বিএনএ,ঢাকা: বিশিষ্ট সাংবাদিক ও প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।মঙ্গলবার(১২ জানুয়ারি)বাদ জোহর রাজধানীর মিরপুরে শহিদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এরআগে সকাল ১০টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে, বেলা ১১টার দিকে সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রাঙ্গণে এরপর জাতীয় প্রেস ক্লাবে মিজানুর রহমান খানের তিনটি জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজা শেষে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান সহকর্মীরা। প্রেসক্লাবের জানাজা শেষে তার মরদেহ নেয়া হয় দীর্ঘদিনের কর্মস্থল দৈনিক প্রথম আলো কার্যালয়ে।সহকর্মীদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয় মিজানুর রহমান খানকে।
সোমবার(১১ জানুয়ারি)সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিজানুর রহমান খান মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর।
মিজানুর রহমান খান করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন।নমুনা পরীক্ষায় গত ২ ডিসেম্বর তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে।৫ ডিসেম্বর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।শারীরিক সমস্যা বাড়লে সেখান থেকে ১০ ডিসেম্বর তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।সেখানে তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়।শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত শনিবার বিকেলে মিজানুর রহমান খানকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়।এরপর সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি বাংলাদেশের সংবিধান সংস্কারের সপক্ষে জনমত গঠনে ভূমিকা পালন করেন মিজানুর রহমান খান।তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে সংবিধান ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিতর্ক,বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের স্বরূপ, ১৯৭১ আমেরিকার গোপন দলিল ও মার্কিন দলিলে মুজিব হত্যাকাণ্ড।
১৯৬৭ সালের ৩১ অক্টোবর ঝালকাঠির নলছিটিতে জন্মগ্রহণ করেন সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান। ১৯৮৮ সালে বরিশালের ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতায় থাকা মিজানুর রহমান খান ১৯৯৯ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত যুগান্তর-এর বিশেষ সংবাদদাতা ও সহকারী সম্পাদক ছিলেন। এরপর সমকালের উপসম্পাদক হিসেবে যোগ দেন।২০০৫ সালের ১ নভেম্বর প্রথম আলোয় যোগ দেন।মিজানুর রহমান খানের দুই ভাইও সাংবাদিক।তারা হলেন সিদ্দিকুর রহমান খান ও মসিউর রহমান খান।
এদিকে, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, সংগঠন ও দল।শোকবার্তায় বিশিষ্টজনেরা বলেছেন, আইন বিষয়ে লেখালেখি ও সাংবাদিকতায় মিজানুর রহমান খান ছিলেন পথিকৃৎ।তার মৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।তিনি ছিলেন একজন নীতিমান সাংবাদিক।
বিএনএনিউজ/আরকেসি