বিএনএ ডেস্ক: রিজার্ভের টাকা কোন কোন খাতে খরচ হচ্ছে তার হিসাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন আওয়ামী লীগ সরকার অর্থ অপচয় করে না। ‘টাকা কেউ চিবিয়েও খায়নি, গিলেও খায়নি, নিয়েও যায়নি’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে দুর্নীতি করেছিল বলেই তারা দুর্নীতির সন্দেহ করছে।
শনিবার (১২ নভেম্বর) শনিবার ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে রিজার্ভ নিয়ে কথা বলেন সরকার প্রধান। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, বিরোধী দল থেকে প্রায়ই রিজার্ভের টাকা গেল কোথায়, এই নিয়ে প্রশ্নও করে এবং সেই সাথে সাথে সারা বাংলাদেশে এটা একটা অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করে।
বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে রিজার্ভের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন রিজার্ভ ছিল মাত্র ২.৯ বিলিয়ন ইউএস ডলার। আর ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত এটা বৃদ্ধি পেয়েছিল মাত্র ৫ বিলিয়নের মতো। সেই জায়গা থেকে আমরা এই রিজার্ভ প্রায় ৪৮ বিলিয়নের কাছাকাছি বৃদ্ধি করতে সক্ষম হই।
মহামারী ও যুদ্ধের কারণে এখন আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বে পরিবহন খরচ, জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গম, ভুট্টাসহ যে সমস্ত পণ্য আমদানি করতে হয়, তার সবেরই দাম বেড়ে গেছে।
অর্থ খরচের খতিয়ান দিয়ে তিনি বলেন, সরকার যেটুকু খরচ করেছে তা জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে। জনগণের খাদ্য কেনা, ক্যানসারের ওষুধ কেনা, জনগণের মঙ্গলের জন্য খরচ করতে হয়েছে। সার, জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ক্রয় করতে হচ্ছে। নগদ টাকা দিয়ে আমরা কিনছি। জানান, রিজার্ভের অর্থ দিয়ে উড়োজাহাজ কেনা এবং নদী ড্রেজিংও করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু বিনিয়োগ করছি এই কারণে সেটা হলো আমরা যদি অন্য দেশের এক্সিম ব্যাংক থেকে লোন নিই, আমাকে সুদসহ সেই ডলার পরিশোধ করতে হয়। কাজেই আমাদের ডলার যদি আমরা খরচ করি, তাতে করে ওই সুদসহ টাকাটা আমাদের দেশের টাকা দেশেই থেকে যায়। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই প্রায় ৮ বিলিয়নের মতো টাকা খরচ করা হচ্ছে।
শ্রীলঙ্কাকে ধার দেয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রীলঙ্কা যখন খুব অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়ে, তাদেরও কিছু টাকা বাংলাদেশ ধার দিয়েছে। এখানে কোন পয়সা কেউ তুলে নিয়ে চলে যায়নি। টাকা কেউ চিবিয়েও খায়নি, গিলেও খায়নি, নিয়েও যায়নি।
বিএনপির সমালোচনার জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি বলবেই, কারণ বিএনপির তো অভ্যাসই। তাদের মনে সব সময় ওই রকম ভয় থাকে। বলার কারণটা হচ্ছে, তাদের নেতা তারেক জিয়া মানি লন্ডারিং কেসে ৭ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছে এবং ২০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড পেয়েছে। কাজেই মানি লন্ডারিং যাদের অভ্যাস, তারা খালি ওইটাই জানে যে টাকা বোধহয় সব নিয়েই যেতে হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা (বিএনপি) নিজেরা চুরি করে অর্থ সম্পদ বানিয়েছে। কারন তাদের তো কিছুই ছিল না। জিয়াউর রহমান যখন মারা যায়, তখন আমরা ৪০ দিন টেলিভিশনে দেখেছি ভাঙা স্যুটকেম, ছেঁড়া গেঞ্জি ছাড়া কিচ্ছু রেখে যায়নি। কিন্তু পরবর্তীতে গিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক তারা। জনগণের অর্থ আত্নসাৎ করেই এটা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ দেশের উন্নয়নে কাজ করছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এদেশ স্বাধীন করেছেন। আমরা আওয়ামী লীগ, আমাদের একটা দায়বদ্ধতা আছে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি। জাতির পিতা যে আদর্শ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন, আমরা সেটাই পূর্ণ করতে চাই। শেখ হাসিনা বলন, সেই লক্ষ্য নিয়ে রাষ্ট্র চালাচ্ছি বলেই গত ১৩ বছরের মধ্যে এই বাংলাদেশ বদলে গেছে।
বিএনএ/এ আর