বিএনএ ডেস্ক:হাল সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে দামি মুদ্রা হল কুয়েতের দিনার। এক দিনারের মূল্য ভারতীয় মুদ্রার প্রায় ২৪৩ টাকা। সেই ডলারের থেকেও কয়েক গুণ দামি এই দিনার।
জেনে অবাক হবেন, আজ থেকে ৮০ বছর আগে কুয়েতই এক সময় ভারতের টাকায় নির্ভরশীল ছিল। তখন আলাদা করে কুয়েতি দিনার ছিল না। ভারতীয় টাকাতেই সে দেশে যাবতীয় আদানপ্রদান চলত । পরবর্তীকালে ভারত সরকার অনুমোদিত গাল্ফ রুপি চালু হয়েছিল কুয়েতে। তারও অনেক পর কুয়েতি দিনার চালু হয়।
কুয়েতের মতো দেশকে কেন মুদ্রা ছাপানোর জন্য ভারতের উপর নির্ভর করে থাকতে হত?প্রায় ২০০ বছর ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণে ছিল পারস্য উপসাগরীয় গাল্ফ অঞ্চল। এই অঞ্চলেরই একটি দেশ কুয়েত। ব্রিটিশরা মনে করেছিলেন, কুয়েতের জন্য আলাদা করে মুদ্রা চালু করার প্রয়োজন ছিল না সে সময়। তখন কুয়েতের অর্থনীতি সে ভাবে ফুলে ফেঁপেও ওঠেনি।
ব্রিটিশরাই কুয়েতে ভারতীয় মুদ্রা চালু করেছিলেন। ঔপনিবেশিক ভারতে যে মুদ্রা চলত, হুবহু একই মুদ্রা ছিল কুয়েতেও। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পরও কুয়েতকে একই মুদ্রা ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছিল দিল্লি। কুয়েতের অর্থনীতি তখন ভীষণ দুর্বলও ছিল। কুয়েত মূলত তেলের দেশ। ১৯৩০-এর শেষের দিকে কুয়েতের ভূগর্ভে বিপুল তেলের সন্ধান মিললেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে সেই তেল বেচে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পারছিল না কুয়েত।
১৯৫৯ সালে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কুয়েতের জন্য আলাদা মুদ্রা চালু করে। যার নাম রাখা হয়েছিল গাল্ফ রুপি। দেখতে অনেকটা ভারতীয় মুদ্রার মতোই ছিল গাল্ফ রুপি। মুদ্রার উপরে ইংরেজিতে ‘ভারত সরকার’ লেখাও থাকত। ১৯৬১ সালে স্বাধীন হয় কুয়েত। তত দিনে তেল রফতানি করে সে দেশের অর্থনীতি অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এরপরই কুয়েতের সরকার আলাদা মুদ্রা চালু করে। নাম রাখা হয় কুয়েতি দিনার। সে সময় এক কুয়েতি দিনার ছিল ভারতীয় মুদ্রায় ১৩ টাকার কিছু বেশি। যদিও ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত কুয়েতি দিনারের পাশাপাশি গাল্ফ রুপিও প্রচলিত ছিল সে দেশে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে ভারতের মুদ্রার মূল্য ক্রমশ নেমে যাওয়ায় গাল্ফ রুপির ব্যবহার বন্ধ করে দেয় কুয়েত।
বিএনএ/ ওজি
সহায়তা : আনন্দবাজার পত্রিকা