বিএনএ ডেস্ক: দায়িত্বহীন কেউ যেন ভবিষ্যতে ক্ষমতায় না আসে সে বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য দেশবাসীকে অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২২ উপলক্ষে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। গণভবন থেকে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন শেখ হাসিনা।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও প্রতিরোধে বর্তমান সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ সহনশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে আজ বাংলাদেশ স্থান পেয়েছে। যতই দুর্যোগ আসুক আমরা সেটা মোকাবিলা করতে সক্ষম। এটা বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে। এটা অব্যাহত রাখতে হবে। আবার ওরকম যেন কেউ ক্ষমতায় না আসে যে, ‘যত মানুষ মারা যাওয়ার কথা ছিল তত মানুষ মরে নাই’ এই কথা বলে দায়-দায়িত্বহীনতার পরিচয় যেন কেউ না দেয় ভবিষ্যতে সেদিকেও দেশবাসীকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান শেষ হাসিনা।
সরকার প্রধান বলেন, আমাদের বাংলাদেশটা একটা অদ্ভুত দেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন মোকাবিলা করতে হয় আবার অগ্নিসন্ত্রাসের মতো দুর্যোগও আমাদের মোকাবিলা করতে হয়। যেটা মানুষ সৃষ্ট। চলন্ত গাড়িতে আগুন, বাসে আগুন, লঞ্চে আগুন। এটাই হলো আমাদের দুর্ভাগ্য।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেক ঘাত-প্রতিঘাত আমাদের ওপর এসেছে, সেগুলো মোকাবিলা করে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। একদিকে করোনা, অপর দিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা-এসব মোকাবিলা করেই কিন্তু আমাদের এগিয়ে যেতে হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মনুষ্য দুর্যোগ সব মোকাবিলা করেই বাংলাদেশ তার অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছাবে।
জলবায়ু অভিঘাত প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের যে অভিঘাত বাংলাদেশে আসছে আসলে বাংলাদেশ কিন্তু কোনো মতেই এর জন্য দায়ী নয়। আমরা সব সময় সতর্ক। আমাদের প্রতিটি নেতা-কর্মীর ওপর নির্দেশ আছে, যে যেখানে পারবে, গাছ লাগাবে। আমাদের বাংলাদেশ সবুজ বাংলাদেশ, এই সবুজায়ন যাতে থাকে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের কর্মসূচি আমরা দীর্ঘ দিন থেকে অনুসরণ করে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ ক্ষতিকারক না কিন্তু বাংলাদেশ সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলো উন্নয়ন করে ফেলেছে। আর তার ফলে আজকে আমরা ভুক্তভোগী। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যেসব দেশ সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এদের সব রকমের সহযোগিতা তাদের দেয়ার কথা। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো আমরা তো অনেক প্রতিশ্রুতি পাই কিন্তু বাস্তবে কতটুকু সহযোগিতা পাওয়া যায়?
পরিবেশ রক্ষায় নানামুখী উদ্যোগ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, বন্যা আমাদের প্রয়োজন। সারা বছর বৃষ্টিতে যে ভূমিটা ক্ষয় হয়, বন্যায় পলি পড়ে সেই ভূমিটা আবার পুনরুদ্ধার হয়। কিন্তু এই বন্যায় মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকেও আমরা সতর্ক। সে জন্য বন্যাপ্রবণ এলাকায় আমরা এখন বন্যা ও সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করে দিচ্ছি।
এ সময় ২৫টি জেলা ত্রাণ/গুদাম/দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র, ৫০টি মুজিব কেল্লা এবং ৮০টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিএনএ/এ আর