শহীদ সাহেব পৌঁছাবার সাথে সাথে কৃষক শ্রমিকেরা লোকেরা বলে বেড়াতে লাগলেন শহীদ সাহেব যুক্তফ্রন্টের কেউই নয়, হক সাহেবই নেতা।
আজ প্রকাশিত হলো পর্ব : ৩৪২
মোহাম্মদ আলী ঢাকায় এসে গোপনে হক সাহেবের দলের সাথে বোঝাপড়া করে ফেলেছেন যে, আওয়ামী লীগকে না নিলে তাঁর দলকে পূর্ব বাংলায় সরকার গঠন করতে দিবে এবং শহীদ সাহেব যে কেউই নয় যুক্তফ্রন্টের, একথা ঘোষণা করতে হবে। তা হলেই শহীদ সাহেবকেও দূরে সরিয়ে রাখতে সক্ষম হবে। মোহাম্মদ আলী জানতেন শহীদ সাহেবই একমাত্র লোক যে তাঁর প্রধানমন্ত্রীর পদের দাবিদার হতে পারেন। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে শহীদ সাহেব এত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন যে জনগণ তাঁকেই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চায়। চৌধুরী মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে পশ্চিম পাকিস্তানের নেতারা জানতেন, হক সাহেবের দলের সাথে আপোস করলে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বায়ত্তশাসন না দিয়েও পারা যাবে। তবে আওয়ামী লীগ স্বায়ত্তশাসন ছাড়া আপোস করবে না।
শহীদ সাহেব যখন ফিরে আসলেন রোগমুক্তির পরে, করাচিতে-তাঁকে বিরাট অভ্যর্থনা জনসাধারণ জানাল। একমাত্র জিন্নাহ ছাড়া এত বড় অভ্যর্থনা আর কেউ পায় নাই। পূর্ব বাংলা থেকে প্রায় বিশ-ত্রিশজন নেতাও তাঁকে অভ্যর্থনা দেয়ার জন্য করাচি উপস্থিত হয়েছিলেন। আতাউর রহমান সাহেব, আবুল মনসুর আহমদ সাহেব সকলেই প্রায় উপস্থিত ছিলেন।
শহীদ সাহেব পৌঁছাবার সাথে সাথে কৃষক শ্রমিকেরা লোকেরা বলে বেড়াতে লাগলেন শহীদ সাহেব যুক্তফ্রন্টের কেউই নয়, হক সাহেবই নেতা। হক সাহেব তাঁকে সমর্থন করনে না, করেন মোহাম্মদ আলীকে। মন্ত্রিসভা গঠনে গোলাম মোহাম্মদ সাহেব শহীদ সাহেবকে বললেন, এ মন্ত্রিসভায় কেউই প্রধানমন্ত্রী নন, এটা কেয়ারটেকার সরকার। শীঘ্রই শহীদ সাহেবকে প্রধানমন্ত্রী করা হবে, তবে এখন আইনমন্ত্রী হয়ে তাঁকে একটা শাসনতন্ত্র দিতে হবে।
পরিকল্পনা : ইয়াসীন হীরা
গ্রন্থনা : সৈয়দ গোলাম নবী
সম্পাদনায় : মনির ফয়সাল
সূত্র: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী, প্রকাশনা- দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, পৃষ্টা নম্বর:২৮২-২৮৩।
আগের পর্ব পড়ুন : বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পর্ব : ৩৪১