20.7 C
আবহাওয়া
৪:৪০ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home »  ডোনাল্ড লু হাসিনার কাছে ‘খৃষ্টান রাষ্ট্র’ ও ‘বিমান ঘাঁটি চেয়েছিলেন?

 ডোনাল্ড লু হাসিনার কাছে ‘খৃষ্টান রাষ্ট্র’ ও ‘বিমান ঘাঁটি চেয়েছিলেন?


বিএনএ ডেস্ক : বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের ২৩ মে বঙ্গভবনে ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে অন ক্যামেরায় এইভাবে বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের বিষয়টি পরিস্কার করেন। যদিও ওই সময় তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করেননি। তবে একজন শেতাঙ্গ তাকে প্রস্তাব দিয়েছেন এমন তথ্য প্রকাশ করেছিলেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই সাদা চামড়ার মানুষটি হচ্ছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের কাছে বাংলাদেশের বান্দরবান ও মিয়ানমারের কিছু অংশ নিয়ে খৃস্টান রাষ্ট্র, কক্সবাজারের সেন্টমার্টিননে বিমান ঘাটি স্থাপন ও বঙ্গোপসাগরে থাকা তেল, গ্যাস অনুসন্ধানে মার্কিন স্বার্থের কথা তুলে ধরে ছিলেন। তার ৫দিন আগে ১৮ মে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী খৃষ্টান রাষ্ট্র, সেন্টমার্টিনে বিমান ঘাটি ও বঙ্গোপসাগরে খনিজ সম্পদের অংশিদারিত্বের পাশাপাশি , ২০২৪ সালের পহেলা জানুয়ারি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শ্রম আদালতের দেয়া ৬ মাসের সাজা বাতিল ও তাকে হয়রানি না করার প্রস্তাবও দিয়েছিলন। কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন প্রস্তাবে রাজি হয়নি। মূলত: ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরের পর থেকে বাংলাদেশের রাজনীতির ভিতরের রূপ পরিবর্তন হতে শুরু হয়। বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলন, ডুবন্ত বরফের উপরের দৃশ্যমান অংশ মাত্র।

গত ৫ আগষ্ট প্রধানন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছেন, তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিদেশি শক্তিগুলোর হাত রয়েছে। ১১ই আগষ্ট ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ’দ্য প্রিন্ট’ শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে এই সংবাদ পরিবেশন করেছে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকটের পেছনে ‘বিদেশি শক্তির হাত’ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়ার কয়েক দিনের মাথায় এমন অভিযোগ করেন শেখ হাসিনা।

বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমি যদি যুক্তরাষ্ট্রের হাতে সেন্ট মার্টিন ও বঙ্গোপসাগর ছেড়ে দিতাম, তাহলে ক্ষমতায় থাকতে পারতাম।’
অনেক দিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শেখ হাসিনা সরকারের টানাপোড়েন চলছিল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারত যান শেখ হাসিনা। ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠন করা হয় অন্তর্বর্তী সরকার।

শেখ হাসিনা এ ধরনের বিদেশি শক্তির দ্বারা ‘ব্যবহৃত’ না হওয়ার জন্য নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করেছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, লাশের মিছিল যাতে দেখতে না হয়, সে জন্য তিনি পদত্যাগ করেছেন। তারা শিক্ষার্থীদের লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল। তিনি তা হতে দেননি। শেখ হাসিনা আরও বলেন, তিনি দেশে থাকলে হয়তো আরও প্রাণহানি হতো, আরও অনেক সম্পদহানি হতো।

সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, তাঁর বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, তরুণ শিক্ষার্থীদের আবার বলতে চান, তিনি কখনোই তাঁদের রাজাকার বলেননি। তাঁর কথাগুলো বিকৃত করা হয়েছে। একটি গোষ্ঠী ফায়দা নিয়েছে।

শেখ হাসিনা তাঁর বার্তায় দেশে ফিরে আসার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি শিগগিরই ফিরব, ইনশা আল্লাহ। পরাজয় আমার, কিন্তু জয়ী হয়েছে বাংলাদেশের জনগণ। আমি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি। আপনাদের সমর্থন নিয়ে আমি এসেছিলাম, আপনারা ছিলেন আমার শক্তি। আপনারা যখন আমাকে চাননি, তখন আমি নিজে থেকে সরে গেছি, পদত্যাগ করেছি। আমার যেসব কর্মী দেশে আছেন, তাঁরা কেউ মনোবল হারাবেন না। আওয়ামী লীগ বারবারই উঠে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

এ দিকে শেখ হাসিনা ঢাকা ছাড়ার আগে ও ঢাকা ছাড়ার পর এ পর্যন্ত কোনো বিবৃতি দেননি বলে জানিয়েছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। রোববার রাতে এক্স বার্তায় তিনি এ কথা জানান।

সজীব ওয়াজেদ জয় রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে বার্তা দেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমার মায়ের পদত্যাগের বিষয়ে একটি বিবৃতি এক সংবাদপত্রে প্রকাশ করা হয়েছে, যা পুরোপুরি মিথ্যা ও বানোয়াট।’
বিশ্বরাজনীতির অন্যতম শক্তি চীন ও আঞ্চলিক শক্তি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ভৌগোলিক নৈকট্য এবং দক্ষিণ এশিয়াসহ এ অঞ্চলে এ দুই দেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাংলাদেশ এক নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। এ বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য বৈশ্বিক শক্তির কাছে বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে গুরুত্ব পাচ্ছে। ক্ষমতার হাতবদল এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও গত কয়েক দশকে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে যে অগ্রগতি সাধন করেছে, তা-ও আন্তর্জাতিক সমাজের মনোযোগ কাড়তে সক্ষম হয়েছে।

সাধারণ জনগণের গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা প্রশ্নাতীত এবং এ আকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখেই বৈষম্যহীন, মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু গত পাঁচ দশকে সেই আকাঙ্ক্ষা অধরাই রয়ে গেছে।
বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পশ্চাৎযাত্রা, বিশেষ করে তিনটি সাজানো জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের অভাবনীয় বিজয়, নাগরিকদের ভোটাধিকার হরণ, বাক্‌স্বাধীনতার অভাব, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, নিপীড়ন দূর্নীতি, দলীয় লোকজনের দখল, চাঁদাবাজি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীনতা এবং পুলিশকে লাঠিয়াল বাহিনী হিসাবে ব্যবহার করায় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী সরকারের হাজারো উন্নয়ন ও অর্জনকেই ম্লান করে দিয়েছে। যার খেসারত তারা দিয়েছে।

বিএনএ নিউজ, শামীমা চৌধুরী শাম্মী/এইচমুন্নী

Loading


শিরোনাম বিএনএ