বিএনএ, সাভার: ঢাকার ধামরাইয়ে কিশোর গ্যাংয়ের লিডার জামিল হোসেনের নেতৃত্বে যাদবপুর স্কুল এন্ড কলেজে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসময় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আফসানা নামে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার (১১ এপ্রিল) বেলা ১২ টার দিকে উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের যাদবপুর স্কুল এন্ড কলেজে ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক ( এসআই) মো. তৈমুর রহমান।
ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- মো. জামিল হোসেন, মো. রিপন হোসেন, মো. শিপন হোসেন, মো. মারুফ হোসেন, তারা সবাই বহিরাগত সন্ত্রাসী। তাদের সহযোগিতা করেন যাদবপুর স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র মো. রাব্বি, ৭ম শ্রেণীর ছাত্র মো. হাসিবুল হাসান, ৯ম শ্রেণীর ছাত্র মোতালেব মোল্লা, ৯ম শ্রেণী ছাত্র আশিক হোসেন, দশম শ্রেণীর ছাত্র কাজী মোজাম্মেল হোসেন, দশম শ্রেণীর ছাত্র মো. আলহাজ্ব হোসেন, দশম শ্রেণীর ছাত্র আসিফ হোসেন, দশম শ্রেণীর ছাত্র মো. সিফাত হোসেন, দশম শ্রেণীর ছাত্র মো. ইকবাল হোসেন, ৮ম শ্রেণীর ছাত্র মো. আশিক হোসেন ও নবম শ্রেণীর ছাত্র মো. সোহান। এরা সবাই জামিলের নেতৃত্বে স্কুলে ভাঙচুর করে।
স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক দিন আগে রিপন নামের বহিরাগত ছেলেটি বোরাইল গ্রামে একটি মেয়েকে নিয়ে বেড়াতে যায়। সেখানে যুবরাজ নামে যাদবপুর স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রসহ গ্রামের লোকজন তাদেরকে আটক করে উত্তম মাধ্যম দেয়। পরে রিপনের অভিবাবক ডেকে সেটা বিচারের মাধ্যমে মিমাংসা করে। তারই জের ধরে সোমবার বোরাইল গ্রামের ছাত্র যুবরাজকে সহ বেশ কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীদের মারধর করে জামিল গ্রুপের ছেলেরা। এই খবর পেয়ে যাদবপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আলী হায়দার ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের ডেকে ক্লাশরুমে নেন। পরে তাদের কাছে প্রত্যেকের অভিবাবকের মোবাইল নাম্বার চায়। তারা তাদের অভিবাবকের সঠিক নাম্বার না দিয়ে অন্য জায়গার নাম্বার দেয়। এরপর প্রধান শিক্ষক তাদেরকে ক্লাশরুমে আটক করে রাখে এবং অভিভাবকদের খবর দিতে স্কুল থেকে পিয়ন পাঠায়।
তখন আটককৃত ছাত্ররা জামিলকে খবর দিলে জামিল তার বাহিনী নিয়ে স্কুলে ডুকে প্রতিটা ক্লাশের দরজা জানালা ভেঙে ছাত্রদের বের করে নিয়ে যায়। দরজা জানালা রাম-দা দিয়ে কুপানোর সময় ক্লাশের ভিতরে থাকা দশম শ্রেণীর ছাত্রী আফসানা ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে শিক্ষকরা গিয়ে আফসানাকে উদ্ধার করে তার মাথায় পানি ডেলে জ্ঞান ফিরলেও কিছুক্ষণ পর পর চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে যায়। পরে আফসানাকে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে যাদবপুর স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মো. আলী হায়দার বলেন, গতকাল মারধরের ঘটনায় স্কুলের ছাত্রদের ডেকে ক্লাশরুমে নিয়ে জিজ্ঞাসা করছিলাম। পরে তাদের অভিবাবকের মোবাইল নাম্বার চাইলে তারা বিভিন্ন জায়গার নাম্বার দেয়। এই জন্য তাদের ক্লাশ রুমে আটকে রেখে পিয়নের মাধ্যমে তাদের অভিবাবকদের স্কুলে ডেকে আনার কথা বলে ক্লাশ থেকে অফিস রুমে আসি। কিছুক্ষণ পর জামিল, রিপন, শিপন রাম-দা, লাঠি সোটা নিয়ে স্কুলে প্রবেশ করে প্রতিটা ক্লাশরুমে ডুকে দরজা-জানালা ভাঙচুর করে। অবস্থার বেগতিক দেখে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় দশম শ্রেণীর ছাত্রী আফসানা আহত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক ( এসআই) মো. তৈমুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। কিন্তু আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা দ্রুত পালিয়ে যায়। তদন্ত করে এর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় জড়িত কিশোর গ্যাংয়ের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
বিএনএ/ ইমরান, এমএফ