27 C
আবহাওয়া
৪:০৬ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » হালদা নদীর ৮ স্থানে সিসি ক্যামেরা

হালদা নদীর ৮ স্থানে সিসি ক্যামেরা

হালদা নদীর ৮ স্থানে সিসি ক্যামেরা

বিএনএ, চট্টগ্রাম : আগামী এপ্রিল মাসে শুরু হচ্ছে দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে কার্প জাতীয় (রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিবাউশ) মা মাছের প্রজনন মৌসুম। তার আগেই নদীর আটটি পয়েন্টে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বা সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। নদীটির নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা পুলিশের একটি ইউনিট এই ক্যামেরাগুলোর মাধ্যমে নজরদারি চালাবে।

সেখানে যাতে অবৈধ জাল পেতে মা মাছ ধরা, ইঞ্জিন চালিত নৌকার চলাচল বন্ধ, বালু উত্তোলন বা ডলফিন রক্ষায় নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য এসব সিসি ক্যামেরা ব্যবহৃত হবে।

হালদা নদী বাংলাদেশের একটি প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র, যাকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ বলে ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের সরকার। এপ্রিল মাসেই এখানে মাছের প্রজনন মৌসুম রয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ড. মুহম্মদ মনজুরুল কিবরিয়া বলছেন, হালদা নদীর জৈববৈচিত্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কিন্তু এই নদী থেকে গোপনে জাল পেতে মাছ ধরা, ডলফিন হত্যা করা বা বালু তোলার মতো ঘটনার অভিযোগ পাওয়া যায়। বিভিন্ন সময় পুলিশের অভিযানে জাল ও ট্রলার আটক করা হয়েছে। এই নদীতে থাকা ডলফিনগুলোর মৃত্যু বা হত্যার মতো ঘটনাও ঘটেছে।

ড. মুহম্মদ মনজুরুল কিবরিয়া বলছেন, ”এখন তো আমাদের ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবী ম্যানুয়ালি হালদা নদীর মা মাছ পাহারা বা সুরক্ষায় কাজ করছে। কিন্তু এত বড় একটি নদীকে এত কম মানুষ দিয়ে পাহারা দেয়া সম্ভব না। এই জন্য আমরা অনেকদিন ধরেই সিসি ক্যামেরা বসানোর কথা বলে আসছিলাম।”

”এই ক্যামেরাগুলো বসানোর ফলে কয়েকটা সুবিধা পাওয়া যাবে। যেকোনো স্থান থেকে নদী নজরদারি করা যাবে, রাতেও নদীতে কেউ জাল বসাচ্ছে কিনা, বালি উত্তোলন বা ডলফিন হত্যা করছে কিনা, অবৈধ কিছু করা হচ্ছে কিনা, সেটা বোঝা যাবে। সেই সঙ্গে যারা অবৈধ মাছ ধরে বা বালু তোলে, তাদের মধ্যেও একটা ভীতির তৈরি হবে।” তিনি বলছেন।

নৌ পুলিশের বসানো আটটি ক্যামেরায় প্রজনন ক্ষেত্রের প্রায় ছয় কিলোমিটার এলাকা কাভার করছে।
তবে অধ্যাপক কিবরিয়া বলছেন, নদীর প্রজনন ক্ষেত্রের অন্তত ১৫ কিলোমিটার এলাকা সিসি টিভির আওতায় আনতে হবে। নৌ পুলিশের পাশাপাশি একটি বেসরকারি সংস্থাও বাকি এলাকায় ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে বলে তিনি জানান।

পুলিশ জানিয়েছে, তাদের ক্যামেরায় মদুনাঘাট থেকে আমতোয়া পর্যন্ত নজরদারি করা হচ্ছে। ইন্টারনেট সংযুক্ত থাকায় যেকোনো স্থান থেকে এসব সিসি ক্যামেরায় নজরদারি করা যাবে।

সরকারি ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, পার্বত্য চট্টগ্রামের বাটনাতলী পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎসারিত হয়ে চট্টগ্রামের ভেতর দিয়ে এসে কর্ণফুলী নদীতে মিশেছে।

প্রায় ৮১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই নদীটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র বলে মনে করা হয়। সাধারণত এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে হালদা নদীতে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউসের মতো কার্প জাতীয় মাতৃমাছ প্রচুর পরিমাণ ডিম ছাড়ে। এসব ডিম সংগ্রহ করে কার্প পোনা উৎপাদন করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত বছর হালদায় ডিম সংগ্রহে গত ১৪ বছরের রেকর্ড গড়ে। গত এক দশকের বেশি সময়ের মধ্যে গেল বছর সর্বোচ্চসংখ্যক ডিম সংগ্রহ করেছিলেন হালদাপাড়ের ডিম সংগ্রহকারীরা। এর পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি। ২০২১ সালে হালদা নদীতে গাঙ্গেয় ডলফিনের মৃত্যু না হলেও ২০২০ সাল পর্যন্ত ২৮টি ডলফিনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।

বিএনএনিউজ/এইচ.এম।

Loading


শিরোনাম বিএনএ