আবদুল গফুর চৌধুরী ১৯২২ সালের ১ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম- আবদুল জলিল চৌধুরী এবং মাতার নাম- জহুরুন নেসা চৌধুরী। ম্যাট্রিক পাশ করার পর ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়ে পড়লে তাঁর শিক্ষাজীবন বিঘ্নিত হয়। ১৯৪২ সালে নারায়ণগঞ্জে ন্যাশনাল গার্ডের জেলা শাখা গঠন করা হলে এর প্রধান পদে মনোনয়ন লাভ করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি প্রাদেশিক মুসলিম লীগের কাউন্সিলর হিসেবে কলকাতা গমন করেন। ১৯৪৯ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ মহকুমা আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালে তিনি যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনের সময় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি পাক হানাদার বাহিনীর নির্মমতার শিকার হন। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করার জন্য তাঁকে হানাদাররা নির্মমভাবে পিটিয়ে মৃতপ্রায় অবস্থায় খালের পানিতে নিক্ষেপ করে ফেলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে। বর্তমানে তিনি অসুস্থ্য অবস্থায় নারায়ণগঞ্জের নিজ বাড়িতে বসবাস করছেন।
১৯৪৮ সাল থেকে নারায়ণগঞ্জের ভাষা-আন্দোলনে তিনি একজন নিবেদিত-প্রাণ কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৫২ সালে নারায়ণগঞ্জে গড়ে ওঠে ‘ভাষা-আন্দোলন সর্বদলীয় কর্ম পরিষদ’। তিনি এর যুগ্ম আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরো মাস নারায়ণগঞ্জ ছিল উত্তপ্ত। প্রতিটি কর্মসূচিতে তিনি ত্যাগী ও একনিষ্ঠ কর্মীর ভূমিকা পালন করেন। ভাষা-আন্দোলনের কারণে তিনি সরকারের রোষানলে পড়েন এবং গ্রেফতার বরণ করে জেল খাটেন।
সূত্র: যারা অমর ভাষা সংগ্রামে, লেখক: এমআর মাহবুব
সম্পাদনায়: মনির ফয়সাল
পড়ুন আগের পর্ব: ভাষা সৈনিক (১৯) আবদুল গফুর পর্ব : ০২