বিএনএ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের হাটহাজারী পৌরসভার রেল স্টেশন এলাকায় ১৪৪ ধারা অমান্য করে রেল লাইনে এবারও অবৈধ গরুর হাট বসছে। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বদলে উল্টো হাটটি পরিদর্শন করে বেপারি ও অবৈধ হাটের আয়োজকদের উৎসাহ দেয়ার খবর পাওয়া গেছে। অবৈধ এই হাট বসাতে অভয় দিচ্ছেন স্বয়ং উপজেলা ও পৌর প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
দেখা গেছে, মঙ্গলবার (১১ জুন) বিকালের দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম মশিউজ্জামান ও পৌর প্রশাসক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী ওই হাটটি পরিদর্শন করেন। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফুটেজ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
এদিকে এভাবে অবৈধ ঝুঁকিপূর্ণ হাটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো আয়োজকদের অভয় দেয়াতে স্থানীয়দের মধ্যে কানাঘুষা শুরু হয়েছে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ওইদিন বিকালের দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম মশিউজ্জামান এবং পৌর প্রশাসক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী, পৌর ইঞ্জিনিয়ার বেলাল আহমেদ খান, পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা বিপ্লব চন্দ্র মুহরি, অবৈধ হাটটির আয়োজক আবদুল মাবুদ আইয়ুব, আবু তৈয়ুব সহ অন্যান্যরা পৌরসভার রেল স্টেশন এলাকায় রেললাইনে বসা হাটটি পরিদর্শন করছেন। এসময় পৌর প্রশাসক বেপারী ও আয়োজকদের বলেন, এখানে উল্টা পাল্টা কিছু দেখলে কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করবেন। বিশ্বস্ত একটি সুত্র বলছে, রেল লাইনের উপর অবৈধ হাট বসানোর জন্য পৌর প্রশাসককে দশ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ অবৈধ গরুর হাট নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বক্তব্যে বলেছিলেন,”রেল লাইনের উপর ঝুঁকিপূর্ণ কোনো পশুর হাট বসতে দেয়া হবে না।” অপরদিকে পৌর প্রশাসকের বক্তব্য ছিলো, সরকারি নির্দেশনা দেয়া আছে কোন রাস্তাঘাট ও রেললাইনে গরুর হাট বাজার বসানো যাবে না। আইন শৃঙ্খলা মিটিংয়ে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে। তবে রেললাইনে ঝুঁকিপূর্ণ গরুর হাট বাজার না বসিয়ে তাদের বালুরটাল নামক স্থানে কোরবানীর গরুর হাট বসাতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এবিএম মশিউজ্জামান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান আমরা কোন অবৈধ হাট ইজারা দিই নাই। এটা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দিয়েছে। আপনি কষ্ট করে একটু ওদের সাথে কথা বলুন। বিষয়টি ওনারা ভালো বলতে পারবে।
এদিকে অবৈধ হাটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো সেই হাট পরিদর্শন করে বেপারী ও রেল লাইনের উপর বসা অবৈধ গরুরহাটের আয়োজকদের অভয় দেয়ার বিষয়ে পৌর প্রশাসক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের গত ২৩ মে বৃহস্পতিবার হাটহাজারী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ফকরুল আলম রেললাইনে ঝুঁকিপূর্ণভাবে গরু ছাগলের অবৈধ হাট বাজার বসানোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রাম বরাবরে চিঠি দিয়েছিলেন এবং বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক, চট্টগ্রাম, প্রধান ভূ-সম্পদ কর্মকর্তা, পূর্ণ বিভাগীয় ভূ-সম্পদ কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম, বিভাগীয় প্রকৌশলী কর্মকর্তা/১, চট্টগ্রাম, বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা চট্টগ্রাম, টি আই টি, চট্টগ্রাম, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জি আর পি, চট্টগ্রাম, এস এস এ ই. ওয়ে/ষোলশহর, এবং সি টি এন এল, পাহাড়তলীর নিকট অনুলিপি পাঠানো হয়েছিলো।
বিএনএনিউজ/ নাবিদ/এইচ.এম/ হাসনা