বিএনএ, চট্টগ্রাম: ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকার পতনের পর বিচ্ছিন্নভাবে সারাদেশে হিন্দুধর্মলম্বীদের বাড়ী ও মন্দিরে ভাংচুরের ঘটনা ঘটছে। তবে এসব ভাংচুরের ঘটনার চেয়ে মন্দির ভাংচুরের বেশি ভুয়া খবর ছড়িয়ে পড়ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এসব ভুয়া খবরের মধ্যে একটি ভুয়া ঘটনা চট্টগ্রামে।
দেখা যায়, কোতোয়ালীর পুরাতন ফিশারীঘাট এলাকার মনোহরখালী মন্দির। শনিবার মধ্যরাতে ফেসবুকে বেশ কয়েকটি আইডি থেকে জ্বালিয়ে দেয়ার খবর দেওয়া হয়। এই মন্দির থেকে একটু দূরে জগন্নাথ মন্দির। আছে রক্ষাখাালী মন্দিরও। এসব মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর করা হয় বলেও ফেসবুকের ওইসব পোস্টে দাবি করা হয়। কিন্তু রোববার সরেজমিন দেখা গেল, সব মন্দির-ই ঠিক আছে। কোনো ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেনি।
কোতোয়ালীর পাথরঘাটা পুরান ফিশারীঘাট এলাকার মনোহরখালী মন্দিরে প্রার্থনা করছিলেন বিপুল দাশ ও রতন কুমার। তাঁরা বলেন, এই মন্দিরে কোনো হামলা হয়নি। জ্বালিয়ে দেয়ার খবরও মিথ্যা। এই এলাকায় রক্ষাখালী ও জগন্নাথ মন্দিরেও কোনো হামলা হয়নি।
শনিবার মধ্যরাতে চট্টগ্রামের ঘাটফরহাদবেগ আরোহন ক্লাবে সংখ্যালঘুর বাসায় ডাকাতির খবর সুবির চৌধুরী চট্টগ্রাম নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করা হয়। সেখানে সরেজিমন গিয়ে কথা বলে জানা যায়, ডাকাতির এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে, চোর সন্দেহে একজনকে আটক করে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়ার দাবি করা হয়েছে।
এনিয়ে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মো. ওবায়দুল হক বলেন, কোতোয়ালী থানা এলাকায় কোনো মন্দির বা সংখ্যালঘু বাড়িতে হামলার বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। আমরা শনিবার সকাল থেকে স্বল্প পরিসরে কাজ শুরু করছি।
বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক বলভদ্র বাচ্চু বলেন, চট্টগ্রাম শহরে বেশ কয়েকটি জায়গায় হামলার খবর পেয়েছি। তবে কোথায় কোথায় হামলা হয়েছে, সেই তথ্য সংগ্রহ করেনি।
এদিকে, চট্টগ্রামে নাশকতার গোপন সংবাদে মন্দির রক্ষায় মাঠে নেমেছেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা। দিন ও রাত জেগে পাহারার পাশাপাশি কীভাবে এ সংকট দূর করা যায় সে বিষয়ে মতবিনিময় সভাও করছেন তারা। শনিবার (১০ আগস্ট) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক কাউন্সিলর ও নগর জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালীর নির্দেশনায় চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ এলাকার বিভিন্ন মন্দিরে পাহারা দিয়েছেন জামায়াত নেতারা।
অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী বলেন, চট্টগ্রামে মন্দিরগুলোতে হামলার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করতেই এ ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরেই পাঁচলাইশ এলাকার বিভিন্ন মন্দিরে পাহারা দিচ্ছি আমরা। দলীয় নেতাকর্মীদের বলা হয়েছে- রাত-দিন পালা করে পাহারা দেওয়ার জন্য।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুগ্রীম মজুমদার দোলন বলেন, আমরা সব জায়গায় খোঁজখবর নিচ্ছি। আসলে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটু বেশি ভুয়া খবর ছড়িয়ে পড়ছে। না হয় চট্টগ্রামে মোটামুটি পরিস্থিতি ভালো আছে।
বিএনএনিউজ/ নাবিদ/ বিএম/হাসনা