বিএনএ, সাভার প্রতিনিধি: করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের কারণে দীর্ঘ ১৮মাস বন্ধ থাকার পর স্কুল-কলেজ খোলার প্রথম দিনে ঢাকার সাভার ও ধামরাইয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাস্ক পরা মুখের আড়ালে দেখা গেছে মিলনমেলার আনন্দ। দীর্ঘদিন পর শিক্ষাঙ্গনে আসার আনন্দে মেতেছিলেন সবাই।
শিক্ষার্থীরা জানালেন, ক্লাসের চেয়ে প্রথম দিনে সবার মধ্যে ভাব বিনময়ই বেশি হয়েছে। আন্তরিকতা ভালোবাসায় সহপাঠী বন্ধুদের সাথে স্কুল কলেজের আঙিনায় যেন ফুটে উঠেছে সূর্যমূখী ফুল।
রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে ধামরাই সরকারি কলেজ, সাভার সরকারি কলেজসহ স্থানীয় কয়েকটি কলেজে গিয়ে দেখা যায় এই দৃশ্য। সেখানে কথা হয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। ধামরাই সরকারি কলেজের ফটকে ঢুকতেই দেখা যায় কিছুটা দুরত্ব বজায় রেখে আড্ডা দিচ্ছিলেন শরিফুল ইসলাম রিফাত, রুবেল হোসেন পল্লব, রিয়া মনি আক্তারসহ কয়েকজন। উচ্চ-মাধ্যমিকে ভর্তি হওয়ার পর এই প্রথম কলেজে এসেছেন তারা।
জানতে চাইলে এই শিক্ষার্থীরা বলেন, বাসায় বসে বসে জীবন যেন থেমে গেছিলো। বাড়ির লোকজন পড়ার চাপ দেয়। পড়তে চাই। কিন্তু পড়ায় মন বসে না। শুরু হল অনলাইন ক্লাস। মোবাইল হাতে নিলে বলে, মোবাইলই শেষ করল। এখন ক্লাস তো মোবাইলে। বলেই হেসে একখান সবাই। সবাই খুশি এত দিন পর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে। সকালে ধামরাই বাজারের পাশেই দেখা মিলল এক বাবা-মেয়ের। কলেজের পোশাকে মেয়েকে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন সোমভাগ এলাকার সামাদ হোসেন। অটো রিকশা করে সকাল সকাল রওনা দিয়েছেন তারা। রিকশা থামিয়ে কথা হল তাদের সঙ্গে।
জানতে চাইলে সামাদ হোসেন বলেন, করোনার পর থেকেই মেয়ে ১১টার আগে ঘুম থেকে ওঠে না। তবে আজ দ্রুত উঠে রেডি। ঝটপট বেরিয়ে পড়েছি তাই। সাভার কলেজের সামনে দাড়িয়ে থাকা অভিভাবক হাসান রহমান বলেন, কলেজ খুললেও কিছুটা ভয় আছে। বাচ্চা ক্লাস করবে, সবার সঙ্গে মিশবে। তাই কিছুটা ভয় রয়ে গেছে। তবুও যেন নিরাপদ থাকে সেটাই চাওয়া।
এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে নেয়া হয়েছে নানা ব্যবস্থা। পথে গোলাকার চিহ্ন করে দেওয়া হয়েছে। দেয়ালে ঝুলছে নানা সতর্কতামূলক প্রচারপত্র। যেমন ‘নো হাই ফাইভ, অনলি হাই’, ‘মাস্ক পরুন’সহ আরও নানা কিছু। বসানো হয়েছে বেসিন।
এ বিষয়ে সাভার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ ইমরুল হাসান বলেন, ‘গত ৮-১০ দিন ধরেই শিক্ষার্থী-শিক্ষক সবাই অপেক্ষা করে ছিল কলেজ খোলার। উচ্চ মাধ্যমিকের যেসব শিক্ষার্থী প্রথম কলেজে আসলেন তারা আজকেই প্রথম ক্লাস করেছে। অনেকের মধ্যে আবেগ-উচ্ছাসপূর্ণ চেহারা দেখেছি। যেন এক মিলনমেলায় রুপ নিয়েছে পুরো শিক্ষাঙ্গন।’
তিনি বলেন, ‘কলেজ খোলার আগেই আমরা পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করেছি। এছাড়া সামজিক দুরত্বের বিষয়টিও যথাযথভাবে দেখা হয়েছে। সবমিলিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার মধ্যেই ব্যাপক আনন্দ দেখেছি আমরা।
বিএনএ বাংলা খবর, ইমরান খান,