বিএনএ, চুয়েট : চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর দুই শিক্ষার্থীর সাথে দুর্ব্যাবহার ও হুমকি দিয়েছে নাঈম খান নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের এক প্রতিনিধি। সোমবার (১৩ মে) দুপুরে চুয়েটের বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র সংলগ্ন সড়কে এ ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী চুয়েটের তৃতীয় বর্ষের (২০-ব্যাচ) স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী শোভন লাল সরকার জানান, সাবস্টেশনের পাশের জায়গায় কয়েকটি গাছ কাটা হয়েছে দেখে সে ছবি তুলতে যায়। হঠাৎ দূর থেকে কয়েকজন তেড়ে আসে তার হাতে থাকা ফোন কেড়ে নেওয়ার জন্য । এ সময় নাঈম খান সহ তার বাকি সহযোগীরা শোভন ও উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সাথে মারমুখী আচরণ করে।
এঘটনার প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসলে ইলেকট্রনিক্স এন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইটিই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিয়ামের জামার কলার ধরে হুমকি দেয়া হয়। এসময় নাঈম খান বলেন , আমাদেরকে টিচার ফিচার ভাইবো না, এমপির লোক আমরা, ভিসিও কিছু করতে পারবো না আমাদের। এছাড়াও তিনি জায়গাটিকে তার নিজের প্রপার্টি বলে সম্বোধন করেন।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করলে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালকগণ সেখানে উপস্থিত হয়ে নাঈম খানকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেন। এসময় নাঈম খান নিজের দোষ স্বীকার করে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
চুয়েটের উপাচার্য ড. রফিকুল আলম বলেন, আমি ওই কন্ট্রাক্টর কে ডেকেছি। এ ধরনের আচরণ করলে সে কখনোই ওই সাইটে থাকতে পারবে না। তাকে ক্যাম্পাসে রেস্ট্রিকশন করে দেয়া হবে। এটা কোনো অবস্থাতেই মেনে নেয়া যায় না।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের উপ-পরিচালক মো. তারেকুল আলম জানান, এ ঘটনা একেবারেই প্রত্যাশিত নয়। যে কাজটি করেছে, সে আসলে বুঝতেই পারেনি তার কিভাবে কথা বলা উচিত ছিল, তাদেরকে অবশ্যই মার্জিত আচরণ করতে হবে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ঠিকাদারকে উপযুক্ত শাস্তির আওতায় এনে চুয়েটে তার কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
চুয়েটের ইলেকট্রনিক্স ও দূরযোগাযোগ কৌশল বিভাগের ২০ আবর্তের শিক্ষার্থী রিদওয়ান মাহমুদ বলেন, চুয়েটের ছাত্র হয়ে নিজ ক্যাম্পাসে একজন বহিরাগত এর এইরকম ব্যবহার কোনো ভাবেই কাম্য নয়।চুয়েট প্রশাসন এর কাছ থেকে আশা করি এইসব নির্মাণের কাজে নিয়োজিত সকল লোকদের তাদের অবস্থান এবং ছাত্রদের সাথে ব্যবহারের বিষয়টি পরিষ্কার করে দিবে।
চুয়েটে পেট্রোলিয়াম ও মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ আবর্তের শিক্ষার্থী জোসেফ আহমেদ বলেন,আমাদের ক্যাম্পাসে আমরা যদি নিরাপদ না থাকি তাহলে এর থেকে দুঃখের কিছু হতে পারে না।
ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক ড. রেজাউল করিম জানান, ছাত্রদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাটি পর্যালোচনা করা হবে। ভবিষ্যতে এ ধরণের কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত নাঈম ইয়াকুব এন্ড ব্রাদারস এনকে ট্রেডার্স জয়েন্ট ভেঞ্চার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করেন। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল রিসার্চ ল্যাব এর কাজে নিয়োজিত আছে৷
বিএনএ/ আফনান/এইচ.এম/এইচমুন্নী