বিএনএ, চট্টগ্রাম: কক্সবাজার রুটে রেল চালুর লক্ষ্যে সংস্কারের জন্য গত ১ আগস্ট থেকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু বন্ধ করে দেওয়া হয়। কর্ণফুলী নদী পারাপারে চালু করা হয় ফেরি সার্ভিস। ফেরি চালুর পর থেকেই নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে যেনতেনভাবে চলছে। কিছুতেই যেন ভোগান্তি কমছে না। নদীতে জোয়ার এলে তো আর কথাই নেই। জোয়ারে তলিয়ে যায় ফেরিতে ওঠানামার এপ্রোচ সড়ক ও বেইলি ব্রিজ। ফলে কোমর পানিতে ভিজে ফেরি পারাপার হতে হচ্ছে যাত্রীদের।
এছাড়া জোয়ারের পানিতে বেইলি ব্রিজ ডুবে গেলে বন্ধ হয়ে যায় ফেরি পারাপার। এতে চট্টগ্রাম নগর ও বোয়ালখালী উপজেলামুখী স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী ও যাত্রী সাধারণের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। এ নিয়ে ফেরি পারাপারকারী যাত্রী ও যানবাহন চালকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আবার অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে নদী পার হচ্ছেন।
জানা যায়, কালুরঘাটে দুইটি ফেরি চালু থাকার কথা থাকলেও চলে একটি। তাও সকাল ১০টার পর থেকে। রাত ১১টার পর বন্ধ রাখা হয় ফেরি। এতে বিপাকে পড়েন শিক্ষার্থী ও কর্মজীবীরা। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় ফেরিঘাটে আসেন জিয়াউল করিম ইমন নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী। তিনি চট্টগ্রাম শহরে অফিস করতে যাবেন। এসে দেখেন ফেরি চালু হয়নি। নদীর দুই পাড়ে তখন শতশত গাড়ির লাইন। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরে নৌকা দিয়ে নদী পার হন। পরে জানতে পারেন সকাল সাড়ে ৮টায় ফেরি চালু হয়।
এছাড়া যাত্রীরা ভোগান্তি এড়াতে বেছে নেয় ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও ছোট ছোট বোট। শিশু ও মহিলাসহ অনেক যাত্রী ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হন। অনেক নৌকায় নিরাপত্তা সরঞ্জাম নেই। গত কয়েকদিন ধরে ফেরি পারাপারের যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে উঠলেও যেন দেখার কেউ নেই।
এ বিষয়ে বোয়ালখালী পৌরসভার মেয়র জহুরুল ইসলাম জহুর বলেন, শিক্ষার্থীরা স্কুল কলেজে যায়। চাকুরির কারণে কেউ শহরে, অনেকে বোয়ালখালী আসেন। সময়মতো যদি ফেরি না চলে তবে ফেরি সার্ভিস দিয়ে লাভ কি? স্কুল কলেজে শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষের জন্য সকাল ৬টা থেকে ফেরি চালু করতে হবে। এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। তারা আশ্বাস দিয়েছেন।
সড়ক ও জনপদ (সওজ) কর্তৃপক্ষ জানান, সকাল ৭টায় ফেরি চলাচল শুরু হয়। রাত দেড়টা অবধি ফেরি চালু থাকে। তবে একথা মানতে নারাজ ফেরি পারাপারকারী মানুষজন। তারা জানান, কোনো টাইম টেবিল নেই ফেরি চলাচলে। একে তো জোয়ারের পানি মাড়িয়ে ফেরি পারাপার করতে হয়। এর মধ্যে সময় মেনে চলে না। খেয়ালখুশি মত ফেরি চালু ও বন্ধ হয়।
বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন বলেন, ফেরি পারাপারের টাইম টেবিল মেনে চলার জন্য ফেরি কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।
এদিকে, গত বুধবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন, পৌর মেয়র জহুরুল ইসলাম জহুর ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ফেরিঘাট পরিদর্শন করেন। নৌকায় যাত্রী পরিবহনের সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে তারা নৌকার মাঝিদের সাথে কথা বলেন। মাঝিদের নৌকায় লাইফ জ্যাকেটসহ নিরাপত্তামূলক সরঞ্জাম রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন।
বিএনএনিউজ/বাবর মুনাফ