19 C
আবহাওয়া
৩:৩৬ পূর্বাহ্ণ - ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৫৬

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৫৬

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র একটি প্রামাণিক গ্রন্থ যা ১৯৭১ সালে এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সংগঠিত বিভিন্ন ঘটনার বিস্তারিত তথ্যভান্ডার হিসাবে স্বীকৃত। ১৫ খণ্ডে প্রকাশিত এ তথ্য ভাণ্ডারে এমন কিছু তথ্য রয়েছে যা সাধারণ মানুষের অজানা। বিশেষ করে এ প্রজন্ম জানেই না কত রক্ত, কত কষ্ট, নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে।

গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ অর্জন ও উন্নয়নে বিশ্বের বিস্ময়। বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে বাঙ্গালি জাতি বিলীন হয়ে যেত! এমনটাই মনে করেন সমাজ বিজ্ঞানীরা। নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস জানাতে  বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি (বিএনএ) ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করে আসছে।  বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছে।

আজ প্রকাশিত হলো

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৫৬

১৬ জুন, ১৯৭১(১ম কিস্তি)

বাংলার প্রাণের নেতা শেরে বাংলা ফজলুল হককে পশ্চিম পাকিস্তানের স্বার্থবাদীচক্রের মুখপাত্ররা একদিন বিশ্বাসঘাতক বলে আখ্যা দিয়েছিল। বলেছিল Mr. Fazlul Hoq is self-confessed traitor- ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে কুচক্রী মুসলিম লীগ সরকারের অনুসারীগণ বাংলার মাটিতে সাংঘাতিক পরাজয় বরণ করে আবার পর্দার অন্তরালে ষড়যন্ত্রের আশ্রয় গ্রহণ করে। এই নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের একুশ দফার সপক্ষে সমগ্র বাঙালী অকুন্ঠ রায় দিয়েছিলেন। বাঙালীর এই একতা ও নবজাগ্রত চেতনা পশ্চিমাদের ভয়ের ও আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়ায় বাংলাকে যেমন নির্বিচারে শোষণ করা চলছিল এবার সে পথে এক বিরাট বিঘ্ন সৃষ্টি হয়ে পড়ে।

এই জাগ্রত জনতার পুরোভাগে দাঁড়িয়ে যখন শেরে বাংলা ফজলুল হক বজ্রকন্ঠে  ঘোষণা করতে থাকেন যে, বাংলাকে আর শোষণ করতে দেয়া হবে না তখন পশ্চিমা আমলাগণ এবং স্বার্থবাদী রাজনীতিবিদরা বিপদ গুনতে শুরু করে।তাই ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার হতে থাকে।– আর বাংলার অবিসংবাদিত নেতা ফজলুল হককে বলা হয় বিশ্বাসঘাতক। এই ষড়যন্ত্রের নেতা সেদিন ছিল ইস্কান্দর মির্জা, গোলাম মোহাম্মদ প্রমুখ।

এদের সাথে হাত মিলিয়েছিল চুয়ান্নর নির্বাচনে পরাজিত মুসলিম লীগের কতিপয় বাঙালী মীর জাফর। ১৯৫৫ সালের ২৯শে মে বাংলার দরদী নেতা শেরে বাংলা ফজলুল হক যখন করাচী থেকে ঢাকা বিমানবন্দরে ফিরে এলেন তখন বিপুল জনতা তাঁকে সংবর্ধনা জানাতে সেখানে সমবেত হয়েছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস- নিজের দেশে ফিরে এসে, যে বাংলার মাটিকে শেরে বাংলা ফজলুল হক প্রাণের মত ভালবাসতেন সেই মাটিতে দাঁড়িয়ে একটি কথা পর্যন্ত বলবার অধিকার তাঁর রইল না।

সামরিক বাহিনীর কড়া পাহারায় তাঁকে বিমানবন্দর থেকে গৃহে নিয়ে যাওয়া হলো এবং নিজের ঘরে তাঁকে অন্তরীণাবদ্ধ করে রাখা হলো। ছয় মাস তাঁকে বাইরের কোন লোকের সাথে মিশতে দেয়া হতো না এমনকি কি পবিত্র ঈদের দিনে মুসলিম জামাতের সাথে একত্রে বসে নামাজ পড়তে পর্যন্ত তাঁকে দেয়া হতো না। বাংলাকে ভালবাসার এই হলো শাস্তি- বাংলার দু:স্থ, নি:স্ব, নিপীড়িত এবং বঞ্চিত মানুষের জন্য কথা বলার এই হলো সত্যিকার পুরস্কার।

(তথ্যসুত্র:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র -৫ম খন্ড। পৃষ্ঠা নং ৮৮) চলবে।

আগের পর্ব সমূহ :
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৫৫

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৫৪

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৫৩

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৫২

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৫১

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৫০

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪৯

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪৮

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪৭

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪৬
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪৫
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪৪

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪৩

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪২
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪১

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪০

সম্পাদনা: এইচ চৌধুরী, গ্রন্থনায়: ইয়াসীন হীরা 

Loading


শিরোনাম বিএনএ