ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনাবাদি জমিকে চাষের আওতায় নিয়ে আসার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেছেন, আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। কারণ আমরা কারো কাছে হাত পাততে চাই না, আর ভিক্ষা করতে চাই না।’ আমরা যদি উৎপাদন বাড়াতে পারি তাহলে অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হলেও খাওয়া-পরা চলবে। তাতে দেশ সমস্যায় পড়বো না বলে জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।
শনিবার(১১ মার্চ) বিকেলে ময়মনসিংহের সার্কিট হাউস ময়দানের জনসভায় এ সব কথা বলেন।বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ময়মনসিংহ মহানগর ও জেলা শাখা এ জনসভার আয়োজন করে।
এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না।সব অনাবাদি জমিকে চাষের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আবাদি জমির পাশাপাশি আমাদের জলাভূমিকেও ব্যবহার করতে হবে। মাছের চাষের মাধ্যমে জলাভূমির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের সময় বিদেশি সাংবাদিকরা বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞেস করেছিলেন আপনি কীভাবে, কী করবেন। তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমার দেশের উর্বর মাটি ও মানুষ দিয়েই আমরা ঘুরে দাঁড়াব।’
তিনি বলেন, ‘দেশের যুব সমাজকে উন্নয়নের অংশীদার হতে হবে। আমরা যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ ও ঋণের ব্যবস্থা করেছি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক ও আবদুর রহমান এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল- আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও মির্জা আজম প্রমুখ জনসভায় বক্তব্য রাখেন। এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি এহতেশামুল আলম।
এর আগে বিকেল আড়াইটার দিকে সমাবেশ মঞ্চে এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। পরে ৩টার দিকে মোট ১০৩ প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরমধ্যে ৭৩ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৩০টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
আগের নিউজ : ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্প ও ৩০টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্ধোধন
স্বাক্ষরতার হার ৭৫.২ শতাংশ
জনসভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়া মানেই হচ্ছে মানুষের ওপর অত্যাচার, মানুষকে শোষণ করা, বঞ্চনা করা। আর আওয়ামী লীগ মানুষকে উপহার দেয় উন্নয়ন। আমরা আজ শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি প্রত্যেকের ঘরে ঘরে। আমরা নতুন নতুন স্কুল করেছি।আওয়ামী লীগ সরকার ২৬ হাজার নতুন প্রাইমারি স্কুল সরকারিকরণ করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমাদের স্বাক্ষরতার হার ৭৫.২ শতাংশ।
বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাসে চুরি ও দুর্নীতি এবং স্বাক্ষরতার হার কমানোর পেছনে বিএনপি নেতৃত্বের শিক্ষাগত যোগ্যতাকে দায়ী করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ছিল ম্যাট্রিক পাশ, খালেদা জিয়া ম্যাট্রিক ফেল, আর তাদের ছেলে কয়েক স্কুল থেকে বহিস্কৃত হয়ে কোন এক অখ্যাত জায়গা থেকে একটি সার্টিফিকেট জোগাড় করেছে বলে শোনা যায়। কিন্তু কি পাশ করেছে তা কেউ বলতে পাওে না। তবে, বোমা মারা, গ্রেনেড হামলা, লুটপাট, মানি লন্ডারিং, টাকা চুরি, দুর্নীতি, এতিমের অর্থ আত্মসাতে তারা সিদ্ধহস্ত। সেজন্য বাংলাদেশের মানুষ লেখাপড়া শিখে উন্নত হবে এটা তারা চায় না।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে শনিবার সমগ্র ময়মনসিংহ সেজেছে বণার্ঢ্য সাজে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়ে নগরীর সড়কে অসংখ্য তোরণ নির্মাণ করা হয়। নানা রঙের ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে যায় নগরী। সর্বস্তরের জনতা এবং আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা উৎসব মুখর পরিবেশে স্লোগান দিতে দিতে ও ড্রাম পিটিয়ে শেখ হাসিনার সমাবেশে যোগ দেন। শুধু ময়মনসিংহেরই নয় আশেপাশের সকল অঞ্চলের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীরা এই সমাবেশে যোগ দেন।
ছবি-হামিমুর রহমান
নৌকার আদলে মঞ্চ
প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ উপলক্ষে শনিবার ভোর থেকে হাজার হাজার লোক সার্কিটহাউস ময়দানে আসতে থাকেন এবং কয়েক ঘন্টার মধ্যে সমাবেশ স্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। সাকির্ট হাউজ মাঠ এবং আশপাশের সকল সড়ক ও খালি স্থান সমূহ মানুষে ভরে ময়মনসিংহ নগরী একটি বিশাল জনসমূদ্রে পরিনত হয়। সাকির্ট হাউজ মাঠে নৌকার আদলে বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বেলা ২টা ৫০ মিনিটে সমাবেশ স্থলে এসে পৌঁছুলে লাখো জনতা তাকে করতালি দিয়ে স্বাগত জানান।
বিএনএনিউজ২৪,হামিমুর রহমান, ওজি, জিএন