।। সৈয়দ মাহফুজ-উননবী খোকন।।
বিএনএ, সাতকানিয়া :, স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য জেলা বান্দরবানে প্রতিদিন অন্তত অর্ধ লক্ষ ডিমের যোগান দিচ্ছে সাতকানিয়া উপজেলার খামারিরা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্যমতে, সাতকানিয়ায় দৈনিক দেড় লাখেরও বেশি ডিমের উৎপাদন হচ্ছে। তারমধ্যে স্থানীয় বাজারে চাহিদা রয়েছে ১ লাখ। বাকি অর্ধ লাখ ডিম প্রতিদিন পার্বত্য জেলা বান্দরবান ও চট্টগ্রাম শহরের বাজার ধরছে।
খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার কাঞ্চনা, কেঁওচিয়া, সাতকানিয়া সদর, বাজালিয়া, পুরানগড়, ছদাহা, কালিয়াইশ, ধর্মপুর ইউনিয়নসহ আশপাশে বিভিন্ন এলাকায় ছোট বড় খামার গড়ে উঠছে। এসব খামারে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার ডিম উৎপাদন হচ্ছে দৈনিক। সবমিলিয়ে দৈনিক দেড় লক্ষ মতো ডিম উৎপাদন হয়। উপজেলার কেরানীহাট, চন্দনাইশ, দোহাজারী, লোহাগাড়া, আনোয়ারা, বাঁশখালী, বান্দরবান, চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন আড়তদারের কাছে বিক্রি হয় এসব ডিম। এরমধ্যে সাতকানিয়া উপজেলাতেই ডিমের চাহিদা ১ লাখ। বাকি ডিম পাশ্ববর্তী উপজেলা ও বান্দরবানে বিক্রি হয়। খামারিরা ভ্যানগাড়ি ও পিকআপযোগে আড়তদারের কাছে চাহিদানুযায়ী ডিম পাঠান। এদিকে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পাঠানো হিসাবমতে, সাতকানিয়ায় ডিমের দৈনিক উৎপাদন চাহিদা আরও অর্ধলক্ষেরও বেশি। তার এ তালিকায় গরমিল রয়েছে বলে অভিযোগ খামারিদের।
খামারিদের অভিযোগ, যোগদানের ৭-৮ মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত তিনি একটি খামারও পরিদর্শন করেননি। যোগাযোগ রাখেন নি কোন খামারির সঙ্গেও। সাতকানিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাকে তার কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়না নিয়মিত। জানা গেছে তিনি তার কর্মক্ষেত্রে না থেকে চট্টগ্রাম শহরে থাকেন।
আড়তদার মো. আমিন সওদাগর বলেন, লাল ডিমের শতভাগ যোগান আসে সাতকানিয়ার খামারিদের কাছ থেকে। বাইরে থেকে কোন ডিম সাতকানিয়ায় ঢুকে না। কক্সবাজার, রামু, চকরিয়া থেকে কিছু সাদা ডিম আসে। এছাড়া হাঁস, কোয়েল পাখির ডিমেরও মোটামুটি বাজার রয়েছে। রেয়াজুদ্দীন বাজার সমিতির দাম ধরে খামারিদের কাছ থেকে ডিম সংগ্রহ করা হয়।
বায়তুশ শরফ এগ্রো ফার্মের মালিক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, দৈনিক ২০ হাজার ডিম উৎপাদন হয় আমাদের খামারে। এরপর সাতকানিয়াসহ আশপাশের আড়তদারদের কাছে তা বিক্রি করি। ৬ কানির এই খামার থেকে উৎপাদন খরচ অনুযায়ী মোটামুটি লাভজনক।
সাতকানিয়া লেয়ার ফার্মস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, আমাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খামারিদের চরম ঝুঁকি, অক্লান্ত শ্রম আর সাধনায় ধীরে ধীরে ডিমের উৎপাদন বাড়ছে। উপজেলার ১৭ ইউনিয়ন এক পৌরসভায় চাহিদার যোগান দেওয়ার পাশাপাশি আশপাশের উপজেলাসহ পার্বত্য জেলা বান্দরবান ও চট্টগ্রামে পাঠানো হচ্ছে। খামারিদের এ সাফল্যকে কাজে লাগিয়ে আরও অগ্রগতির পথে যেতে প্রাণিসম্পদ দপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের আরও সচেষ্ট হতে হবে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে পরপর দুদিন গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি সাড়া দেননি।
বিএনএনিউজ/ সৈয়দ মাহফুজ-উননবী খোকন/ এইচ.এম।