34 C
আবহাওয়া
৭:৪০ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২৮, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স থাকব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স থাকব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী


বিএনএ, ঢাকা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন বলেছেন, আমি নিজে কোনোদিন দুর্নীতি করিনি, আর আমার দফতরে দুর্নীতি হবে সেটাও দেখতে পারব না। দুর্নীতির ব্যাপারে আমার জিরো টলারেন্স থাকবে।

রোববার (১৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রথম অফিস করতে এসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যের দুর্নীতি দূর করতে আপনি কী করতে পারেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি যেগুলো বলছেন আপনাদের মতো আমিও শুনছি। ভেতরের খবর আমি জানি না। চেষ্টা করবো, এটুকু বলতে পারি দুর্নীতির ব্যাপারে আমার জিরো টলারেন্স থাকবে। আমি নিজেও জীবনে কোনোদিন দুর্নীতি করিনি। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। উনি আমাকে বলেছেন তুমি করো, যদি কোনো অসুবিধা হয় আমাকে ফোন করবা। আমি সেটাই করবো। যদি কোথাও দেখি দুর্নীতি হচ্ছে আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।

গ্রাম-গঞ্জের ডাক্তার থাকে না এ সমস্যার সমাধান কীভাবে করবেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখন ডাক্তার থাকে না এটা একটা সমস্যা আমি জানি। এর মেইন কারণ কী সেটা খুঁজে বের করতে হবে। আমি চেষ্টা করবো। আমার শুধু একপক্ষের কথা শুনলে হবে না, ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলতে হবে। আমাকে ডাক্তারের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে হবে। সব দেখে তারপর আমি ব্যবস্থা নেবো।

তিনি বলেন, আমার প্রথম কাজ হচ্ছে একেবারে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর, একেবারে গ্রাস রুট লেভেলে চিকিৎসাসেবাটা পৌঁছে দিতে পারি। সেই লক্ষ্য একদিনে পারবো না। আমাকে বসে সবার সঙ্গে কথা বলে, আমার দুই সচিবের সঙ্গে বসে ঠিক করবো কীভাবে কী করা যায়। আমরা যদি ওইটা করতে পারি তাহলে ঢাকা শহরে মাটিতে শুয়ে চিকিৎসা করাতে হবে না।

গত ৭ জানুয়ারির ভোটের তৃতীয় দিনে বুধবার নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নামগুলো জানানো হয়। ২৫ জন মন্ত্রী ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রীর ভিড়ে চমক ছিল সামন্ত লাল সেন নামটি।

তিনি বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারিতে দেশের পরিচিত মুখ। দেশে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটগুলোর সমন্বয়নের দায়িত্ব পালন করে আসছেন বেশ কয়েক বছর ধরে। এর আগে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়কও ছিলেন।

শপথ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের ফোন নিজেও বিশ্বাস করতে পারেননি বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “সেদিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে হঠাৎ করে একটা ফোন পেলাম মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছ থেকে। বললেন, ‘আমি সচিব বলছি।’

“উনার নম্বরটা আমার মোবাইলে সেইভ করা ছিল। আমি ভাবলাম কোনো রোগীর বিষয়ে কথা বলবেন হয়ত। উনি বললেন যে, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে মন্ত্রিপরিষদের একজন সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করছেন।’

“আমি সঙ্গে সঙ্গে কলাপ্স (নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা) করে যাচ্ছিলাম যে এ কী বলছে! আমি চিন্তা করছিলাম যে এটা কি সত্যি নাকি কোনো ভুয়া টেলিফোন। পরে যখন টেলিভিশনে দেখলাম তখন নিশ্চিত হলাম যে সত্যিই।”

সংবিধান অনুযায়ী মন্ত্রিসভার সদস্যদের এক দশমাংশ সংসদের বাইরে থেকেও নিয়োগ করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। এদেরকে বলা হয় টেকনোক্র্যাট কোটা।

এবার যে ৩৬ জনকে সরকারে নেয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে টেকনোক্র্যাট কোটায় প্রধানমন্ত্রী বেছে নিয়েছেন দুইজনকে। এদের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আগের মতোই ইয়াফেস ওসমানকে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় জন হলেন সামন্ত লাল সেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার ওপর আস্থা রেখে দায়িত্ব দিয়েছেন। সেই আস্থার প্রতিদান দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এ জন্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ সবার সহায়তা চান তিনি।

সামন্ত লাল সেন ১৯৪৯ সালের ২৪ নভেম্বর হবিগঞ্জের নাগুরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৩ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন সামন্ত লাল সেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সার্জারিতে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন।

মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম বার্ন বিভাগ চালু হয়। সামন্ত লাল সেন এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। দেশে পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাতেও তার ভূমিকা আছে। তিনি বাংলাদেশ প্লাস্টিক সার্জন সোসাইটির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

চিকিৎসাসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৮ সালে সামন্ত লালকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ দেয় বাংলা একাডেমি।

বিএনএ/এমএফ

Loading


শিরোনাম বিএনএ