাপ, নাগেশ্বর, রুদ্রপলাশ, মহুয়া, রক্তকাঞ্চন, দেবদারু, স্বর্ণশিমুল—কত কত ফুল। এ বসন্তে থোকায় থোকায় ফোটে দোলনচাঁপা। ফোটে অশোক, পলাশ, শিমুল।
বসন্ত ভালোবাসার ঋতু। অনুভব আর আবেগের ঋতু। পশ্চিমের ভ্যালেনটাইনস ডে বা ভালোবাসা দিবসের ধারণা এসে মিলেছে আমাদের বসন্তে। বাংলা একাডেমি পঞ্জিকা সংশোধনের পর এখন পহেলা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবস একই দিনে উদযাপিত হয়। ভালোবাসার মানুষকে আরো কাছে পাওয়ার সময় এ বসন্ত। বসন্ত আসে তরুণের পোশাকে, মননে, সংগীতে। বাঁধনহারা মন এ সময় গেয়ে ওঠে, ‘মধুর বসন্ত এসেছে মধুর মিলন ঘটাতে।’
জরাজীর্ণ শীতের পর বসন্তের আগমনে প্রকৃতি সেজেছে নতুন রুপে। বাঙালি প্রাণ যখন বসন্ত বরণ করছে ঠিক তখন সম্ভাবনার এক নতুন বাংলাদেশ দেখার অপেক্ষায় বিশ্ব বাঙালি। এ স্বপ্নকে চেতনায় ধারণ করেই প্রকৃতিতে লেগেছে বসন্তের ছোঁয়া। তাইতো বসন্ত অনন্ত সম্ভাবনার ঋতু।
বসন্তকে নিয়ে বাঙালির কৌতূহলের শেষ নেই। বসন্তকে নিয়ে আবেগ তাড়িত বাঙালি- কবি- সাহিত্যিকরা লিখেছেন অনন্য অসাধারণ সব গান-কবিতা। বসন্তের গানে মাতোয়ারা বাঙালির কণ্ঠে উঠে বসন্ত বন্দনা-
‘বাতাসে বহিছে প্রেম নয়নে লাগিল নেশা/ কারা যে ডাকিল পিছু বসন্ত এসে গেছে/ মধুর অমৃত গানে জানা গেল সহজে / মরমে এসেছে বাণী বসন্ত এসে গেছে…..!
তাইতো এখনো আনন্দ আর বিরহ নিয়ে, তপন চৌধুরীর কণ্ঠে শুনি, পলাশ ফুটেছে শিমুল ফুটেছে/এসেছে দারুণ মাস/আমি জেনে গেছি/তুমি আসিবে না ফিরে/মিটিবে না পিয়াস। এজন্যই হয়তো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পলাশের রুপে মুগ্ধ হয়ে লিখেছিলেন “রাঙ্গা হাসি রাশি রাশি অশোকে পলাশে”।
বিএনএনিউজ২৪/এমএইচ