বিএনএ ডেস্ক: ভৌগলিক অবস্থানের কারণে সৌদি আরবসহ মুসলিম বিশ্বের অনেক দেশে আজ মঙ্গলবার(১৩ এপ্রিল) থেকে সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র মাহে রমজান শুরু হয়েছে। সোমবার রাতেই শিষ্টাচার মেনে তারাবিহ পড়েন মুসল্লিরা।সর্বোচ্চ মুসলিম জনগোষ্ঠীর দেশ ইন্দোনেশিয়াতেও শুরু পবিত্র রমজান মাস। তাই রাজধানী জাকার্তার সবচেয়ে বড় ইসতিকলাল মসজিদে ভিড় করেন মুসল্লিরা। সেখানে শারীরিক দূরত্ব এবং অন্যান্য করোনা শিষ্টাচার মেনেই পড়েন তারাবিহ। যোগ দেন অনেক নারীও। এরপর মঙ্গলবার ভোররাতে সেহেরি খেয়েরোজা রাখা শুরু করেন মুসলমানরা।
এদিকে, এদিকে, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখছেন বাংলাদেশের মুসলমানদের একটি অংশ। সোমবার রাতে তারাবির নামাজ আদায়ের পর ভোররাতে সেহেরি খেয়ে রোজা রাখছেন তারা।
এরমধ্যে ফরিদপুরের বোয়ালমারি উপজেলার শেখর ও রুপাপাত ইউনিয়নের ১৩ গ্রামের মানুষ রোজা রাখছেন। শেখর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইসরাফিল মোল্যা জানান, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দীর্ঘদিন ধরে এই গ্রামগুলোর মানুষ রোজা ও দুটি ঈদ পালন করে আসছেন।রাতে এশার নামাজের পর তারাবি আদায় করেছেন তারা। ভোররাতে সেহরি খাওয়ার মধ্য দিয়ে পবিত্র রোজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন এসব গ্রামের মানুষ।
অন্যদিকে, শরীয়তপুরে সুরেশ্বর দরবার শরিফের অনুসারী ৫০টির অধিক গ্রামের মানুষ রোজা রাখছেন। দরবার শরিফের পীর সৈয়দ শাহ্ সূফী বেলাল নূরী সুরেশ্বরী জানান,দেশের বিভিন্ন জেলায় সুরেশ্বর দায়রা শরিফের প্রতিষ্ঠাতা হজরত জান শরীফ শাহ সুরেশ্বরীর (রা.)র প্রায় দেড় কোটি অনুসারী মঙ্গলবার থেকে রোজা রাখছেন।এবারের তারাবিতে সরকারিভাবে বিধিনিষেধ থাকায় বেশি মানুষ একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারছেন না বলে জানান তিনি।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, মতলব উত্তর এবং শাহরাস্তি উপজেলার ৪০ গ্রামে রোজা শুরু হয়েছে। আগাম রোজা শুরু হওয়া গ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে- হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলীপুর, বলাখাল, মনিহার, জাক্নি, প্রতাপপুর, বাসারা। ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর, কামতা, গল্লাক, ভূলাচোঁ, সোনাচোঁ, উভারামপুর, উটতলী, মুন্সিরহাঁট, মূলপাড়া, বদরপর, আইটপাড়া, সুরঙ্গচাইল, বালিথুবা, কাইতপাড়া, নূরপুর, সাচনমেঘ, শোল্লা, হাঁসা, গোবিন্দপুর। মতলব উত্তর উপজেলার দশানী, মোহনপুর, পাঁচানী এবং শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলার কয়েকটি গ্রামের অংশবিশেষ।
জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবার শরীফের অনুসারীরা এভাবে সৌদির সঙ্গে মিল রেখে আগাম রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা উদযাপন করে আসছেন।
এই মতের অনুসারী মরহুম পীর মওলানা ইসহাক (রা.) এর ছেলে পীরজাদা ও মতলব নোওহাটা ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আরবি-রীতি অনুযায়ী হানাফি মাজহাবের অনুসারীরা ৩০ শাবান শেষ হওয়ার পর পবিত্র রোজা পালন করবেন। এটাই নিয়ম।
জানা গেছে, ১৯২৮ সাল থেকে এই দরবার শরীফের প্রথম পীর মওলানা ইসহাক (রা.) এই দেশে চন্দ্রমাস হিসেব করে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে পবিত্র রোজা পালন এবং সেই হিসেবে দুটি ঈদ উদযাপন শুরু করেন। এরপর এই ধারাবাহিকতা মেনে চলেছেন তার অনুসারীরা।
এছাড়া, দক্ষিণ চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় মুসলমানদের একটি অংশ মঙ্গলবার থেকে রোজা রাখা শুরু করেছেন।
বিএনএনিউজ/আরকেসি