বিএনএ, ঢামেক হাসপাতাল প্রতিবেদক: মোবাইল ফোন না পাবার অভিমানে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের শাহীন স্কুল এন্ড কলেজের এস এস সি পরীক্ষার্থী আবির হোসেন খান (১৮) আত্মহত্যা করেছে। তবে মা-বাবার দাবি সে আত্মহত্যা করার মত ছেলে ছিল না। জানা যায়, ঘটনার সময় বহুতল ভবনের পুরো হোস্টেল জুড়ে ছিল মাত্র দুজন ছাত্র।
জানা যায়, টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার হোসেন নগর গ্রামের ফজলুর রহমান খান ও আবেদা সুলতানা খান দম্পতির একমাত্র সন্তান আবির। বর্তমানে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার আমতলী এলাকায় থাকে। ফজলুর রহমান গ্রামীণ ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার ও মা আবেদা পল্লি বিদ্যুতের বিলিং সহকারী হিসেবে নবাবগঞ্জে কর্মরত।
আবির শনিবার দুপুরে আবির স্কুলের ছাত্রাবাসে উঠেছিল। শনিবার দিবাগত রাতে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ স্থানীয় আধুনিক হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরে রোববার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।
উত্তরা পশ্চিম থানার উপ-পরিদর্শক যা বললেন
মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে উত্তরা পশ্চিম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) লাল মিয়া উল্লেখ করেন, আবির মোবাইলে গেমস খেলায় আসক্ত ছিল। শনিবার দুপুরে তার বাবা তাকে স্কুলের ছাত্র হোস্টেলে দিয়ে আসেন। এরপর বিকেলে হোস্টেলের কাজের বুয়ার কাছে সে ফোন চায় বাড়িতে কথা বলবে । বুয়া ফোন না দিলে সে বুয়াকে বলে, ফোন যেহেতু দিবেন না তাহলে আমার বাড়িতে ফোন দিয়ে বলেন আমার লাশ নিয়ে যেতে।
সুরতহাল প্রতিবেদন
সুরতহাল প্রতিবেদনে প্রাথমিক তদন্তে আরও উল্লেখ করা হয়, এরপর ওই কাজের বুয়া দৌঁড়ে নিচে গিয়ে শিক্ষকদের জানালে পরে তারা সপ্তম তলার ৭০১ নম্বর রুমে গিয়ে জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় গামছা পেচিয়ে খাটের উপর অচেতন অবস্থায় বসা দেখতে পায় বলে দাবি করেছে। তখন তারা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে রাতেই তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তার গলায় অর্ধচন্দ্রাকৃতির কালো দাগ রয়েছে। এছাড়া মরদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
ঢাকা মেডিকেল মর্গে আবিরের বাবা ব্যাংক কর্মকর্তা মো. ফজলুর রহমান খান বলেন, শনিবার আমিই তাকে হোস্টেলে পৌঁছে দিয়ে আসি। সন্ধ্যায় আবার হোস্টেল থেকে ফোন দিয়ে জানানো হয় আবিরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরে তিনি রাত সাড়ে নয়টার দিকে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে গিয়ে ছেলের লাশ দেখতে পান। ছেলের মৃত্যুটি অস্বাভাবিক বলে দাবি করেন তিনি। আবিরকে স্কুল কর্তৃপক্ষ জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করলেও তারা কেন দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায় নি। অনেকক্ষণ নিজেরা সুস্থ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে হাসপাতালে আবিরকে নিয়ে যাওয়া হয়।
আবিরের মা আবিদা বলেন, বাসায় থেকে হোস্টেলে যাবার সময়ও সব কিছু ভালোই ছিলো তার। তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ করে বাসায় রেখে বাবার সাথে চলে যায়। সে যে আত্মহত্যা করবে সে রকমও তো কিছুই মনে হয় নি। সে আত্মহত্যা করার মত ছেলেও না।
এদিকে হাসপাতাল মর্গে শাহীন স্কুল এন্ড কলেজের শাখা পরিচালক মো. বকুল মিয়া বলেন, শনিবার দুপুরে সে বাবার সাথে হোস্টেলে আসে। এরপর তার বাবা চলে যায়। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে হোস্টেল থেকে তাকে খবর দেয়া হয় সপ্তম তলায় ৭০১ নম্বর রুমে গলায় গামছা পেছানো অবস্থায় জানালার গ্রিলের সাথে কাত হয়ে অচেতন অবস্থায় বসে আছে আবির। পরে কাজের বুয়া তাকে দেখতে পেয়ে সবাইকে খবর দিলে আবিরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিএনএনিউজ২৪ডটকম, আহা,জিএন