25 C
আবহাওয়া
৭:২০ অপরাহ্ণ - ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » জেনে নিই পলিসাইথেমিয়া কি এবং কেন হয়?

জেনে নিই পলিসাইথেমিয়া কি এবং কেন হয়?

ক্যান্সার

বিএনএ,চট্টগ্রাম:পলিসাইথেমিয়া (Polycythemia) হল শরীরে লোহিত রক্তকণিকার (RBC) অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এই অতিরিক্ত কোষগুলি রক্তকে ঘন করে তোলে এবং রক্ত জমাট বাঁধা সহ নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
বিভিন্ন কারণে পলিসাইথেমিয়া হতে পারে, যার প্রত্যেকটির আলাদা আলাদা চিকিৎসা ব্যাবস্থা রয়েছে।
দুই ধরনের পলিসাইথেমিয়া রয়েছে,যার ভিন্ন ভিন্ন কারণ রয়েছে।

১. প্রাথমিক পলিসাইথেমিয়া ভেরা :
প্রাথমিক পলিসাইথেমিয়াকে পলিসাইথেমিয়া ভেরা (Polycythemia Vera- PV) বলা হয়।
PV হল বিরল ও ধীরে ধীরে ক্রমবর্ধমান এক ধরনের ব্লাড ক্যান্সার যা মায়েলোপ্রোলিফারেটিভ নিউওপ্লাজম (myeloproliferative neoplasm) নামে পরিচিত। পলিসাইথেমিয়া ভেরা (PV) তে অস্থি মজ্জা অতিরিক্ত Precursor blood cells তৈরি করে যা অস্বাভাবিকভাবে কাজ করে ও বিকশিত হয়, যার ফলে প্রচুর পরিমানে লোহিত রক্তকণিকা (RBC) তৈরি হয়।
পলিসাইথেমিয়া ভেরা আক্রান্ত একজন ব্যক্তির লোহিত রক্তকণিকা (RBC) ছাড়াও অন্যান্য রক্তকণিকার সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে পারে, যেমন শ্বেত রক্তকণিকা (WBC) বা প্লেটলেট ।

২. সেকেন্ডারি পলিসাইথেমিয়া :
যদি লোহিত রক্তকণিকার বৃদ্ধি পলিসাইথেমিয়া ভেরা রোগের মায়েলোপ্রোলিফারেটিভ নিউওপ্লাজম এর কারণে না হয় তখন তাকে সেকেন্ডারি পলিসাইথেমিয়া বলা হয়।
সেকেন্ডারি পলিসাইথেমিয়ায় শুধুমাত্র লোহিত রক্তকণিকার অতিরিক্ত বৃদ্ধি ঘটে।
সেকেন্ডারি পলিসাইথেমিয়ার কারণগুলির মধ্যে রয়েছে :
• খুব বেশি উচ্চতায় বসবাস করা
• অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া
• কিছু নির্দিষ্ট ধরনের টিউমার
• হার্ট বা ফুসফুসের রোগ যা শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমিয়ে দেয়

ঝুঁকির কারণ :
কিছু মানুষ অন্যদের তুলনায় বেশি প্রাথমিক পলিসাইথেমিয়ার ঝুঁকিতে থাকতে পারে। গবেষনায় দেখা যায় যে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তির প্রাথমিক পলিসাইথেমিয়া রোগ হয় সাধারণত ৬০ বছর বয়সের কাছাকাছি সময়ে। এটি মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।

পলিসাইথেমিয়া ভেরা বংশগত রোগ নয়, এবং এই রোগে আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষের পারিবারিক কোনো ইতিহাস নেই। একটি নির্দিষ্ট জেনেটিক মিউটেশনের সাথে এর যোগসূত্র রয়েছে বলে মনে করা হয়।

লিউকেমিয়া ও লিম্ফোমা সোসাইটির মতে- পলিসাইথেমিয়া ভেরা আক্রান্ত প্রায় সকল ব্যক্তিরই Janus Kinase 2 জিনের একটি মিউটেশন রয়েছে। তবে এই জিনটিই রোগের জন্য সুনির্দিষ্ট ভাবে দায়ী কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।

অন্যান্য জিন মিউটেশন, যেমন TET2 জিনের সাথেও এই রোগের একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, এই জিনগুলি বংশগত নয়, তবে কিছু বিরল ক্ষেত্রে, তারা শুক্রাণু বা ডিম্বাণুর মাধ্যমে পিতামাতার কাছ থেকে তাদের সন্তানের কাছে যেতে পারে।
লক্ষণ :
সাধারনত পলিসাইথেমিয়ার লক্ষণগুলি খুব ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হয়। অনেক সময় একজন ব্যক্তির পলিসাইথেমিয়া হওয়ার পরও তিনি অনেকদিন পর্যন্ত রোগ সম্পর্কে অজ্ঞাতই থাকেন।

অতিরিক্ত লোহিত রক্তকণিকা থাকলে রক্ত ঘন হয়ে যায়, যা সুস্থ ও স্বাভাবিক রক্ত প্রবাহকে বেশ কঠিন করে তোলে। এটি একজন ব্যক্তির রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। এই ঝুঁকি আরোও বেশি বৃদ্ধি পায় যদি পলিসাইথেমিয়া ভেরা আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে লোহিত রক্তকণিকা এবং প্লেটলেট উভয়েরই আধিক্য থাকে।

নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার সময় বা অন্য কোনো রোগের জন্য রক্ত পরীক্ষা করার সময় এই রোগটি আবিষ্কৃত হয়।
সময়ের সাথে সাথে পলিসাইথেমিয়া ভেরা লক্ষণগুলি স্পষ্টতর হয়ে উঠতে থাকে।

সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে :
• মাথা ঘোরা বা ভার্টিগো
• মাথাব্যথা
• অত্যাধিক ঘামা
• চামড়ায় চুলকানি
• কানে শব্দ বাজার মত অনুভূতি
• ঝাপসা দৃষ্টি
• ক্লান্তি
• তালু, কানের লোতি এবং নাকের ডগার উপর লালচে বা বেগুনি ত্বক
• রক্তপাত বা ক্ষত
• পায়ে জ্বালাপোড়ার অনুভূতি
• ক্ষুধা মন্দা
• ঘন ঘন নাক দিয়ে রক্ত পড়া
• মাড়ির রক্তপাত
সময়মত চিকিৎসা করা না হলে PV-তে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আরোও কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে, যেমন :
• বর্ধিত প্লীহা
• রক্ত জমাট
• কণ্ঠনালীপ্রদাহ
• স্ট্রোক
• পাকস্থলীর আলসার
• হৃদরোগ
• গাউট
• অন্যান্য রক্তের ব্যাধি, যেমন মাইলোফাইব্রোসিস বা লিউকেমিয়া

বিএনএ/রেহানা, ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ