বিএনএ, কক্সবাজার : ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে কক্সবাজার শহর, উখিয়া-টেকনাফ ও রোহিঙ্গা শিবির পাহাড় ধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাহাড়ের পাদদেশ বা চূড়ায় ঝুঁকিপূর্ণ আবাস গড়া লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে সরে যেতে নির্দেশ দিয়ে মাইকিং করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। স্বেচ্ছায় না সরলে অভিযানের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে।
শনিবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের নির্দেশে মাইকিং করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা সমীর রঞ্জন সাহা।
তিনি বলেন, শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হয়। বিশেষ করে শহরে পাহাড় বেষ্টিত পাহাড়তলী, লাইট হাউস পাড়া, ঘোনা পাড়া, বাদশা ঘোনা, কবরস্থান পাড়া, সাহিত্যিকা পল্লী, সার্কিট হাউস পাড় এলাকায় ঝুঁকিতে থাকাদের নিরাপদে সরতে বলা হয়। নিজেরা সরে না আসলে আইন প্রয়োগে তাদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, শুধু কক্সবাজার শহরে নয়, কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের যেই সব এলাকা ঝুঁকিতে রয়েছে সব স্থানে মাইকিং করা হয়েছে।
জানা গেছে, শহরের লাইটহাউজ, ফাতেরঘোনা, কলাতলী, আদর্শগ্রাম, পাহাড়তলী, বৈদ্যঘোনা, খাজামঞ্জিল, ঘোনারপাড়া, মোহাজের পাড়া, কবরস্থান পাড়া, গরুর হালদা সড়ক, সিটি কলেজ এলাকা, সাহিত্যিকা পল্লী, বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকাসহ ৬টি ওয়ার্ডে পাহাড়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করে। ভারি বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসে এসব এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। অতীতেও এসব পাহাড় ধস হয়েছে। এছাড়া মহেশখালী, পেকুয়া, চকরিয়া, রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও কক্সবাজার সদরের পাহাড়ি এলাকায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা দেখা দেয়ায় সেখানেও মাইকিং করা হয়েছে।
এদিকে মাইকিং করে সতর্ক করা হয়েছে রোহিঙ্গা শিবির গুলোয়। এবিষয়ে ৮ এপিবিএন এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ জানান,ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে ভারি বর্ষণ ও তীব্র বাতাসের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে পড়তে পারে, তাই ক্যাম্পের বাসিন্দাদের মাইকিং করে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। শনিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন ক্যাম্পে গিয়ে রোহিঙ্গাদের মাইকিং এর মাধ্যমে সতর্ক করা হয়।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, পাহাড় ধসে প্রাণহানি ঠেকাতে পৌরসভার ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী হাজারো পরিবারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে মাইকিং করে তাদেরকে সরে যেতে বলা হয়েছে। এরপরও যদি সরে না আসে বৃষ্টিপাতের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হবে। তাদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখার জন্য প্রতিটি এলাকায় পর্যাপ্ত শেল্টারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েকদিন পরিদর্শন করে সচেতনতা সৃষ্টি করা হয়। মানুষের প্রাণহানি যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে প্রশাসন।
বিএনএনিউজ/এইচএম ফরিদুল আলম শাহীন/এইচ.এম।